নায়ক নয়, দক্ষিণী সিনেমার আসল সুপারস্টার এই ৫ ডিরেক্টর

দক্ষিণের সিনেমার (South Indian Movie) রমরমা ব্যবসা চলছে সারা বিশ্বজুড়ে। ব্লকবাস্টার সিনেমা দৌলতে অল্লু অর্জুন, প্রভাস, যশ, জুনিয়র এনটিআর, রামচরণদের আজ একডাকে চেনে গোটা বিশ্ব। ক্রমে হলিউডকে টেক্কা দেওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ভারতের দক্ষিণের সিনেমাগুলি। তবে দক্ষিণের আসল সুপারস্টার তো এস এস রাজামৌলি, প্রশান্ত নীল, সুকুমারের মত পরিচালকরা, যাদের হাত ধরে বাহুবলী, আরআরআর থেকে শুরু করে কেজিএফের মত ছবি আসছে। এই মুহূর্তে প্যান ইন্ডিয়া দক্ষিণের ৫ পরিচালকের (South Indian Director) সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। এরাই তো আসল সুপারস্টার! আলাপ করুন তাদের সঙ্গে।

এস এস রাজামৌলি (S S Rajamouli) : ‘বাহুবলী’ সিনেমাটি ব্লকবাস্টার হিট হওয়ার পর থেকেই এস এস রাজামৌলিকে চিনে নিতে শুরু করেছে সারা দুনিয়া। তার আসল নাম কোদুরি শ্রীশৈলা শ্রী রাজামৌলি। বাবা কে ভি বিজয়েন্দ্র প্রসাদও একজন বিখ্যাত চিত্রনাট্য লেখক এবং চলচ্চিত্র পরিচালক। ‘বাহুবলী’র গল্প লিখেছিলেন তিনি। এস এস রাজামৌলির পরিচালনায় ‘বাহুবলী’র পর ‘বাহুবলী ২’ ভারতীয় বক্সঅফিসের সর্বোচ্চ আয়ের ছবি। এই ছবিটি ১৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। এরপর এই বছরের ২৫শে মার্চ মুক্তি পায় ‘আর আর আর’। এই ছবিটিও এখনও পর্যন্ত ১০০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে। ছবিটিতে ভারতের সংস্কৃতি এবং গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরার জন্য ৩০০ কোটি টাকার বাজেট রেখেছিলেন তিনি।

প্রশান্ত নীল (Prashanth Neel) : প্রশান্ত নীল একজন কন্নড় চলচ্চিত্র পরিচালক। ‘কেজিএফ’ ছবি পরিচালনার মাধ্যমে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ১’ এবং ‘কেজিএফ চ্যাপটার ২’ বক্স অফিসে দারুণ ব্যবসা করেছে। যার ক্রেডিট অনেকাংশে প্রশান্ত নীলের উপরেই বর্তায়। ২০১৪ সালে ‘উগ্রাম’ ছবির মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে তার ডেবিউ হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তার কেরিয়ারে ৩ টি ছবি রয়েছে। নিখুঁত পরিচালনা এবং গল্প বলার ধরণে ৩টি ছবিই সিনে সমালোচকদের থেকে দারুণ প্রশংসা পায়। অনেকেই তার সঙ্গে ‘বাহুবলী’ খ্যাত পরিচালক এস এস রাজামৌলি তুলনা করেন। তবে প্রশান্ত নীল সে কথা মানেন না। তার মতে তিনি এখনও পরিচালনার জগতে নিজেকে প্রমাণ করতে পারেননি। তবে তার ব্লকবাস্টার ছবি দেখলে যে কেউ বলবে তিনি এই ইন্ডাস্ট্রিতে লম্বা রেসের ঘোড়া।

সুকুমার (Sukumar) : করোনা পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় সিনেমাকে লড়াইয়ের ময়দানে এগিয়ে নিয়ে গেছেন যিনি তিনি দক্ষিণের পরিচালক সুকুমার। তার ‘পুষ্পা : দ্য রাইজ’ ছবিটি বক্সঅফিসে রীতিমত ঝড় তুলেছিল। এমনকি হলিউডের ‘স্পাইডারম্যান’কেও জোরদার টক্কর দিয়েছিল। ছবিটি বানাতে খরচ হয়েছিল ১৮০ কোটি টাকা। এই ছবিটি পরে ৩৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলে। ছবির হিন্দি সংস্করণটিও ১০৮ কোটি টাকার ব্যবসা করে। পরিচালক অবশ্য তার এই সাফল্যকে গোটা ভারতীয় সিনেমায় সাফল্য হিসেবে দেখতে চান। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, হিন্দি সিনেমা, তামিল সিনেমা, তেলুগু সিনেমা, এসব অতীতের জিনিস। এখন ভারতীয় সিনেমার সময়। সিনেমা যদি ভাল হয়, গল্পটি দর্শকদের পছন্দ হয় এবং নির্মাণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হয় তবে দেশের প্রতিটি ভাষার মানুষ, প্রতিটি ভাষা সিনেমা দেখার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।” সুকুমার ভবিষ্যতে হিন্দি ছবিও পরিচালনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এ আর মুরুগদাস (A. R. Murugdas) : তামিল চলচ্চিত্রের বিখ্যাত পরিচালক এ আর মুরুগদাস। বহু নামিদামি সুপারস্টারের সঙ্গে তিনি ছবি করেছেন। রজনীকান্তের সঙ্গে ‘দরবার’, বিজয়ের সঙ্গে তার ‘সরকার’ ছবি দুটি সুপার হিট হয়েছিল। তিনি হিন্দিতেও ‘গজিনি’ ছবিটির পরিচালনা করেন। ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আমীর খান ও আসিন অভিনীত এই ছবিটি ১৯৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। আমির খান এবং জিয়া খান বাদে ছবির বাকি চরিত্রগুলিতে অভিনয় করেছিলেন দক্ষিণের অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরা। ২০১৪ সালে তামিল অ্যাকশন ড্রামা ‘কাথি’র জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালকের ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।

মনিরত্নম (Maniratnam) : দক্ষিণের সুপারস্টার পরিচালকদের প্রসঙ্গ উঠলে সেখানে মনিরত্নমের নাম থাকতে বাধ্য। তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে তিনি বহু সুপার হিট ছবি উপহার দিয়েছেন। ‘দিল সে’ ছবি পরিচালনার মাধ্যমে তিনি বলিউডে প্রবেশ করেন। তার পরিচালনায় ‘রোজা’ ছবিটি দারুণ হিট হয়েছিল। এই ছবিতেই প্রথমবার প্লেব্যাক করার সুযোগ পেয়েছিলেন এ আর রহমান। মনিরত্নম পিএস-১ ছবির পরিচালনা করছেন বর্তমানে। এই ছবিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চন অভিনয় করছেন। কল্কির ক্লাসিক তামিল উপন্যাস ‘পোনিয়িন সেলভান’ অবলম্বনে ছবিটি শীঘ্রই গোটা ভারতবর্ষজুড়ে মুক্তি পাবে।