টলিউডেও সিন্ডিকেট রাজ, বন্ধ হয়ে গেল প্রতীক-সোনামণির ছবির শুটিং, ক্ষোভ উগড়ে দিলেন প্রযোজক

রানা সরকার (Rana Sarkar), এই নামটার সঙ্গে বিনোদনের দুনিয়ার সংযোগের কথা আজ প্রায় সকলেরই জানা। তিনি একজন নামী প্রযোজক। সেই সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির হাল হকিকত সম্পর্কে বারবার তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে মুখ খোলার সাহস রাখেন। তার নিশানা থেকে বাদ পড়েননি খোদ ইন্ডাস্ট্রি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ও। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির শ্মশানদশায় প্রসেনজিৎকে ‘ডোম’ বলার সাহস দেখিয়েছেন তিনি।

একবার নয় বারবার ইন্ডাস্টির আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন রানা সরকার। মুখ খুলেছেন লন্ডনে মানুষ পাচারকারী, পাইরেসি, মুভি মাফিয়া টলিউড প্রযোজকদের বিরুদ্ধেও। এবার তিনি নাকি সিন্ডিকেট রাজের শিকার। টলিউডের আভ্যন্তরীণ সিন্ডিকেট রাজ, গুন্ডাগিরি, হুমকি ফোনের চাপের মুখে পড়ে এবার তাকে তার ছবির কাজ বন্ধ রাখতে হল।

প্রতীক সেন ও সোনামণি সাহাকে নিয়ে পরবর্তী ছবি বানাচ্ছিলেন রানা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন টলিউডের ভেন্ডর সাপ্লায়ার্সদের সদস্যদের হুমকির মুখে পড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিনি ‘বেহায়া’ ছবির শুটিং বন্ধ রাখলেন। এই সময় ডিজিটালকে তিনি জানিয়েছেন সাপ্লায়ার্স এবং ভেন্ডার গিল্ডের একটা অংশ তার বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। এমনকি তার সেটে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

সেটে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর পরেই তিনি শুটিং বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। প্রযোজকের কথায়, “আমরা তো ছবি তৈরি করে আখেরে ক্ষতির সম্মুখীন হই। কোনও ছবিই তো চলে না। একটা ছবি না হলে কী ক্ষতি হবে? দরকারে ছবি হবে না!” তিনি আরও বলেছেন, “আমি আগে এক কোম্পানিতে কাজ করতাম। যেখানে মেগা সিরিয়ালের প্রোডাকশন হতো। সেখানে একটি গন্ডগোল হয়েছিল। সেই কোম্পানিতে আমি এখন আর নেই। আমি শুধু সিনেমা বানাচ্ছি। টেলিভিশনের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তাও ধরুন কেউ আমার কাছে টাকা পায়। তাহলে সে আমার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশে পুলিশ-প্রশাসন আছে। আইন আছে। আমার বিরুদ্ধে আদালতে যাক। কিন্তু, সেটা হচ্ছে না। বরং আমার শ্যুটিংয়ের ভেন্ডার, সাপ্লায়ারদের ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার সঙ্গে কাজ করলে ইকুইপমেন্ট, স্লাইড ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে।” ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে হুমকি ফোনের অডিও ফাঁস করেছেন প্রযোজক।

এই সময় ডিজিটালের কাছে তিনি মন্তব্য করেন, “আমরা এতগুলো লোক নিয়ে শ্যুট করব, সেক্ষেত্রে যদি কোনও বিপদ হয় তাহলে কে দেখবে? অভিনেতা সহ সেটের সকলেই তো শিল্পী। সেটে সকলেরই একটা থট প্রসেস থাকে। মেশিনের মতো কাজ করা যায় না। ফলে ঝুঁকি নিয়ে শ্যুটিং করলে কেউ নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে পারেন। কারও মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে।”

রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেছেন, “তাছাড়া যদি সত্যিই কেউ চড়াও হয় এবং একটা ক্যামেরার লাইট ভাঙে, তাহলে তো লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হবে। এই ঝুঁকি কেন নেব? তাই ছবি বন্ধ করে দিয়েছি। আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হলে শ্যুটিং শুরু হবে। নয়ত বাইরে গিয়ে শ্যুটিং করব। দরকার হলে এখানে আর বিনিয়োগ করব না।”