খুব কম বয়সেই চলে গেলেন সিদ্ধার্থ শুক্লা (Sidharth Shukla)। তার মতো এমন একজন সুদর্শন, সর্বোপরি সর্বদা ফিটনেস ফ্রিক একজন অভিনেতার এত কম বয়সে মৃত্যু সহজে মেনে নিতে পারছেন না কেউই। অথচ তিনি সর্বদা জিম করতেন, শরীরের প্রতি বেশ যত্নবান ছিলেন। আবার একজন আন্তর্জাতিক স্তরের খেলোয়াড়ও ছিলেন তিনি। কিন্তু মৃত্যু হয়তো কোনকিছুরই পরোয়া করে না! তাই হয়তো এভাবে অকালেই নিয়তির কাছে হেরে গেলেন টেলিভিশনের সবথেকে স্মার্ট, হ্যান্ডসাম অভিনেতা।
পড়াশোনা শেষ করে তিনি বেশ কয়েক বছর একটি ইন্টেরিয়র ডিজাইনিং ফার্মে কাজ করেছেন। শুধু পড়াশোনা নয়, খেলাধুলার প্রতিও তার বেশ ছোট থেকেই বেশ আগ্রহ ছিল। খুব ভালো টেনিস এবং ফুটবল খেলতেন তিনি। এ সি মিলান আন্ডার ১৯ টিমে ইতালিয়ান ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
২০০৪ সাল থেকে মডেলিং করছেন সিদ্ধার্থ শুক্লা। ২০০৫ সালে তাকে প্রথম একটি গানের ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল। ওই বছরেই বিশ্বের সেরা মডেলিং প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছিল তুর্কিতে। সেই প্রতিযোগিতার বিজেতা ছিলেন তিনি। এই প্রতিযোগিতা জিতে নিয়ে বাজাজ অ্যাভেঞ্জার্স, আইসিআইসিআইসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের প্রচারের মুখ হিসেবে কাজের সুযোগ পান সিদ্ধার্থ।
এরপর ২০০৮ সালে প্রথম ধারাবাহিকে কাজের সুযোগ পান সিদ্ধার্থ। ‘বাবুল কা আঙ্গন ছুটে না’ ধারাবাহিক ছিল তার ডেবিউ ধারাবাহিক। তারপর থেকে তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথম ধারাবাহিকের পর ‘জানে পহচানে সে ইয়ে আজনবি’, ‘আহট’, ‘লাভ ইউ জিন্দেগি’, ‘সিআইডি’সহ একাধিক ধারাবাহিকে অভিনয় করেন তিনি। তবে ‘বালিকা বধূ’র ‘শিব’ এর চরিত্রটি তাকে সার্বিক জনপ্রিয়তা এনে দেয়। এই ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুবাদে একের পর এক পুরস্কার উঠেছিল তার ঝুলিতে।
নিজেই নাচের দক্ষতা সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য ‘ঝলক দিখলা যা’ রিয়েলিটি শো’য়ের মঞ্চেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। শুধু টেলিভিশনেই নয়, সিদ্ধার্থ শুক্লা বলিউডেরও একজন অত্যন্ত নামিদামি শিল্পী হয়ে উঠছিলেন। করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশন তিনটি ছবির জন্য মনোনীত করে তাকে। এর মধ্যে একটি ছিল ‘হাম্পটি শর্মা কি দুলহানিয়া’, যেখানে বরুণ ধাওয়ান এবং আলিয়া ভাটের বিপরীতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে তিনি অভিনয় করেছিলেন।
জীবনে দুইবার পুলিশের ঝঞ্ঝাটের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। ২০১৪ সালে মদ খেয়ে গাড়ি চালানোর জন্য কিছুদিনের জন্য তার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। তারপর ২০১৮ সালে তার গাড়ির ধাক্কায় একজন ব্যক্তি জখম হন। বলিউডের এমন হ্যান্ডসাম হাংকের একসঙ্গে বহু সুন্দরীর নাম জড়িয়েছে। রেশমি দেশাই, ধ্রাষ্টি ধামি, গহর খানের পর শেহনাজ গিলের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বলিউডের অভ্যন্তরে জোর গুঞ্জন শুরু হয়।
বিগবস সিজন ১৩এর মঞ্চে শেহনাজের সঙ্গে তার প্রথম আলাপ হয়। হাউজের দুই প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে যা হাউজের ভেতরেই প্রেম সম্পর্কে রূপান্তরিত হয়। এই দুই জুটির কেমিস্ট্রি কার্যত বিগবস ১৩ এর জনপ্রিয়তা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। বিগবসের ওই সিজনের বিজেতা হয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। তাদের সম্পর্ক পর্দার বাইরেও অটুট থেকেছে। শীঘ্রই বিয়ে করতেন তারা, তবে তার আগেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা।