অভাবে স্বভাব নষ্ট! বাস কন্ডাকটর বাবার ছেলে পর্ন ভিডিও করেই আজ কোটিপতি

পর্নকাণ্ডে (Pornography) গুরুতর ভাবে ফেঁসে গিয়েছেন বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টির (Shilpa Shetty) স্বামী রাজ কুন্দ্রা (Raj Kundra)। যে রাজ কুন্দ্রা নামকরা এক ব্যবসায়ী, বিলাসবহুল বাড়ির বাসিন্দা, বলিউডের সুন্দরী অভিনেত্রী স্ত্রী, স্বপ্নের মতো জীবনের অধিকারী, সেই রাজ কুন্দ্রার ছোটবেলা কিন্তু কেটেছে অভাব অনটনে। শৈশবের সেই অভাবের দিনগুলোর জন্যই কি আজ এই হাল রাজের? দ্রুত বড়লোক হওয়ার জন্যই কি পর্ন ছবি তৈরির ব্যবসায় পা রাখা?

তবে রাজকে নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। ইতিপূর্বে বহুবার আর্থিক তছরুপ কান্ডে নাম জড়িয়েছে রাজের। কখনও আইপিএলে ম্যাচ গড়াপেটা কান্ডে, কখনও বা আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে, কখনও আবার ভুয়ো কোম্পানি খুলে সাধারণ মানুষকে প্রতারনা করা দায়ে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরের অফিসে চক্কর কাটতে হয়েছে তাকে। অতি দ্রুত ধনী হওয়ার লোভেই কি বারংবার বিতর্কে জড়িয়েছেন রাজ কুন্দ্রা? প্রশ্ন উঠছে তার ব্যক্তিগত জীবনকে কেন্দ্র করে।

আজ প্রায় কয়েক শো’ কোটি টাকার মালিক মুম্বাইয়ের এই প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ভারতের বাইরে বিদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে তার ব্যবসা। অথচ একটা সময় ছিল যখন নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সংসার ছিল রাজের। তার বাবা ছিলেন ইংল্যান্ডের একজন বাস কন্ডাক্টার। মা সেখানেই একটি ফ্যাক্টরিতে সামান্য বেতনে চাকরি করতেন। দারিদ্র্যকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন রাজ। তাই খুব ছোট থেকেই তার মনে গেঁথে গিয়েছিল, বড় হয়ে তাকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে হবে। জীবন যাত্রার মান বদলাতে হবে।

একবার একটি সাক্ষাৎকারে রাজ নিজের মুখে স্বীকার করেছিলেন, “আমি দারিদ্রকে এত বেশি ঘৃণা করেছি যে আমি বড়লোক হতে চেয়েছি। আমি আমার জীবনে বদল এনেছি।” তিনি জানিয়েছিলেন, “১৮ বছর বয়সে কলেজ ছাড়ার পর আমি নিজেকে তৈরি করেছি। এখন আমি বেপরোয়া ভাবে খরচ করি। সে বিষয়ে শিল্পা কিছু বললে, আমি ওকে বলি আমার উপার্জন করা টাকা খরচ করতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।”

নীল ছবির মামলায় রাজের গ্রেফতারির পর রাজ এবং তার সহকারীর ফাঁস হয়ে যাওয়া হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে উঠে এসেছে যে লাভের খতিয়ান সেখান থেকে জানা যাচ্ছে ‘হট শুট’ অ্যাপ্লিকেশনে এই ছবির ব্যবসা করে প্রথম প্রথম ২-৩ লক্ষ টাকা দৈনিক আয় করেছেন রাজ। পরবর্তী দিনের সেই লাভের অঙ্কটাই বেড়ে দাঁড়ায় ৬-৮ লক্ষ টাকায়! রাজের সম্পর্কে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে পুলিশের তদন্তে। যে তথ্য জেনে কার্যত নেটিজেনের চক্ষু চড়কগাছ।

উল্লেখ্য, গত ১৯শে জুলাই বড়দের ছবি তৈরি এবং সোশ্যাল মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বাই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন রাজ কুন্দ্রা। আদালতের নির্দেশে আগামী ২৩শে জুলাই পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতেই থাকবেন তিনি। রাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই বলিউডের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি পর্ব। পুনম পান্ডে, শার্লিন চোপড়া, সাগরিকা সোনা সুমনরা সরাসরি রাজের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন।

পুনমের অভিযোগ, তার অনুমতি ছাড়াই তার নগ্ন ছবি সোশ্যাল মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন রাজ। সাগরিকা অভিযোগ করেন, রাজের ওয়েব সিরিজে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে নগ্ন হয়ে অডিশন দেওয়ার কথা বলা হয় তাকে। জনপ্রিয় ইউটিউবার পুনীত কাউরও অভিযোগ করেছেন, নীল ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাজ তাকে লোভ দেখিয়েছিলেন। এছাড়াও পুলিশের তদন্তে জানা গিয়েছে, ‘হটশটস’ নামের একটি অ্যাপ্লিকেশন মারফত বিদেশের বাজারে নীল ছবির ব্যবসা শুরু করেছিলেন রাজ এবং তার সহকারীরা।

এই ব্যবসায় ভালো সাফল্য পাওয়ার পর ভবিষ্যতে আরও একটি অ্যাপ্লিকেশন লঞ্চ করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। এছাড়া ছোট ছোট প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমেও ভিডিও বানিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। সবকিছু গোপন রাখার জন্য পুলিশকে ২৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে রাজের বিরুদ্ধে।