সপ্তম দফার নির্বাচনের দিন ফেসবুকে ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বিজেপি এবং তৃণমূল একাধিক সেলিব্রিটি প্রার্থীর পার্সোনাল মোবাইল নম্বর! মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, বৈশালী ডালমিয়া, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, জুন মাল্য, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, যশ দাশগুপ্ত, বাবুল সুপ্রিয়, রুদ্রনীল ঘোষ, পার্নো মিত্রের মত একাধিক সেলিব্রেটির নম্বর ভেসে বেড়াচ্ছিল ফেসবুকে!
‘করোনায় ভয় কিসের? আপনার পাশে মানুষের কাজ করার জন্য প্রাণ আনচান করা নেতারা! মাস্ক, স্যানিটাইজার, রক্ত, অক্সিজেন, অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য এক্ষুনি ফোন করুন…’এই মর্মে একটি ক্যাপশন দিয়ে নেট দুনিয়ায় শেয়ার করা হয়েছিল সেলিব্রিটিদের মোবাইল নম্বর। জনৈক নেটিজেনের এমন কাণ্ডকে সমর্থন জানিয়েছিলেন অনেকেই। তবে অনেকেই আবার এর বিরোধিতাও করেছিলেন।
তবে যারা এমন কার্যকলাপকে সমর্থন করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেত্রী তথা বাম সমর্থক শ্রীলেখা মিত্র। ‘‘যিনিই কাজটি করে থাকুন তিনি বুঝেছেন কাজের ছুতোয় তারকাদের দলবদল বা রাজনীতিতে যোগদান সাধারণের কাছে প্রচণ্ড হাস্যকর। কেউ এই যুক্তি বিশ্বাস করেনি। তাই এই ধরনের পোস্ট নেটমাধ্যমে শেয়ার হতেই ভাইরাল’’, মন্তব্য করেছিলেন শ্রীলেখা। নেট মাধ্যমে এমন কাণ্ডকে ‘বুদ্ধিদীপ্ত বদমায়েশি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন অভিনেত্রী।
এবার তার পাল্টা হিসেবে নেটদুনিয়ায় চূড়ান্তভাবে অপদস্ত হতে হলো শ্রীলেখা মিত্রকে। জনৈক নেটিজেন সম্প্রতি শ্রীলেখা মিত্রের ব্যক্তিগত নাম্বার নেট মাধ্যমে ফাঁস করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, অত্যন্ত কুরুচিকর মন্তব্য করে পোস্ট করা হয়েছে শ্রীলেখার উদ্দেশ্যে। ‘ভাত চাই? শ্রীলেখা মাসিকে কল করুন’! এইভাবে পোস্টের ক্যাপশন লিখতে শুরু করে ওই নেটিজেন ব্যক্তিগতভাবে শ্রীলেখা মিত্রের প্রতি অত্যন্ত কুরুচিকর মন্তব্য করলেন।
‘ওঁনার রেট টা কী চলছে…একজনের সঙ্গে কতো? দুজনের সঙ্গে কতো?’! এমন কুৎসিত ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে শ্রীলেখা মিত্রকে। বিষয়টি নজরে আসতেই শ্রীলেখা ওই পোস্টের স্ক্রিনশট তুলে তা নিজের সোশ্যাল পেজে পোস্ট করে জনৈক ওই নেটাগরিককে পাল্টা আক্রমণ করলেন। কু-মন্তব্যকারী ওই নেটিজেনকে “বোনপো” বলে সম্বোধন করে জবাব দেন, শুধু ভাত কেন? কোভিড সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতে তিনি রাজি।
একই সঙ্গে ওই নেটিজেনের রাজনৈতিক পরিচয়ও জানতে চান শ্রীলেখা। তিনি স্পষ্ট জানতে চান, ‘তুমি তৃণমূল না বিজেপি? মানে বোঝার চেষ্টা করছি কার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই ভাষায় আমার সম্পর্কে লিখলে’? কলকাতা পুলিশ ও সাইবার সেলকে উল্লেখ করে নিজের এই পোস্টে ওই নেটাগরিকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানান শ্রীলেখা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপি এবং তৃণমূলের প্রার্থীদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাবে ফাঁস হয়ে যাওয়াতে স্বভাবতই সন্দেহের তীর উঠেছিল বামেদের দিকে। কারণ এই লিস্টে বাম প্রার্থীরা ছিলেন না। তার উপর আবার এই ঘটনাকে সমর্থন জানিয়ে শ্রীলেখা মন্তব্য করেন ‘যারা মানুষের জন্য কাজ করবেন বলেছিলেন, এই পরিস্থিতিতে মানুষ তাঁদের চাইছেন। এবার তাঁরা ফোন অফ করে রাখলে কি করে হবে?
আরও পড়ুন : করোনার চিকিৎসায় এখন বাড়িতে হাতের কাছে রাখুন এই ৫টি ওষুধ
তাঁরা তো শুধু এখন বিনোদন জগতের মানুষ নয়, এখন জনপ্রতিনিধি। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই এই ভাঁওতাবাজি মানুষ আর নিচ্ছে না। ওঁরা নিজেরাই নিজেদের সম্মান নষ্ট করছে’! তাই স্বভাবতই নেটিজেনদের একাংশের রোষানলে পড়েছেন শ্রীলেখা। তাই এমন কুমন্তব্য ধেয়ে তার দিকে। যার যোগ্য জবাব তিনি দিয়েছেন।