একের পর এক হেভিওয়েট প্রার্থীর যোগদান থেকে প্রচার নিয়ে নতুন ভাবনা, সব মিলিয়ে এবার বাংলা বিধানসভার আগে আলাদাই ফর্মে দেখা যাচ্ছে বিজেপিকে (BJP)। ২০১৬ সালের আগে যে দলকে কার্যত রাজ্যরাজনীতিতে উপেক্ষিত ছিল সেই দল ২০২১ এর বাংলার নির্বাচনী ময়দানে কার্যত তাক লাগিয়ে দিয়েছে। ২০১৯ সাল থেকেই বাংলায় বিজেপির উত্থান।তার আগে কোনো দিনই বাংলায় বিরোধীদলের জায়গাও পাইনি বিজেপি। কিন্তু কেন এই উত্থান?
অনেকেই মনে করছেন বাংলায় বিজেপির উত্থানের অন্যতম কারণ, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে ক্ষোভ। আবার অনেকে মনে করছেন তৃণমূল নেতাদের সাথে রাজ্যের তৃণমূলের ব্যক্তিদের যোগাযোগ ছিন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং ২০১৯ লোকসভায় দেশজুড়ে চলতে থাকা মোদি ম্যাজিক রাজ্যে বিজেপির উত্থানে সাহায্য করেছে।
রাজ্যের মাত্র ৩০ শতাংশ ভোট মুসলিম।রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে ধর্মের গোঁড়ামিতে সুড়সুড়ি দিয়ে বাকি ৭০ শতাংশ হিন্দুদের টার্গেট বানিয়েই ভোট স্ট্রাটেজি করছে বিজেপি। অর্থাৎ নিজের স্ট্র্যাটেজি চেঞ্জ করেনি বিজেপি। পাশাপাশি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদায় যোগী আদিত্যনাথ নিজেই সান দিচ্ছেন ভোটের অস্ত্রে।
২০১৯ লোকসভা ভোটে বিজেপির ভোট শেয়ার ছিল ৪০.৬৪ শতাংশ। সেই ভোটের যদি ৭০ শতাংশকেই নিজের ভোটের হিসাবে বিজেপি ধরে নেয়, তাহলে ৭০ এ ৬০ শতাংশ ভোট বিজেপিকে নিজের দিকে আনতে হবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে যদি ৭ শতাংশ ভোটকেই বিজেপি টার্গেট করে সে ক্ষেত্রে এর মধ্যে ৬০ শতাংশ ভোট নিজের দিকে আনতেই হবে বিজেপিকে। মুসলিম ভোট সম্পূর্ণ বাদ দিলে বাংলার ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ৬০ থেকে ৮০ টি আসন এমনিই কেটে যাবে বিজেপির।
এপাশে অমিত শাহ নিজেই ২০০ টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন বাংলায়। সেক্ষেত্রে বিজেপির এবার পাখির চোখ ২৩৪ থেকে ২১৪ টি আসন।এই আসনগুলো তৃণমূলের মত ক্ষমতাশালী প্রতিপক্ষকে হারিয়ে জিততেই হবে বিজেপিকে। বিজেপি অন্দরমহল সূত্রের মতে, তৃণমূল এবং বাম কংগ্রেস জোট দুটি ভাগে ভাগ হলে আদতে সুবিধা পেতে পারে বিজেপি।অন্যদিকে মিম এবং আব্বাস সিদ্দিকীর পার্টি তৃণমূল থেকে মুসলিম ভোট ব্যাংক এবং বিজেপি বিরোধী বেশকিছু ভোট চলে যাবে বাম-কংগ্রেস জোটে যাবে শেষপর্যন্ত লাভ হবে বিজেপির।
আরও পড়ুন : কাকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করলে বিজেপির লাভ হবে
প্রথমে ২০১৯ সালে মুকুল রায়ের তৃণমূলে আগমন। সেখান থেকেই শুরু উত্থান। এবার ২০২১ এর ভোটের আগে শুভেন্দু, রাজিব সহ তৃণমূলের আরো হেভিওয়েট নেতাদের বিজেপিতে যোগদানের ফলে সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে বিজেপির। তাদের নিয়েই প্রচার চলছে পুরোদমে।তবে এই প্রচার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে পারবে কিনা তা দেখা এখন কেবলই সময়ের অপেক্ষা।
আরও পড়ুন : মমতা কি ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন, জ্যোতিষ গননা কী বলছে