রান্নাঘরকে দাঁড় করিয়েছিলেন শুক্লাদেবী, শেষের দিকে একটা খোঁজ পর্যন্ত নেননি সুদীপা

রান্নাই ছিল তার জীবন। বাঙালি হেঁসেল থেকে হারিয়ে যাওয়া নানা রান্নার জ্ঞানের ভান্ডার ছিল তার মাথায়। মাঝেমধ্যে জি বাংলা (Zee Bangla) রান্নাঘরে এসে তিনি তার জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে বাঙালি রাঁধুনীদের সমৃদ্ধ করতেন। কিন্তু আর তার ইউনিক রেসিপিগুলো জানা হবে না। বহু ইউনিক রান্নার রেসিপি নিজের সঙ্গে নিয়েই পরপারে পাড়ি দিলেন কিচেন কুইন অফ বেঙ্গল শুক্লা মুখোপাধ্যায় (Shukla Mukherjee)।

সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন শুক্লা মুখোপাধ্যায়। তার মৃত্যুর কারণ অবশ্য অজানা। কিন্তু তিনি যে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন তা ভাবতে পারেননি কেউই। সাধারণের মনের মধ্যে এখনও অমলিন তার হাসিমাখা মুখ। বুধবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।

যতদূর জানা যাচ্ছে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। এর আগেও কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। প্রত্যেকবার সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও এবার আর তার ঘরে ফেরা হল না। কিচেন কুইনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে রীতিমতো শোকস্তব্ধ রান্নাঘরের রানী সুদীপা চ্যাটার্জী।

আলুর খোসা, পটলের খোসা এবং অন্যান্য সবজির খোসা দিয়েও দুর্দান্ত রান্নার রাঁধতে পারতেন শুক্লা দেবী। তার মৃত্যুতে সুদীপা আক্ষেপ করে লিখেছেন, “রান্নাঘর যখন শুরু হয়, তখন আমাদের নতুন সংসারের ভাঁড়ার ছিলো শূন্যপ্রায়। শুক্লাদি- তা টের পেতে দিতো না কখোনো। আজ শুক্লাদিকে নিয়ে,কিছু লিখতে বসে,ভাবনাগুলো কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।”

তিনি আরও লিখেছেন, “এবছর জন্মদিনে wish করতেও ভুলে গেছি। কতদিন তোমার কোনো খোঁজ নিই নি। কোভিড পরবর্তী পরিস্হিতি- আমাদের কেমন যেন দুটিতে দিয়েছে। তোমার তো এত তাড়াতাড়ি যাবার কথা ছিলো না। আমি তোমায় নিয়ে কিছু আজ লিখতে পারবো না। “আমার প্রানের ‘পরে চলে গেল কে…বসন্তের বাতাসটুকুর মতো।”


এরপর একটি সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সুদীপা বলেন, “রান্নাঘর’এর জন্ম থেকে ও সঙ্গে ছিল। তখন এত টাকা ছিল না। তাই নিজেই তিন-চারটে মোচা কিনে এনে নিজের মাথা খাটিয়ে তিন-চার রকমের পদ রান্না করতেন”। পরম যত্নে রান্নাঘরকে দাঁড় করিয়ে চলে গেলেন শুক্লাদেবী।