বাংলার ‘আনন্দমঠ’ বানাচ্ছে দক্ষিণ, বাংলা কেন পারছে না, মুখ খুললেন প্রযোজক

ইদানিং হিন্দি, বাংলা, তেলেগু, তামিল সহ অন্যান্য ভাষার ইন্ডাস্ট্রিতেও শুধু একটাই খবর ঘুরছে, বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘আনন্দমঠ’ (Anandamath) নিয়ে ছবি বানাতে চলেছে দক্ষিণী সিনে দুনিয়া। এই খবর বাঙালিদের জন্য নিঃসন্দেহে গর্বের, তবে একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে যে কেন এখনকার কোনও বাঙালি প্রযোজক কিংবা পরিচালক এই ভাবনাটা ভাবতে পারলেন না?

উল্লেখ্য ‘আনন্দমঠ’ নিয়ে ছবি কিন্তু এর আগে বাংলা এবং বলিউডে হয়েছে। ১৯৫২ সালে মুক্তি পেয়েছিল সেই ছবি। তবে তারপর এত বছর পেরিয়ে গেল, বাংলা কিংবা হিন্দি ইন্ডাস্ট্রিকে টপকে এবার প্যান ইন্ডিয়া আনন্দমঠ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ছবি ১৭৭০ মুক্তি পেতে চলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির দিকে যখন আঙ্গুল তুলছেন খোদ বাঙালিরাই তখন মুখ খুললেন প্রযোজক রানা সরকার (Rana Sarkar)।

ইদানিং সারা ভারতবর্ষ জুড়ে সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির রমরমা চলছে। হিন্দি, বাংলা ছবি ছেড়ে বাঙালিরাও ইদানিং দক্ষিণী ছবির দিকে ঝুঁকেছেন। ‘১৭৭০’ মুক্তি পেলে তা বাংলাতেও ডাবিং হবে। রানা সরকারের প্রশ্ন বাংলাতে যদি এরকম সিনেমা কেউ তৈরিও করেন তাহলে এমন কোন অভিনেতা রয়েছেন এই বাংলায় যাকে নিয়ে সিনেমা বানালে সারা দেশের দর্শক দেখতে আসবেন?

রীতিমত চাঁচাছোলা ভাষাতে তিনি প্রশ্ন করেছেন, “দক্ষিণে প্রভাস আছে, আল্লু অর্জুন আছে, রামচরণ আরও দশ জন নায়ক আছে যাদের ডাবিং ছবি দেখার জন্যও সারা দেশের দর্শক এখন অপেক্ষা করে… বাংলায় কে আছে এমন যাকে সারা দেশের দর্শক দেখতে চায়? নাম বলুন আর… ভাবুন ভাবা প্র্যাকটিস করুন।”

প্রযোজকের এই প্রশ্নের সঙ্গে সহমত অনেকেই, আবার অনেকেই তার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। কেউ বলছেন যীশুকে দিয়ে আনন্দমঠ না হলেও এরকম কোনও অ্যাকশন সিনেমা তৈরি করা যেত। কারণ তিনি এখন সাউথে অভিনয় করছেন। আবার কেউ উল্টে কটাক্ষ করে লিখলেন, “আরে দাদা আগে নিজেরা নিজেদের দর্শকদের জন্য এমন ভাবুন তবে অন্যের ফাঁক ধরবেন। আপনাদের হাতে তো এত এত ‘মহানায়করা’ আছে তাদের দর্শক নেই?”

কেউ বলছেন সাউথ ইন্ডিয়ানরা প্যান ইন্ডিয়া একদিনে সুপারস্টার হয়ে যাননি। যীশু সেনগুপ্ত যেমন বাংলার পাশাপাশি দক্ষিণের ছবিতেও কাজ করছেন, তেমন দেব, জিৎদের নিয়ে সঙ্গে একজন দক্ষিণের ভাল তারকাকে নিয়ে ছবি বানালে নিশ্চয়ই গোটা দেশ দেখবে। কেউ মনে করিয়ে দিচ্ছেন অ্যামাজন অভিযানের কথা, যা ডাবিং হয়েছিল।

নেটিজেনদের রায়, “আপনারা আগের মত আর চলচ্চিত্র বানান না। অঞ্জন চৌধুরীর মত সিনেমা তৈরি করুন। আর সনাতন ধর্মকে কটুক্তিমূলক সিনেমা বানাবেন না নইলে বলিউডের মত অবস্থা টলিউডেও হবে।” নেটিজেনদের প্রশ্ন, “বাংলার বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ তৈরি হবে দক্ষিণী মুভিতে, তাহলে আপনারা কি করছেন?”