ভারতে কত দিনের লকডাউন জরুরি, কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

প্রথম দফার ২১ দিনের লকডাউনে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন ভারতবাসী। ১৪ই এপ্রিল প্রথম দফার লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩রা মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ান। তবে ৩রা মে লকডাউন আদেও উঠবে কিনা তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে দ্বন্দ শুরু হয়েছে। অনেকে বলছেন, দীর্ঘদিনের লকডাউনে সাধারন মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে ফলে ৩রা মে এর পর লকডাউন উঠে গেলেই ভালো। আবার অনেকে নরেন্দ্র মোদীর ভাষায় বলছেন, জান হ্যায় তো জাহান হ্যায়।

এদিকে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ তৈরী হয়েছে। ৩রা মে লকডাউন তোলা আদেও ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত সরকার। এই পরিস্থিতিতে লকডাউনের বিষয় নিয়ে কি করা উচিৎ তা নিয়ে নিজের মতামত দিলেন বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যান্সেটের প্রধান সম্পাদক রিচার্ড হরটন।

রিচার্ড হরটন সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বলেন, করোনা পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলা করতে হলে এখনই লকডাউন তুললে চলবে না। লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতে হবে। হরটন বলেন, কোনো মহামারী চিরজীবন থেকে যায় না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করতে হবে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের জন্য সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আরও পড়ুন :- কবে বিদায় নেবে করোনা জানিয়ে দিল ভবিষ্যৎবাণী করা কিশোর

সঠিক পথে চলে মহামারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেই দেশ করোনামুক্ত হবে। তাই এই মুহূর্তে দেশকে করোনা মুক্ত করতে অন্তত ১০ সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন। লকডাউনের মাধ্যমে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রনে আসবে। তবে লকডাউন উঠে গেলেই যে পরিস্থিতি একেবারে আগের মতো হয়ে যাবে তা ভাবা ভুল। মানুষ লকডাউনের পরেও কিছু বিধি নিষেধ না মেনে চললে পরিস্থিতি আবারও খারাপ হতে পারে। তাই লকডাউন পরবর্তী সময়েও মাস্ক পড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্য সম্মত নির্দেশ মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন :- রেড জোনে কলকাতা, নামলো সশস্ত্র পুলিশ, সিল করা হলো এইসব এলাকা

রিচার্ড হরটন আরও বলেন, হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে লকডাউন তুলে ফেলা ঠিক হবে না। তাড়াহুড়ো করে লকডাউন তুলে দিলে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হবে ফলে পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যাবে। দ্বিতীয় বার যদি করোনা আবার ফিরে আসে তাহলে মৃত্যুমিছিল অবধারিত। রিচার্ড বলেন, ভারতবাসী ইতিমধ্যেই বহু সময় ব্যয় করে লকডাউন সফল করেছেন এমনকি এই আর কিছু দিন ধৈর্য না ধরলে এই কদিনের লকডাউন বিফলে যাবে। তিনি বলেন, লকডাউনকে হাতিয়ার করেই চিন দেশকে করোনা প্রভাব থেকে মুক্ত করেছে। তাই লকডাউনই একমাত্র হাতিয়ার। লকডাউনের জেরে ভারতের আর্থিক পরিস্থিতির কথাও মাথায় রেখেই আরও কটা দিন ভারতবাসীকে লকডাউন মেনে চলার অনুরোধ করেছেন রিচার্ড।

আরও পড়ুন :- লকডাউনে বেড়ে গেল ছাড়ের তালিকা, কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা

রিচার্ড হরটনকে, ১০ সপ্তাহ পরে যে ভাইরাস আবারও সক্রিয় হয়ে যাবে না সেই নিশ্চয়তা রয়েছে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ১০ সপ্তাহ লকডাউন চলছে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারবে না। ১০ সপ্তাহ পর সংক্রমনের সংখ্যা খুব কমই থাকবে। কিন্তু তাও টেস্টিং এবং কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং এর মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতির উপর নজরদারি রাখা জরুরি,।