পরমাণু যুদ্ধ-বিগ্রহ নিয়ে এই মুহূর্তে সারা বিশ্ব চরম উদ্বেগে। বেশীরভাগ দেশের হাতেই মজুত শক্তিশালী পারমানবিক অস্ত্র। আর এটাই সমগ্র মানবজাতির কাছে চরম হুমকি। এইসব দেশগুলি মারণস্ত্র ব্যবহারের স্বপক্ষে যুক্তিও সাজিয়েছে। তাদের বক্তব্য, শত্রুর হাত থেকে দেশের শান্তি এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্যই পরমাণু আস্ত্র রাখতে হয়েছে।

পারমানবিক অস্ত্রের পক্ষে ও বিপক্ষে
ব্যয়বহুল এবং বিস্ফোরক পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, নর্থ কোরিয়া, রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশগুলি উন্নত প্রযুক্তির পারমানবিক অস্ত্র সম্ভারে সজ্জিত।
পক্ষে
পারমানবিক অস্ত্র মজুত থাকলে দেশের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে থাকে। জাপানে পারমানবিক হামলা থেকেই স্পষ্ট, একটা দেশ ধ্বংস করতে লাগে মাত্র কয়েক মিনিট। কোনও দেশের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকাটা অনেকটা দাদাগিরির মতো। অন্য দেশগিলি সম্ভ্রমের চোখে দেখে।
যুদ্ধ রোধ করে। যদি কোনও রাষ্ট্র পরমাণু অস্ত্র ভাণ্ডারে সজ্জিত থাকে তবে প্রতিবেশী দেশগুলি আক্রমণের আগে দু-বার ভাববে। যুদ্ধের আগে শান্তির কথা বলবে।

বিপক্ষে
কয়েক মিনিটের মধ্যে একটা দেশ ধূলোয় মিশিয়ে দিতে পারে। পরমাণু ক্ষমতাধর বেশীরভাগ দেশই জানিয়েছে, আত্মরক্ষার জন্যই তারা এই মারণস্ত্র তৈরি করেছে। যদিও এটা সবসময় সত্যি নয়। পরমাণু অস্ত্রের অপব্যবহার করছে এমন দেশও আছে। নির্বিচারে হত্যা করেছে নিরপরাধ জীবন।
পারমানবিক অস্ত্রসম্ভার রক্ষণাবেক্ষণেও ব্যয় হয় প্রচুর। তাই প্রতি বছর বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যয় করেই এসবের দেখভাল করতে হয় দেশগুলিকে।
শেষ পর্যন্ত এইসব অস্ত্র মানবজাতি ধবংসেই ব্যবহার হবে। যাতে মূল্য চোকাতে হবে মাত্রাতিরিক্ত। পরমাণু বিস্ফোরণ ব্যবহার পরবর্তী প্রভাব সুদূরপ্রসারী। প্রাণ স্বাভাবিক বিকাশের ক্ষতি হবে।
এইসব পক্ষে, বিপক্ষের উর্দ্ধে উঠলে দেখা যাবে, বিভিন্ন দেশ পারমানবিক অস্ত্র তৈরিতে বিপুল টাকা খরচ করছে। এখানে আমরা প্রথম ১০ পারমানবিক শক্তিধর দেশের তালিকা তৈরি করেছি।

১০) ইরান
ইরান বিশ্বের কাছে পারমাণবিক শক্তির একটি দেশ হিসাবে স্বীকৃত। যদিও তার দ্বারা পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্র বা পারমাণবিক পরীক্ষা পরিচালিত সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

৯) উত্তর কোরিয়া
তালিকায় নবম স্থানে উত্তর কোরিয়া। সম্প্রতি এরা পরমাণুশক্তি প্রদর্শন করেছে। প্রথম পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা করেছিল ২০০৬ সালে। ২০১০ সালে মোট ১০ পারমানবিক টর্পেডো বা ওয়ারহেডের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।

৮) ইজরায়েল
আকারে ছোট হলেও ইজ্রায়েলের আছে ৮০ টি পরমাণু অস্ত্র বা ওয়ারহেড। ইসরায়েল পরিচালিত পারমাণবিক পরীক্ষার অন্যান্য পরিসংখ্যান জানা যায় না।

৭) ভারত
অন্যতম পরমাণু শক্তিধর দেশের তালিকায় ভারতের সপ্তম। ১১০ থেকে ১২০ ওয়ারহেডের মালিক। ১৯৭৪-এ প্রথম পারমানবিক পরীক্ষা চালায়। শেষ ১৯৯৮ সালে।
৬) পাকিস্তান
ষষ্ঠ স্থানে পাকিস্তান। ১২০ থেকে ১৩০ পারমানবিক অস্ত্র মজুত আছে। ১৯৯৮ সালে ৬ বার পরীক্ষা করেছিল।
৫) ইউনাইটেড কিংডমস
২২৫ ওয়ারহেড মজুত। ৪৫ বার প্রীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে। প্রথমবার ১৯৫২ সালে। শেষবার পারমানবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৯১ সালে।
৪) চীন
১৯৬৪ সালে প্রথমবার পারমানবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল চীন তালিকায় চতুর্থ স্থানে। ২৫০ ওয়ারহেড আছে। ১৯৯৬ সালে শেষবার পরীক্ষা চালিয়েছিল চীন।
৩) ফ্রান্স
পরমাণু শক্তিধর দেশের তালিকায় ফ্রান্স তৃতীয়। ৩০০ ওয়ারহেডের মালিক।
২) আমেরিকা
দ্বিতীয় স্থানে আছে আমেরিকা। ১০৫৪ বার পরীক্ষা চালিয়ে ৭৭০০ ওয়ারহেড মজুত করেছে অস্ত্রভাণ্ডারে। শেষ বার পারমানবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল ১৯৯২ সালে।
১) রাশিয়া
পরমাণু শক্তিধর দেশের তালিকায় প্রথম রাশিয়া। ৮৫০০ পারমানবিক অস্ত্রের মালিক। ৭১৫ বার পারমানবিক পরীক্ষা চালায়। প্রথমবার ১৯৪৯ সালে। ১৯৯০ সালের পর তারা আর পরীক্ষা চালায়নি।
আরো পড়ুন : ভারতের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনদল যাদের কথা জানলে আপনার গর্ব হবে
পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে সবচেয়ে শক্তিশালী বিবেচনা করা হয় এই ১০ দেশকে। পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখার খাতিরেই পারমানবিক শক্তিধর দেশগুলির থেকে নিয়ন্ত্রণ আশা করে সারা বিশ্ব।
আমাদের প্রতিটি পোস্ট WhatsApp-এ পেতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন