গত কয়েক দিন ধরেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল বিহার আর ঝাড়খণ্ডে। এর ফলে জল ছাড়া শুরু করছে ম্যাসাঞ্জোর আর তিলপাড়া জলাধার। এর জেরে বীরভূম আর মুর্শিদাবাদে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। অন্য দিকে বিহারে ব্যাপক বৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মালদাতেও।
টানা বৃষ্টি আর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পর রাজ্যের তিন জেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও ভবিষ্যতে তা খারাপ হতেই পারে।
মুর্শিদাবাদ :- মুর্শিদাবাদ জেলায় এমনিতেই বৃষ্টি হয় তবে এই বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টির ফলে অধিকাংশ জমিতে জল জমে গেছে আর বিগত কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টির কারণেও চাষের জমির ক্ষতি হয়েছে।
কান্দি মহাকুমার সেচ দফতর থেকে জানা যাচ্ছে- বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা নাগাদ তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ১৪ হাজার ৯০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। একই সাথে দেওচা ব্যারেজ থেকে ১৮৫০ ও বৈধরা ব্যারেজ থেকে ৩১০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই জল ছাড়ার ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় কান্দির বিভিন্ন এলাকার নদী গুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশঙ্কাজনক গ্রামগুলোতে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। তবে জানা গেছে ভরতপুর ১ ব্লকের সুখদানপুর গ্রামে অবস্থিত দুশো পরিবারের মধ্যে অনেক বাড়িতেই ইতিমধ্যে জল প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ আগামীতে মুর্শিদাবাদের এই গ্রামগুলোর অবস্থা সঙ্কটজনক হতে চলেছে আর এটিই বর্তমানে চিন্তার বিষয়।
মালদা :- লাগাতার বর্ষণ ও জল ছাড়ার ফলে মালদা জেলার অবস্থা ও খুব একটা স্বাভাবিক নয়। বিহারের প্রবল বর্ষণ এই জেলার নদী গুলির ওপরেও প্রভাব ফেলেছে। মালদার অধিকাংশ নদী বিপদসীমার কাছাকাছি আছে। এই সকল নদীগুলির মধ্যে মহানন্দা, ফুলহর নদীর উল্লেখ করা যায়। ইতিমধ্যে চাষাবাদে বৃষ্টির জল ঢুকে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আগামীতে জলস্তর আরো বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি আরো সংকটজনক দিকে যাবে।ইতিমধ্যে গত দুদিনের ভাঙ্গনে ১০০ বিঘা জমি গঙ্গার ভেতর চলে গেছে।
বীরভূম :- মুর্শিদাবাদ মালদার মতোই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে আছে পশ্চিমবঙ্গের অপর একটি জেলা বীরভূম। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে বীরভূমের অধিকাংশ নদী যেমন ময়ূরাক্ষী ,দ্বারকা, অজয়, কুয়ে,হিংলো-র জলস্তর স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেছে অনেক গুণ। দ্বারকা নদীর জল স্তর বাড়ার ফলে মোহাম্মদ বাজারের গ্রাম পঞ্চায়েতের কংক্রিটের একাংশ ভেঙে গিয়েছে।
যদিও প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে,পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। তবে আগামীতে জলস্তর বাড়লে এই তিনজেলার অবস্থা যে সংকটময় হবে তা বলাই বাহুল্য।