চিকিৎসকেরা হল মর্ত্যের ভগবান। তাঁদের ওপরেই নির্ভর করে রোগীর বাঁচা-মরা। মানবসভ্যতার ইতিহাসে চিকিৎসকের অবদান অপরিসীম। চিকিতসাশাস্ত্রে প্রাচীন ভারত উতকর্ষের সীমায় পৌছেছিল। সেই ধারা আজও বহমান। এখনও ভারতীয় চিকিৎসকদের বিশ্ব জোড়া খ্যাতি। বলা যায়, প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে আমরাই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার সাপ্লাই দিই।
ভারতে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিশ্বমানের না হলেও হেলাফেলার নয়। বরং মেধায় ভারতীয় চিকিৎসকেরা পাল্লা দেন বাকি বিশ্বের সঙ্গে। সেই চড়ক, সুশ্রুত থেকে বিধানচন্দ্র রায়, গোখলে – তালিকা বেশ লম্বা। এখানে সেরা ১০ ভারতীয় চিকিৎসকের তালিকা তৈরি করেছি আমরা।
১০) ডঃ এজেকে গোখলে
বিখ্যাত চিকিৎসক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসাবে দেশ জোড়া খ্যাতি। তিনিই প্রথম হিউম্যান-টু-হিউম্যান হার্ট এবং ফুসফুস প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা সঞ্চালনা করেন। ন্যূনতম অ্যাক্সেস কার্ডিয়াক সার্জারির পাশাপাশি এলভিএডি যন্ত্র বসানোর কৃতিত্বও এজেকে গোখলের। ২০১৫ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তাঁকে ‘উগড়ি পুরস্কারম’-এ ভূষিত করে। পরের বছরেই পান পদ্মশ্রী পুরস্কার।
৯) ডঃ দেবিপ্রসাদ শেট্টি
প্রতিষ্ঠিত কার্ডিয়াক সার্জেন। হৃদরোগ সম্পর্কিত জ্ঞানের কারণে দেবীপ্রসাদ শেট্টিকে ভারতের ‘হেনরি ফোর্ড’ বলা হয়। অভাবী রোগীদের চিকিৎসার জন্য তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন ‘নারায়ণ হৃদয়ালয়’। বিশ্বের সবচেয়ে বড় কার্ডিয়াক এবং ক্যান্সার হাসপাতাল। বিদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে স্নাতক হলেও কাজ করেছেন দেশেই। জনকল্যাণেও তাঁর বিশেষ অবদান ছিল। ‘যশবানী’ নামে একটি সস্তার স্বাস্থ্যবীমা প্রকল্প শুরু করেছিলেন কর্ণাটকে।
৮) একাসিও গ্যাব্রিয়েল ভেগাস
যতদিন মুম্বাইয়ে প্লেগের মহামারী নিয়ে কথা হবে ততবার আসবে গ্যাব্রিয়েলের নাম। মুম্বাইবাসী তথা তৎকালীন বোম্বেবাসীকে মহামারীর হাত থেকে বাঁচাতে প্লেগের কারণ এবং প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করেছিলেন তিনি। আক্ষরিক অর্থেই রাস্তায় নেমে আর্তের সেবা করেছিলেন। মানবদরদী চিকিৎসক হিসাবে আজীবন থাকবে গ্যাব্রিয়েলের নাম।
৭) ডঃ ললিত পাঞ্চাল
সুষুম্না কাণ্ড বা মেরুদণ্ডের রোগের চিকিৎসক। শরীরের পিছনের দিকের মূল হাড় বলে স্পাইনাল কর্ডের বিশেষ চিকিত্সার প্রয়োজন হয়। ললিত পাঞ্চাল দেশের এক এবং একমাত্র স্পাইন এবং জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জন। ১৭ বছর ধরে অর্থোপেডিক সার্জন হিসাবে কাজ করছেন। তাঁর কাছে আসতে রীতিমতো ‘লাইন’ দিতে হয় রোগীদের।
৬) ডঃ আমোদ রায়
দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কসমেটিক সার্জন। মুম্বাইয়ে অনেকগুলি ক্লিনিক আছে আমোদ রায়ের। সফল প্লাস্টিক সার্জারি হিসাবেও তাঁর দেশ জোড়া খ্যাতি।
৫) ডঃ সঞ্জয় বরুদে
সাম্প্রতিক গবেষণা দেখা গেছে অতিরিক্ত ফাস্টফুড খাওয়ার ফলে স্থূলতা এবং মেটাবলিক হারের সমস্যায় ভুগছেন। সঞ্জয় বরুদে একজন অভিজ্ঞ ব্রায়্যাট্রিক সার্জারি কনসালট্যান্ট।
৪) ডঃ বালমুরালি আম্বাতি
চোখ এবং অক্ষিগোলকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বালমুরালি আম্বাতি নামকরা অপথ্যালমোলজিস্ট। বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অফ উটা স্কুল অফ মেডিসিনে কর্মরত। ভারত এবং আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে গবেষণাদলের অন্যতম সদস্য তিনি। একইসঙ্গে কর্ণেল রিসার্চের অধিকর্তা।
৩) ডঃ রামনিক মহাজন
জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট জগতে রামনিক মহাজনের খ্যাতি দেশ জোড়া। মুম্বাইয়ে একাধিক চিকিৎসাকেন্দ্র আছে তাঁর। অস্থি বিশেষজ্ঞ হিসাবেও সুনাম আছে তাঁর।
২) ডঃ দ্বারকানাথ কটনিস
চীনের চিকিতসাজগতে ভারতীয় দ্বারকানাথ ক্টনিসের নাম থাকবে চিরকাল। সীমান্তে চীনা সেনাদের চিকিৎসায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। উদারতা, সত্য নিষ্ঠা এবং নিঃস্বার্থ সেবার কারণে তাঁকে ‘ব্ল্যাক মাদার’ নামে ডাকত চীনারা। চীনা সরকার তাঁকে স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করে। বিদেশের মাটিতে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন দ্বারকানাথ।
১) ডঃ অসীম দেশাই
ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইএনটি সার্জনের নাম অসীম দেশাই। বহু বছরের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। দেশের একমাত্র এন্ডোস্কোপিক সাইনাস সার্জনও তিনি। ভারতে এই রোগের চিকিৎসক বিরল।