সদ্য দীর্ঘদিনের বান্ধবীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন বলিউড (Bollywood) অভিনেতা রাজকুমার রাও (Rajkumar Rao)। বলিউডের এই ভার্সেটাইল অভিনেতার প্রেম কাহিনীও যথেষ্ট চিত্তাকর্ষক। দীর্ঘ ১০ বছরের সম্পর্ক পেল পরিণতি। পত্রলেখা পালকেই (Patralekha Paul) নিজের জীবনসঙ্গীনী হিসেবে গ্রহণ করে নিলেন রাজকুমার। আর পত্রলেখাও তার ‘পরান ভরা ভালোবাসা’ আজীবনের জন্য প্রিয় মানুষটিকেই ‘সমর্পন’ করলেন।
সিনেমার থেকেও সুন্দর রাজকুমার-পত্রলেখার প্রেম কাহিনী। যার শুরুটা হয়েছিল টেলিভিশনের একটি বিজ্ঞাপন থেকে। সেই বিজ্ঞাপনেই পত্রলেখাকে প্রথমবার দেখেন রাজকুমার রাও। সরাসরি না হলেও ‘লাভ আট ফার্স্ট আইসাইট’ই হয়েছিল রাজকুমারের। অথচ দু’জনে দু’জনকে পর্দায় দেখার অনেক আগে থেকেই চিনতেন। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টটিটিউট অফ ইন্ডিয়া থেকে একসঙ্গে পাশ করেছেন। তবে কলেজের পরিচয় মুখ-চেনার পর্যায়েই আটকে ছিল। প্রেম শুরু হয় দু’জনে একসঙ্গে বলিউডে কাজ শুরু করার পর।
পত্রলেখার জন্ম মেঘালয়ের শিলংয়ে। তার আসল নাম অন্বিতা পাল (Anwita Paul)। বাবা ছিলেন একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। মা গৃহবধূ হয়ে সংসার সামলাতেন। পত্রলেখার বাবা চাইতেন তার মেয়েও তার পেশাই বেছে নিক। তবে মেয়ের অভিনয়ের প্রতি টান ছিল। সেই টান থেকে তিনি চলে আসেন মুম্বাইতে। সেখানে ‘ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া’তে ভর্তি হন।
সেসময় বিজ্ঞাপনে টুকটাক কাজ করতেন পত্রলেখা। এমনই এক বিজ্ঞাপনে সেদিন পত্রলেখাকে বিজ্ঞাপনে দেখে রাজকুমারের মনে হয়েছিল তিনি এই মেয়েটির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তার ইচ্ছা পূরণ করলো বলিউড। ‘লাভ সেক্স অউর ধোকা’ ছবির সেটে দুজনের প্রথম আলাপ। রাজকুমার তো পত্রলেখাকে আগে থেকেই চিনতেন। তবে রাজকুমারের সম্পর্কে পত্রলেখার তেমন কোনও ধারণাই ছিল না। বরং তিনি মনে করতেন রাজকুমার ছবির চরিত্রের মতই!
তবে ধারণা পাল্টাতে খুব বেশি দেরি হয়নি। তাড়াতাড়িই একে অপরকে পছন্দ করতে শুরু করেন তারা। হনসল মেহতার পরিচালিত ‘সিটি লাইট’ ছবিতে অনস্ক্রিন জুটি বেঁধেছিলেন দুজনে। তাদের কেমিস্ট্রি এবং সিনেমার গল্প দুটোই দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। অনস্কিনের পাশাপাশি তখন অফস্ক্রিনেও তাদের প্রেমের রসায়ন জমে উঠেছিল। তারপর এতদিন লিভ ইন সম্পর্ক থেকে সম্পর্কটাকে আরও বেশী মজবুত করে তুলেছেন দুজনে। অবশেষে গত সোমবার সামাজিকভাবেও বিয়েটা সেরে ফেললেন রাজকুমার এবং পত্রলেখা। দুজনের বিয়ের ছবি এখন ভাইরাল নেট মাধ্যমে।
রাজকুমার-পত্রলেখার সম্পর্কের বয়স বাড়লেও প্রেমের বয়স বাড়েনি। তার-ই উদাহরণ পত্রলেখার গল্পে—অনেক দিন দেখা হয়নি পত্রলেখা-রাজকুমারের। প্রেমিকাকে কাছে পাওয়ার পাগলামিতে মুম্বই বিমানবন্দর থেকে জুহু পর্যন্ত ছুটেছিলেন রাও। খুব বেশি রোজগার নেই তখন রাজকুমারের। তাও ভালবেসে পত্রলেখাকে একটি দামি ব্যাগ উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ব্যাগটি হারিয়ে যায় লন্ডনে। কাঁদতে কাঁদতে রাজকুমারকে ফোন করে সে খবর জানান পত্রলেখা। তাঁর কথায়, ‘‘দামি ব্যাগের জন্য আমার মন খারাপ হয়নি। ওই ব্যাগটা আমার কাছে স্মৃতি।’’