রাতের পর রাত কাটিয়েছেন স্টেশনে, মফস্বলের মেয়ে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র নায়িকা ‘দীপা’

স্টার জলসাতে (Star Jalsha) অতিসম্প্রতি শুরু হয়েছে ধারাবাহিক ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ (Anurager Chhowa)। শুরুর মুহূর্তেই সকলের মন জিতে নিয়েছে দীপা। দীপার গায়ের রং কালো। তবে তার মনটা ফুলের মত পবিত্র ও সুন্দর। কিন্তু মনের খবর আর কে রাখে? তাই নিজের বাড়িতেই সৎ মা এবং বোনের হাতে অবিরাম অপদস্থ হতে হয় তাকে। তবে তার জীবনেও আসে রাজকুমার। যে রূপ নয়, গুণ দিয়ে চিনে নেবে তাকে।

এই চরিত্রে অভিনয় করছেন স্টার জলসার নবাগতা অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ (Swastika Ghosh)। স্বস্তিকার অভিনয় দক্ষতা সকলেই দেখছেন। যদিও দর্শকের কাছে তিনি অপরিচিত নন। তিনি অন্য একটি চ্যানেলে ‘সরস্বতীর প্রেম’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন। তিনি কলকাতার মেয়ে নন। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে। মেয়েটা অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল কলকাতাতে। স্বস্তিকার বয়স খুব বেশি নয়। সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন। অভিনয় জগতে তার অভিজ্ঞতা হল ২ বছর।

Star Jalsha Anurager Chhoya Serial Cast, Wiki, Story, Release Date

ছোট থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার মা-বাবা, দিদি এবং বন্ধুরা সকলেই তাকে অভিনয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ যুগিয়েছেন। বলেছেন, ‘তুই পারবি, তুই অনেক বড় হবি’। নিজের জেদটাকে কখনও ছাড়েননি স্বস্তিকা। স্বস্তিকার মা এবং বাবা দুজনেই গানের জগতের মানুষ। মা এখনও রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে চর্চা করেন। স্বস্তিকা নিজেও ভারতনাট্যম নিয়ে ফোর্থ ইয়ার কমপ্লিট করেছেন। নাচ, গান আর অভিনয়, এভাবেই কাটছিল তার দিন। এরপর তিনি অডিশন দিতে শুরু করলেন। আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগে। তখন রায়দিঘি থেকে বাবার সঙ্গে কলকাতায় আসতেন। ট্রেনে আসা যাওয়া করতে ৩ ঘণ্টা করে সময় লাগতো ৬ ঘন্টা।

আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেছেন, “এমনও অনেক দিন হয়েছে যে, বাড়ি ফিরতে পারিনি। দু’-তিন বার তো স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে। আমার বাবাও খুব কষ্ট করেছেন তখন আমার সঙ্গে।’’ এখন তিনি রয়েছেন টালিগঞ্জে। তার বাবা থাকেন সঙ্গে। আর কিছুদিনের মধ্যেই বাবা-মা, দিদি, ভাই, ঠাকুমা সকলকেই নিজের কাছে এনে রাখতে চান।

Star Jalsha Anurager Chhoya Serial Cast, Actress Name

অনুরাগের ছোঁয়াতে ‘দীপা’ চরিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘এই চরিত্রের জন্য আমার মেকআপে টোন ডাউন করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আমার কখনও খারাপ লাগেনি বা কিছু মনে হয়নি। বরং চরিত্রের জন্য এ ভাবে প্রস্তুতি নিতে বেশ ভাল লেগেছে। নতুন ধরনের কিছু করার সাহস পেয়েছি মনে মনে। এই চরিত্রটার জন্য খাটতেও হয়েছে। তিন দিনে স্কুটি চালানো শিখেছি আমি।’’ কাজের প্রতি তিনি ভীষণভাবে সিরিয়াস। তাই তো প্রতিদিন ৭ টায় কল টাইম থাকলে ৬ টায় উঠে প্রস্তুতি নেন।

শুটিং সেটে সহ-অভিনেতা দিব্যজ্যোতি দত্তর সঙ্গে তার বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। স্বস্তিকা বলেছেন, ‘‘ক’দিন আগেই দিব্যজ্যোতির সঙ্গে কথা হচ্ছিল আমার চরিত্রটা নিয়ে। আমি যে দিন অডিশন দিতে যাই এই চরিত্রের জন্য, সে দিন আমার আগে আরও পনেরো-ষোলো জন অডিশন দিয়েছিল।’’ অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘অনেক সময়ে হয়তো ঠিক করে শট দিতে পারি না, তখন খুব চিন্তা হয়। কী করব বুঝতে পারি না। কিন্তু আমার সহ-অভিনেতারা ও পরিচালক খুব সাহায্য করেন। তাঁরা আমায় সাহস জোগান।’’