চরিত্রের প্রয়োজনে বলিউড (Bollywood) অভিনেতাদের অনেক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ নিতে হয়। একজন প্রকৃত অভিনেতা চরিত্রের সঙ্গে এতটাই একাত্ম হয়ে পড়েন যে তাকে সেই চরিত্র থেকে যেন আলাদা করে ভাবাই যায় না। ঠিক এমনই দুজন মানুষ হলেন সেইফ আলি খান (Saif Ali Khan) এবং তার প্রথম স্ত্রী অমৃতা সিং (Amrita Singh)। নেগেটিভ হলে তারা এত ভালো অভিনয় করতেন, যে তাদের কন্যা সারা আলি খান (Sara Ali Khan) ছোটবেলায় পর্দার সেই চরিত্রকেই বাস্তব বলে ভাবতেন।
একসময় বলিউডের পাওয়ার কাপল হিসেবে পরিচয় পেয়েছিলেন সেইফ-অমৃতা। তাদের প্রেম, বিয়ে নিয়ে চর্চা কিছু কম হয়নি। অভিনয়েও তারা তুখর। একসময় বলিউডে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন অমৃতা। তবে জানলে হয়তো অবাক হবেন, তাদের কন্যা সারা আলি খান ছোটবেলায় বাবা-মাকে নিতান্তই নিচু চোখে দেখতেন। তিনি মনে করতেন তার বাবা এবং মা দুজনেই খারাপ মানুষ। এর নেপথ্যে ছিল ‘ওমকারা’ এবং ‘কলিযুগ’ নামের দুটি ছবি। এই ছবি দুটিতে অভিনয় করেছিলেন সেইফ আলি খান এবং অমৃতা সিং।
ওমকারাতে সাইফ আলী খান ‘ল্যাংড়া ত্যাগী’র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। যে চরিত্রের জন্য তাকে বাজে ভাষায় কথা বলতে হতো। অন্য দিকে ‘কলিযুগ’ ছবিতে অমৃতা সিমি রায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যিনি ছিলেন একজন পর্ন সাইটের মালিক। নিজের ছোটবেলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে সারা বলেন, “ওমকারা (২০০৬) এবং কলিযুগ (২০০৫) দেখার পর আমি সত্যিই বিরক্ত হয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল আমার বাবা-মা এত খারাপ মানুষ! আমি ভাবতাম আমার বাবা খারাপ ভাষা ব্যবহার করেন। আর আমার মা এমন একজন যিনি একটি পর্ণ সাইট চালান”।
প্রসঙ্গত ‘ওমকারা’ এবং ‘কলিযুগ’ এর এই দুটি নেগেটিভ রোল একই বছরে সেইফ আলি খান এবং অমৃতা সিংকে সেরা অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছিল। সেইফ-অমৃতার মেয়ে সারা আলি খান আজ নিজেও একজন অভিনেত্রী। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বলিউডে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। ছোটবেলায় বাবা-মাকে খারাপ ভাবলেও আজ বাবা-মাঅন্ত প্রাণ মেয়ে। ‘মাম্মাস গার্ল’ সারা বাবার থেকে দূরে থাকলেও বাবার মনের অত্যন্ত কাছের তিনি।
১৯৯১ সালে বিয়ে হয় সইফ আলি খান এবং অমৃতা সিংহের। এক সময়ের তুমুল প্রেম গড়ায় প্রবল তিক্ততায়। অবশেষে ২০০৪ সালে বিচ্ছেদ। সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই কঠিন সময় নিয়ে মুখ খুললেন মেয়ে সারা আলি খান। অভিনেত্রীর মতে, তাঁর মা-বাবা একসঙ্গে সুখে ছিলেন না। আলাদা হয়ে যাওয়ার পর বরং শান্তিতে কাটছে দু’জনের। সারার কথায়, ‘‘একই বাড়িতে দু’জন মানুষের সঙ্গে থাকা, যাঁরা একসঙ্গে সুখে নেই। তার পরে তাঁদের বাড়ি আলাদা হয়ে গেল, দু’জনেই নতুন করে হাসতে শুরু করলেন। তা হলে সেই দু’জন মানুষকে একসঙ্গে থাকতে বলব কেন?’’ মা-কে ১০ বছর হাসতে দেখেননি সারা। কিন্তু সইফের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পরে অমৃতা অনেক বেশি প্রাণোচ্ছ্বল। এমনই বলছেন অভিনেত্রী-কন্যা।
২০০৪ সালের পর থেকে মেয়ে সারা এবং ছেলে ইব্রাহিমের সঙ্গে আলাদা বাড়িতে থাকেন অমৃতা। অমৃতা এখন ছেলেমেয়ের সঙ্গে হেসেখেলে সময় কাটান। সইফের সঙ্গে থাকাকালীন এই অমৃতাই যেন হাসতে ভুলে গিয়েছিলেন! সইফ আলি খানের সঙ্গে অমৃতার যখন বিচ্ছেদ হয়, সারার বয়স তখন মাত্র ৯। এর পর মায়ের কাছে থেকে, তাঁর আদর্শেই ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠেন অভিনেত্রী। তাই অমৃতাকে ঘিরেই আবর্তিত সারার জীবন।