পরম পুরুষ শিব আশুতোষ।তিনি ভক্তের অল্প নিবেদনেই সন্তুষ্ট হন। অতি প্রাচীন কাল থেকেই শিবলিঙ্গের পূজাকরে আসছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কয়েকটি বিশেষ বস্তু দিয়ে এই অর্ঘ্য দিয়ে এসেছে। সবার বিশ্বাস এই যে, এই বস্তুগুলি দিয়ে শিবলিঙ্গ পূজা করলে ভক্তের সকল মনস্কামনা পূর্ণ হবে। কী সেইগুলি দেখা যাক..
শিব পুজোর উপকরণ
বেলপাতা
বেলপাতা ত্রিফলক যুক্ত একটি পাতা ।পুরাণ মতে বেল পাতার পেছনের অংশে মা লক্ষ্মীর বাস। বেল পাতা তিন গুন স্বত্ব, তম, ও রজ গুণের ও ত্রিদেব এর প্রতীক। তাই বেলপাতা দেবাদিদেব শিবের অনেক প্রিয়। তাই শিবলিঙ্গ পূজায় অবশ্যই বেলপাতা লাগে।১১টি বেলপাতা দিয়ে তৈরি মালা শিবলিঙ্গে অর্পণ করলে অশুভ প্রভাব জীবন থেকে দূরে সরে যায় বলে বিশ্বাস রয়েছে।
ধুতুরা ফুল
ধুতুরা মহাদেব শিবের অত্যন্ত প্রিয় ফুল।বিবিধ পুরাণ অনুযায়ী শিবলিঙ্গ ধুতুরা ফুল দিয়ে পূজা করলে জীবনে সমৃদ্ধি আসে। এর ফলে জীবন অনেক সহজ হয় বলে ।ভগবান শিব থাকেন কৈলাশ পর্বতে। এই ঠান্ডা এলাকায় এমন ধরনের আহার ও ওষুধের প্রয়োজন হয় যা শরীরকে উষ্ণতা দেবে। ধুতুরা হলো সেই রকমই ওষুধ।
আকন্দ ফুল
আকন্দ ফুলের পাঁচটি খণ্ড থাকে যা শিবের পঞ্চানন রূপকে নির্দেশ করে। আকন্দের রং সাদা।সাদা রং সরলতার ,সহজতার প্রতীক।শিব আশুতোষ এবং তিনিও সহজ ও সরল।তাই আকন্দ ফুল শিবের অত্যন্ত প্রিয়।পুরাণ অনুযায়ী শিব পূজোয় একটি আকন্দ ফুল অর্পণ করার অর্থ হলো সোনা দান করার মতো ফল পাওয়া যাবে।
দুধ ও গঙ্গাজল
শিবলিঙ্গে দুধ প্রদান করার জন্য জন্য তামার পাত্রই ব্যবহার করা উচিত।শিব পূজার সময় অবশ্যই দেওয়া হয় লিঙ্গে দুধ ও গঙ্গাজল।শিবলিঙ্গে দুধ-গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানোর সময়ে তা লিঙ্গগায়ে ঘষে দেওয়ার বিধি অতি প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে। বিশ্বাস করা হয় যে, এর ফলে জীবন সুখের হয়।
জাফরান
জাফরান খুবই মূল্যবান ।যদিও সবার জাফরান দিয়ে শিব পূজা করার সামর্থ্য থাকে না।তবুও বিবাহিত জীবন সুখ সম্পন্ন করতে শিবলিঙ্গে জাফরান অর্পণ করার বিধি আছে।এর দ্বারা বিবাহিত জীবনের সকল বাধা বিপত্তি বাধাও দূর হয়।
তিল
শিবলিঙ্গে তিল প্রদানের করে অনেকেই শনির সাড়ে সাতি দশা কাটায়।এই রীতিও বহু প্রাচীন।
দূর্বা ঘাস
শিবলিঙ্গে দুর্বাঘাস প্রদান করলে নীরোগ জীবন লাভ হয় বলে বিশ্বাস। তাই সকলেই শিবলিঙ্গ পূজায় দূর্বা ঘাস ব্যবহার করে।
আতব চাল
আতব নির্দেশ করে ধন , সম্পদ প্রতিপত্তিকে।আর্থিক সমৃদ্ধিকে অব্যাহত রাখতে শিবলিঙ্গে চাল প্রদান করাও প্রাচীন রীতি।
কর্পূর
কর্পূরের সুগন্ধ ভগবান শিবের সবথেকে প্রিয়। এই গন্ধ পরিবেশকে পবিত্র ও শুদ্ধ করে। কর্পূর দিয়ে পূজো করলে ভগবান শিব প্রসন্ন হন।
গাঁজা
শিব বেশিরভাগ সময় একমনে একচিন্তে ধ্যানমগ্ন থাকেন। গাঁজা যদিও নেশার বস্তু তবুও ধ্যান করতে সাহায্য করে। সঠিক মাত্রায় গাঁজা খেলে শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে।