বাংলা জনপ্রিয় লোকগান শিল্পী হলেন সুরজিৎ চ্যাটার্জী (Surojit Chatterjee)। তার গাওয়া ‘বারান্দায় রোদ্দুর’ গানটি তো বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দারুণ হিট শ্রোতাদের মধ্যে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তার গান শুনতে পছন্দ করেন। তার গাওয়া গান আট থেকে আশি, সকলেরই বেশ পছন্দ। কিন্তু এহেন গায়ক ইদানিং বেশ ভয় পাচ্ছেন নিজের গান নিয়ে। তার ভয় সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। সম্প্রতি এই বিষয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন সুরজিৎ।
ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়াতে জনপ্রিয় গানের প্যারোডি গাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও এই ট্রেন্ড নতুন নয়। পুরনো দিনেও অনেকেই গানের প্যারোডি গেয়ে সুনাম কুড়িয়েছেন। কিন্তু ইদানিং প্যারোডির নামে কার্যত জনপ্রিয় গানগুলিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার এই ধরনের অশ্লীলতা এবং চটুলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন সুরজিৎ। যদি তার জনপ্রিয় গানেও এমনটা করা হয়? তাহলে তাকেও সোশ্যাল মিডিয়াতে কটাক্ষের শিকার হতে হবে না তো?
এই ভয় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি লিখলেন, “আমার গান আমি অনেক বছর ধরেই গেয়ে আসছি, এবং আগামী দিনেও গেয়ে যাব। আমার শ্রোতা এবং দর্শক বন্ধুরা আমার সব থেকে বড় দায়িত্বের জায়গা। ইদানিং আমার গানের অনেক ” প্যারোডি” হচ্ছে দেখছি। শুধু একটাই কথা বলে রাখি, সেই সব “প্যারোডি” গান বা গানের বক্তব্যের দায় আমার কিন্তু একেবারেই নেই।”
এরপর আনন্দবাজারের কাছে একটি সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি তার বিরক্তি উজাড় করে দিয়েছেন। তার কথায়, “প্যারোডি করা নিয়ে রোদ্দূর রায়ের অবস্থা দেখ, আমার গানে কী কথা বসাবে, গালিগালাজ করবে কে জানে! এই সব নিয়ে খুব বিরক্ত আমি।” তিনি আরও বলেন, “এক সময় প্যারোডি গান শিল্পের পর্যায়ে ছিল। আমিও প্যারোডি গান শুনে মজা পেতাম। এখন সেটা শিল্প আছে কি না, এই বিতর্কে আমি যাচ্ছি না। এখন তো ফ্লাইওভারের কাজ বন্ধ হয়ে গেলেও ‘তোমার দেখা নাই’ কথা নিয়ে ‘ফ্লাইওভারের দেখা নাই’ প্যারোডি হচ্ছে।”
সোশ্যাল মিডিয়া প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, “সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকে গালিগালাজ শুনতে, বলতে, পড়তে বেশি পছন্দ করে। আগে রকে বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে যে ধরনের কথা হত এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ধরনের কথা হয়। ‘বারান্দায় রোদ্দুর’ নিয়েও যদি এ রকম কিছু হয়, তার প্রভাব আমার উপর এলে তো সমস্যা।” সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে বেশি চিন্তিতও তিনি। তার কথায় সোশ্যাল মিডিয়ার দরজা সবার জন্যই খোলা। সেখানে যে যা খুশি তাই করতে পারে। আর এটাই গায়কের সব থেকে বড় ভয়ের বিষয়।