সরস্বতী পুজোর (Saraswati Puja) আগে কুল (Jujube Fruit) খায় না অনেকেই। মনে করা হয় তার প্রভাব পড়বে নাকি পরীক্ষার ফলে! তাই পরীক্ষায় যাতে ফেল করতে না হয়, সে কারণে সরস্বতী পুজোর আগে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীই কুল খায় না। কিন্তু কেন এই নিয়ম? কুল খাওয়ার সঙ্গে পরীক্ষায় পাশ-ফেলের আদৌ কি কোনও সম্পর্ক আছে?
সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেতে নেই, এটা ঠিক। সরস্বতী পুজোর আগে একদম কুল খেতে নেই, নইলে বাদদেবী রাগ করবেন। আর উনি রাগলে, পরীক্ষায় নাম্বার কমে যাবে। আর তার পিছনে কারণও রয়েছে। তবে, বিদ্যেদেবী রাগেন, এটা কিন্তু ঠিক নয়।
সরস্বতী পুজোর আগে কুল না খাওয়ার নিয়ম বাংলার একান্ত নিজস্ব বলা চলে। যুগ সরস্বতীর পুজোর প্রসাদে অপরিহার্য অঙ্গ হল কুল। তাই সেটাও দেবতাকে অর্পণ করার আগে না খাওয়াই রীতি। যুগ ধরে এমন মনখারাপ করা রীতির কথাই আমরা শুনে আসছি অভিভাবকদের কাছ থেকে। খারাপ ফলাফলের ভয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই সেই গতানুগতিক নিয়ম মেনে চলতে বাধ্যও হয় পড়ুয়ারা।
সরস্বতী পুজোর কথা বললে, একটা ফলের কথা চলেই আসে। আর সেটা হলো কুল। কুল খেতে ভালোবাসে না, এমন ছেলেপুলে আছে নাকি! শীতের মরশুমে কুল ব্যপক হারে ফলতে শুরু করে। সেইসঙ্গে এই বসন্তপঞ্চমীর সময়েই কুল পরিপুষ্টভাবে পাকতে শুরু করে। তার আগে কাঁচা কুল খেলে পেট খারাপের সম্ভাবনা থাকে। তাই কুল পেড়ে খাওয়া আটকাতেই মা সরস্বতীর শরণাপন্ন হন বাবা-মা।
আর ছোটোরা তো বায়নাতে ওস্তাদ। তো কি করা যায়, বড়রা বাগদেবী রেগে গিয়ে পরীক্ষায় নাম্বার কমিয়ে দেবেন, এই ভয় দেখালে, একবাক্যে মেনে নেবে। আর স্কুলে ওই সময়টাতেই পরীক্ষা পড়ে। কুল খাওয়ার লোভে বেশি বেশি খেয়ে ফেললে, যাতে অকারণে পেটের রোগে কাবু না হয়ে পড়ে পরীক্ষার আগে আগে, তাই বড়রা আপত্তি করেন ছেলে-মেয়েদের।
আরও পড়ুন ঃ সরস্বতীর বাহন তো হাঁস কিন্তু কিছু ছবিতে ময়ূর থাকে কেন?
বহুদিন থেকে এই রীতি চলে আসছে। বড়রা অনেক সময় না জেনেও, এই নিয়মের ভয়টা ছোটোদের মধ্যে অজান্তেই বপন করেন দেন। আর এভাবেই এই সরস্বতীর পুজোর দিন থেকেই কুল খাওয়া শুরুর প্রথা চলে আসছে। পরীক্ষার ভয় দেখিয়েই কুল খাওয়া আটকাতেই প্রথা চালু হয়েছিল কোনও এক স্মরণাতীত কাল থেকে। আজও ছাত্রছাত্রীরা সেই ধ্যান-ধারণাই বহন করছে।