২০২০ সালে “বিষে বিষে বিষক্ষয় হবে!”, এমনটা ভেবে ছিলেন অনেকেই। ২০২০ সালকে কেন্দ্র করে অনেকেরই বহু প্রত্যাশা ছিল। তবে সেই সমস্ত প্রত্যাশায় জল ঢেলে দিয়েছিল অতিমারি করোনা (Coronavirus)। গত বছরের মতো দুর্বিষহ, অভিশপ্ত সময় বিগত একশো বছরের ইতিহাসে দেখতে হয়নি পৃথিবীবাসীকে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি; জীবনধারণের প্রধান এই তিন স্তম্ভকেই রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে করোনা (COVID-19)।
পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি প্রান্তের সর্বস্তরের মানুষ করোনার কারণে (Coronavirus) কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। করোনার আঁচ গতবছর সিনে ইন্ডাস্ট্রিকে (Bollywood) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিশেষত ক্যামেরার পিছনের সারির কর্মীরা অতিমারির জন্য সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন।
তাদের রুজি-রোজগারে টান পড়েছে। অতিমারির জন্য হঠাৎ লকডাউনের (Lockdown) সিদ্ধান্তে ক্যামেরার পেছনের ক্রিউ মেম্বাররা হঠাৎ করেই কর্মহীন হয়ে পড়েন। এমনটা চলেছে টানা আট মাস।
বি-টাউনের (Bollywood) ক্যামেরাপারসন হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন সুচিস্মিতা রাউত্রে (Suchismita Rautrayi)। তার চোখে তখন ভবিষ্যতে সিনেমাটোগ্রাফার হয়ে ওঠার স্বপ্ন। তবে করোনা যেন এক ধাক্কায় তাকে মাটিতে এনে ফেলল! তাকেও অতিমারির দরুন কর্মহীনতার সমস্যায় ভুগতে হয়েছে।
সুচিস্মিতা নিজেই সেই ভয়াবহ দিনগুলির অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তবে তখন অবশ্য বিগ-বি অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) এবং সালমান খানের (Salman Khan) থেকে সাহায্য পেয়েছিলেন তিনি এবং তার মতো অন্যান্য ক্রিউ মেম্বাররা।
তাই এই দুইজনের প্রতি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকবেন সুচিস্মিতা (Suchismita Rautrayi)। তবে করোনার প্রভাবে দীর্ঘদিন রোজগারহীন ভাবে কাটিয়ে একটা সময় বাধ্য হয়েই তাকে তার বাড়ি ফিরে আসতে হয়। সুচিস্মিতার বাড়ি উড়িষ্যাতে।
তার বাড়িতে তার সঙ্গে থাকেন তার বিধবা মা। সংসার চালানোর জন্য বাড়ি ফিরে এসে শেষমেষ মোমোর দোকান খুলেছেন সুচিস্মিতা। তিনি জানাচ্ছেন, এই মোমোর দোকান থেকেই দিনে যে ৪০০-৫০০ টাকা রোজগার হয়, তা দিয়েই কোনোক্রমে সংসার চলছে তাদের।
সুচিস্মিতার মতো এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যারা ক্যামেরার পেছনে থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করেন। লকডাউনের জন্য দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে তারা তাদের পেশা থেকে দূরে রয়েছেন। সংসারের তাগিদে অন্য পেশা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে তাদের আশা, একদিন ফের তারা তাদের স্বপ্নের দুনিয়ায় ফিরতে পারবেন।