গায়ের রং নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন রেখা! কোটি টাকা খরচ করে আজ রূপবতী রেখা

সেরা বলিউড (Bollywood) সুন্দরীদের তালিকায় তার নাম থাকবে সবার আগে। তার ‘আঁখো কি মস্তি’তে পাগল সকলে। তিনি বলিউড সুন্দরী রেখা (Rekha)। এই সুন্দরী রূপে গুণে তার সমকালীন সময়ের তো বটেই, তার পরবর্তী প্রজন্মের বলি তারকাদেরও অনায়াসে টেক্কা দিতে পারেন। সৌন্দর্য্য, নাচ, নাচের অভিব্যক্তি, চোখের ভাষা, ৬৬তেও নট আউট রেখা। চির নবীনা সুন্দরীর তকমা পেয়েছেন তিনি।

আজ খুব বেশি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় না তাকে। তবে বিভিন্ন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি অনুষ্ঠান মঞ্চকে আলোকিত করে তোলে। আজও আট থেকে আশি রেখাকে এক ঝলক দেখার জন্য চাতকের মত অপেক্ষা করে থাকেন পর্দার এপারে। তবে একটা সময় ছিল যখন কিন্তু রেখাকে তার চেহারা নিয়ে বেজায় কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তখন তার বয়স ছিল কম। শরীর আজকের মত এত ছিপছিপে ছিল না। চেহারাতেও ছিল না এত গ্ল্যামার।

রেখার সাফল্যের পেছনের কঠিন ইতিহাস জানেন না অনেকেই। কত অপমান বুকে জমিয়ে রেখে তিনি ভানুরেখা গণেশন থেকে বলিউড সুন্দরী রেখা হয়ে উঠতে পেরেছেন, তা অনেকেরই অজানা। রেখা আদতে ছিলেন একজন তামিল অভিনেত্রী। তার বাবা জেমিনি গণেশন এবং মা পুষ্পাবালি তামিল ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা এবং অভিনেত্রী ছিলেন। তাদের কন্যা ভানুরেখা অত্যন্ত কম বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে তেলেগু ছবিতে ডেবিউ করেছিলেন।

দক্ষিণ ভারতেই বড় হয়ে উঠেছেন রেখা। তামিল ইন্ডাস্ট্রির নায়িকা খুব ভালো করে হিন্দি বলতেও পারতেন না। কৈশোরে তিনি ছিলেন বেশ মোটা এবং তার গায়ের রঙ ছিল কালো। সে কারণে তাকে অনেক অপমান হজম করতে হয়েছে। কালো-মোটা রেখাকে সকলে ‘কালো হাঁস’ বলে কটাক্ষ করতো! তবে এই অপমানিকেই নিজের শক্তি হিসেবে ব্যবহার করেছেন রেখা। যারা একসময় তার চেহারা নিয়ে তাকে কটাক্ষ করেন, পরবর্তী দিনে তারাই তার চেহারা দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে যান।

চেহারার জন্য রাত দিন কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হতে রেখা নিজেকে আরও বেশি সুন্দরী করে তোলার সংকল্প নেন। রেখার সৌন্দর্যের রহস্য কী? এই প্রশ্ন তার সমকালীন সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মহিলাদের ভাবিয়েছে। এই রেখা যখন সিনেমায় আসেন, তখন প্রোডিউসাররাই বলেছিলেন- “এই আফ্রিকান সুন্দরী কীভাবে নায়িকা হবে?”

ক্যারিয়ারের শুরুতে রেখার রঙ কৃষ্ণবর্ণ থাকলেও ক্রমশ তা ফর্সা হতে শুরু করে। এবং বর্তমানে রেখার গায়ের রং তো আপনাদে সামনেই। কালো থেকে এখন উজ্জ্বল শ্যামলা বলে চালিয়ে দেয়া যায় তাঁকে। পুরুষ হৃদয়ে হিল্লোল তোলা এই অভিনেত্রী এভারগ্রিন। তাঁর ক্যারিশ্মায় মুগ্ধ আট থেকে আশি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দরের খবর, ফর্সা হওয়ার অমোঘ আকর্ষণ নাকি উপেক্ষা করতে পারেননি তিনিও!

শরীরচর্চা এবং রূপচর্চাকে হাতিয়ার করেই নিজের গ্ল্যামার বাড়িয়েছেন রেখা। জাঙ্ক ফুড, চকলেট একেবারেই বাদ দিয়ে দেন তিনি। দীর্ঘদিন অনাহারে থেকে নিজেকে ভেঙে চুরে নতুনভাবে গড়ে তুলেছেন রেখা। মোটা থেকে ছিপছিপে চেহারা আনার জন্য দিনের পর দিন কেবল এলাচ আর দুধ খেয়ে থেকেছেন। চেহারাতে বদল আনার জন্য তার সময় লেগেছিল মাত্র আড়াই বছর। মাত্র আড়াই বছরের পরিশ্রমেই নিজের চেহারাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন রেখা।