ভারতে সংক্রমিত করোনা ভাইরাস অন্য দেশের তুলনায় দুর্বল, গবেষণায় নতুন তথ্য

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে নিজের দাপট দেখানোর পর বর্তমানে ভারতবর্ষে রীতিমত ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে কোরোনা ভাইরাস। দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে দেশে কোরোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ১৮ হাজারের কাছাকাছি। প্রতিষেধক তৈরির কাজ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতন ভারতেও চলছে পুরো দমে। সেই উদ্দেশ্যেই চলছে অক্লান্ত গবেষণা।গবেষণার মাধ্যমেই এও ভাইরাসের বিষয় নানান প্রকার তথ্য উঠে আসে। এবার সম্প্রতি আরও একটি তথ্য উঠে এসেছে। দেখা যাক কোন দিকে ইঙ্গিত করছে গবেষণা।

দেশের সবথেকে বেশি সংক্রমিত রাজ্যগুলি থেকে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করেন সিএসআইআর বিজ্ঞানীরা। মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, দিল্লি, তামিলনাড়ুতে সংক্রমিকতদের শরীর থেকে নমুনা নিয়ে ভাইরাসের স্ট্রেন দেখেই চমকে উঠেছেন তাঁরা। সেই নমুনা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা করোনা ভাইরাসের জিনের গঠন বিন্যাস বিশ্লেষণ করেন। এতে তাঁদের নজরে পড়ে যে ভারতে সংক্রমণকারী মারণ ভাইরাসের গঠন অত্যন্ত দুর্বল।

সোমবার সেলুলার ফর মলিক্যুলার বায়োলজি অফ দ্য কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে একটি টুইট করে জানানো হয় যে ভারতে ভারতে যে ভাইরাসটির সংক্রমন ছড়াচ্ছে তা পৃথক গোষ্ঠীর ভাইরাস। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এই ভাইরাসই সংক্রমন ছড়াচ্ছে দেশে।এই প্রজাতিতে ৪১ শতাংশ সারস-কোভ ২ জিনোম যেমন রয়েছে তেমনই ৩.৫ শতাংশ বিশ্বের অন্য কোনও জিনোম কাঠামোও দেখা যাচ্ছে।

অন্যান্য দেশগুলির থেকে ভারতে প্রভাব ফেলা এই গোষ্ঠীর ভাইরাস গুলি কম বিপদজনক। ভারতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করে জানা যায় এই ভাইরাসে ক্ল্যাড আই/এথ্রি আই ( জিনোম কাঠামোর একটি অংশ) নামে এই বৈশিষ্ট্য আছে ৪৩ শতাংশ। বিশ্বের ৩.৫ শতাংশ জিনোম কাঠামোতে এই বৈশিষ্ট দেখা যায়।

ক্ল্যাড কি?
ক্ল্যাড মূলত একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রজাতি থেকে সৃষ্টি হোমোলোগাস প্রকৃতির ভাইরাস। তবে সাধারণ ভাবে বলতো গেলে বলা যায় এটি ভাইরাসের অপর একটি স্ট্রেন। গবেষকদের মতে ৬৪ টি জিনোম কাঠামো তারা বের করতে সক্ষম হয়েছে যার সাথে Clade I/A3i বৈশিষ্ট্যটি যুক্ত আছে।

ভারতে এই ভাইরাসের ধরন কেমন?
ভারতে মোট তিন প্রকার গোষ্ঠীর ভাইরাস এসেছে যাদের বৈশিষ্টের মধ্যে কিছু পার্থক্য দেখা গেছে। এই তিন প্রকার ভাইরাস এসেছে চিন থেকে, আমেরিকা থেকে এবং ইউরোপ থেকে। আইসিএমআর জানায় ভারতে এসে ফের চরিত্রের বদল ঘটিয়েছে এই ভাইরাস।তারা আরও জানান যে ভাইরাসের বৈশিষ্ট বিশ্লেষন করে তারা জানতে পারেন এই তিন প্রকার ভাইরাসের উৎপত্তি একই প্রজাতির থেকে এবং এই প্রজাতিই ভারতে প্রথম সংক্রমন ছড়িয়েছে।তবে জিনোম কাঠামোর ওই বিশেষ বৈশিষ্টের ফলে এই ভাইরাসের দাপট অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে কম।