পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের মধ্যে প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় টুকটাক বাকযুদ্ধ লেগে থাকে। তবে দুজনের টুকটাক এই কথা কাটাকাটির মধ্য যে রসবোধ লুকিয়ে থাকে তা থেকেই নেটাগরিকরা আলোচনার বিষয়বস্তু খুঁজে পান।
একজন যখন পোস্ট করেন, ‘দাদা আমি সাতে পাঁচে থাকি না’তখন অন্যজন লেখেন, ‘সাতপাঁচ ভেবেই’। আর এই ভাবেই পরিচালক আর অভিনেতার মধ্যে চলা টক-ঝাল সম্পর্কের রসায়নকে সকলেই উপভোগ করেন। ২ রা মে রবিবার, ভোটের ফল প্রকাশের পরও এই ঘটনার ব্যতিক্রম হল না।
এই দিন ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায় যে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে পরাজিত হয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এরপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি দীর্ঘ একটি পোস্ট করেন, সেখানে লেখা ছিলো, “২১ শের ভোটযুদ্ধ শেষ। মানুষের রায়ে আশাতীত সাফল্যে প্রথম স্থানে তৃণমূল এবং দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি। সিপিএম ও কংগ্রেস শূন্য। জয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন। যারা জয়ী হলেন না, তাদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ। সব রাজনৈতিক দলের ভোটার, সমর্থক ও কর্মীদের ভালোবাসা জানাই।
নির্বাচনে হার জিত থাকেই। ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে আমাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন শ্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ওনাকে অভিনন্দন। সদ্য রাজনীতিতে পা দিয়েই জয়ী হয়েছেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাজ চক্রবর্তী ও কাঞ্চন মল্লিক। দু’জনকেই শুভেচ্ছা। আশা করব প্রথা পাল্টে তৃণমূল এদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেবে এবার। এই নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গেছেন শুভেন্দু অধিকারীর কাছে।
যে কোনো কেউ হারুন বা জিতুন নতুন সরকার যেন ফের দুর্নীতিতে না জেতে সেটাই কাম্য। জিতুক বাংলার সাধারন মানুষের সত্যিকারের উন্নয়ন, জিতুক বাংলার বেকারদের চাকরি পাওয়ার স্বপ্ন, জিতুক স্বাস্থ্যব্যবস্থার পরিকাঠামো ও পুলিশের শিরদাঁড়া। হারুক ক্ষমতার আস্ফালন আর গুন্ডামি। জিতুক বাংলার শরীর ও মন।”
এই পোষ্টের নীচে কমেন্ট সেকশনে পরিচালক অনেকেত চট্টোপাধ্যায় একটি কমেন্ট করেন আর তা নিয়ে আবার নেটিজেনদের মধ্যে নবউদ্যমে কথোপকথন শুরু হয়ে যায়।ঠিক কী লিখেছিলেন পরিচালক? কমেন্ট সেকশনে অনিকেত চট্টোপাধ্যায় এসে বহুজন সমাজ পার্টির কলকাতা অফিসের ঠিকানা দিয়ে দেন।
এই ঠিকানা দেওয়ার কারণ খুঁজতে গেলে রুদ্রনীল ঘোষের রাজনৈতিক জীবনের দিকে তাকাতে হয়। ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতি থেকে শুরু করে, রাজ্যে ২০১১র পালাবদলের পর তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা ও এইবার ২০২১ এ বিজেপির সদস্য হয়ে রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন রুদ্রনীল। এইবার নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তিনি যদি আবার দল বদল করতে চান তাহলে বহু জন সমাজ পার্টিতে যোগদান করতে পারেন, সে কথা বোঝাতেই অনিকেত বাবু ঠাট্টা করে কমেন্ট সেকশনে ওই অফিসের ঠিকানা দিয়েছেন।
এরপর থেকে নেটিজেনরা এই বিষয়টি নিয়ে কোমর বেঁধে মঞ্চে নেমে পড়েছেন। অনিকেতের কমেন্ট যেন তাদের ক্ষেত্রে সানডে মোটিভেশনের মত কাজ করেছে। বহুজন সমাজ পার্টির রং নীল সে দিকে ইঙ্গিত করে কেউ কমেন্টে লিখেছেন, “রুদ্র লাল, রুদ্রসবুজ, রুদ্রগেরুয়ার পর এবার তার নামের সাথে রংটা মিলে যাবে।” আবার কেউ মজা করে লিখেছেন, “দাঁড়ান উনি আগে গোটা বাংলা ভ্রমণ করুন তবে তো অন্য রাজ্যে যাবেন। বাংলায় এখনো ওর যাওয়ার জায়গা বাকি আছে।”