দীপাবলীর সাথে শব্দবাজির সম্পর্ক অনেক দিনের। যদিও শব্দবাজি ও আতশবাজি সবসময় পরিবেশগত দিক দিয়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি করেছে । এই শব্দবাজির ফলে এক প্রকার অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। দূষণের মাত্রা কালী পূজো এবং দীপাবলীর সময় সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমগ্র প্রাণীদের শ্বাস নিতে এক প্রকার কষ্ট দেখা হয় এছাড়াও বায়ু দূষণের ফলে দেখা যায় নানা রকমের ফুসফুস জনিত রোগ। আর তাই প্রশাসনকে কঠোর হাতে মোকাবেলা করতে হয় শব্দবাজির বিরুদ্ধে।
গত বছর সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়ে জানিয়েছিল সমগ্র উত্তর ভারত এবং ভারতের অন্যান্য প্রান্ত জুড়ে শব্দ ও আতসবাজি ব্যবহার ও বিক্রি একপ্রকার নিষিদ্ধ। কিন্তু এই বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত নানা শিল্পপতি এবং সংগঠন এই বছর শব্দবাজির ব্যবহারের ও বিক্রির সীমা সম্পর্কে ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালতে এক আপিল করেছিলেন যে তাদের কিছুটা সাময়িক ছাড় দেওয়া হোক। আর তাই সেই মামলায় আজ সর্বোচ্চ আদালত শব্দবাজি এবং আতশবাজি বিক্রির ক্ষেত্রে সাময়িক কিছুটা ছাড় দিল।
শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে এই মামলায় যে রায় ঘোষনা করা হয়েছে আজ তাতে শব্দবাজি এবং আতশবাজি বিক্রির ক্ষেত্রে যেমন কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে, তেমনই আরোপ করা হয়েছে বেশকিছু নতুন শর্তাবলী। এসব শর্তাবলী অনুযায়ী রেজিস্টার ডিলার বা লাইসেন্স প্রাপ্ত দোকান ছাড়া অন্য কোথাও থেকে শব্দবাজি বা আতশবাজি বিক্রি করা যাবে না। এছাড়াও অনলাইন বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে শব্দ বাজি বা আতশবাজি বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে নিরাপদ এবং পরিবেশবান্ধব আতশবাজি বিক্রি ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালত কোনরূপ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন নি। তবে শব্দবাজি এবং আতশবাজি ব্যবহারের সময়সীমা নির্দেশ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। দীপাবলি এবং কালীপুজো এবং অন্যান্য উৎসবের ক্ষেত্রে রাত্রি দশটা থেকে বারোটা অর্থাৎ দু’ঘণ্টা সময় শব্দ বাজি এবং আতশবাজি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টের ৫টি যুগান্তকারী রায় যা বদলে দিয়েছে ভারতের বিচার ব্যবস্থাকে
এছাড়াও ইংরেজি নতুন বর্ষ এবং বড়দিন উপলক্ষে রাত্রি ১১.৪৫ থেকে ১২.৪৫ পর্যন্ত শব্দবাজি এবং আতশবাজি ব্যবহারের ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে শব্দবাজি বা আতশবাজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ শুধুমাত্র দীপাবলি উপলক্ষে নয় সমস্ত রকম ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসবের ক্ষেত্রে এই দেশে এই নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকটি রাজ্য কে জানানো হয়েছে তারা যেন প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করতে বলে এর নির্দেশাবলী যথাযোগ্য পালন করতে। এখন দেখার এই নির্দেশাবলী যথাযোগ্য পালন করতে প্রত্যেকটা রাজ্য কতটা আন্তরিক ভূমিকা অবলম্বন করে এবং কিভাবে তারা মানুষকে শব্দবাজি এবং আতশবাজির দূষণ থেকে রক্ষা করবে?