ত্বকের রং, শরীরের আকার-আকৃতি, উচ্চতা নিয়ে সমাজের সমালোচনা কিংবা রেসিজমের আঁচড় কখনও স্পর্শ করেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই বডি শেমিং নিয়ে সর্বদা অধিক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। মহিলাদের শ্যাম বর্ণ ত্বক, অত্যধিক স্থূল কিংবা রোগা চেহারা, বেশি লম্বা কিংবা খুব বেঁটে হওয়া সমাজের চোখে দোষের। পরিবারের সদস্যরাই কার্যত নারীর শরীরের তথাকথিত “খুঁত” নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন।
সাধারণের বদ্ধমূল ধারণা অনুযায়ী, সিনে ইন্ডাস্ট্রির নায়িকা মানেই হতে হবে ঝাঁ-চকচকে সুন্দরী। “সুন্দরী”রও আবার সংজ্ঞা ঠিক করে রেখেছে সমাজ। উজ্জ্বল ত্বক; দুধে-আলতা গায়ের রং; না বেশি রোগা না মোটা, সেইরকম স্লিম ফিগার; সমাজের চোখে মানানসই উচ্চতা! এই হলো সমাজের সৌন্দর্য পরিমাপের মানদণ্ড। এর থেকে একটু এদিক-ওদিক হলেই সমালোচনার ঝড় উঠবে নায়িকাদের নিয়ে। টলি-ইন্ডাস্ট্রির বহু নায়িকাকেই চেহারা নিয়ে সমালোচিত হতে হয়েছে। জানুন এই তালিকায় কারা রয়েছেন।
অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya) : টলিউডের হেভিওয়েট অভিনেত্রী তিনি। হেভি ওয়েটের কারণেই বারংবার সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে অপরাজিতাকে। তবে অপরিচিতা কিন্তু ছোট বয়সে বেশ রোগা ছিলেন। তাতেও অবশ্য আপত্তি ছিল সমাজের। তখন তাকে বলা হতো “তালপাতার সেপাই”! এরপর যখন তার ওজন বাড়তে শুরু করে, তখন তার নতুন নামকরণ হয়, “পাশবালিশ”। তবে তাতে থোড়াই কেয়ার অভিনেত্রী। তিনি আছেন তারা নিজের ছন্দে। মেদবহুল শরীর নিয়েই টলিউড কাঁপিয়ে অভিনয় করছেন অপরাজিতা।
শ্রুতি দাস (Shruti Das) : টেলিমিডিয়ার অভিনেত্রী শ্রুতি তার গায়ের রং নিয়ে বারংবার সমালোচিত হয়েছেন। যখন তিনি অভিনেত্রী হননি, তখনো তাকে যেমন তার শ্যামবর্ণ ত্বক নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়েছে, আজ যখন তিনি নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন, তখনও তাকে সমালোচিত হতে হয়। অভিনেত্রী নিজে জানিয়েছেন, একসময় তার প্রাক্তন প্রেমিক তাকে ফর্সা হওয়ার জন্য উপদেশ দিতেন। তবে তার ত্বকের রং কিন্তু তার অভিনয় দক্ষতাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
মধুমিতা সরকার (Madhumita Sarkar) : এই টলিউড সুন্দরীকেও নিজের চেহারা নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়েছে। তিনি নাকি অত্যধিক রোগা! এই নিয়ে তাকে বারংবার সমালোচনা করে থাকেন কিছু নেটিজেন। সে যাই হোক, মধুমিতা কোনও সমালোচনায় কান দেন না। ছোটপর্দায় এবং বড় পর্দায় চুটিয়ে কাজ করে চলেছেন অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার। সম্প্রতি তার অভিনীত নতুন ছবি “ট্যাংরা ব্লুজ” মুক্তি পেয়েছে বড়পর্দায়।
তিথি বসু (Tithi bose) : “মা” ধারাবাহিকের ছোট্ট “ঝিলিক” অর্থাৎ তিথি এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছেন। এখন কিশোরী বলা যায় তাকে। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি নাচেও পারদর্শী। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই তিনি নিজের ছবি এবং নাচের ভিডিও পোস্ট করে থাকেন।
তবে কিছু কুমন্তব্যকারী তার চেহারা নিয়ে বরাবর তার সমালোচনা করেন। অশ্লীল মন্তব্য করেন। তবে তিথিও এতদিনে সমালোচকদের এড়িয়ে চলতে শিখে গিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটি নাচের ভিডিও পোস্ট করেছেন, যা সমালোচনার বদলে প্রশংসা কুড়িয়েছে।