পুলওয়ামা ঘটনার ঠিক ১২ দিনের মধ্যে ভারত ৪০ জন জওয়ানদের প্রতিশোধ নিতে সফল হয়েছে৷ পুলওয়ামা হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাহাড়ের চূড়ার জঙ্গলে একটি পাঁচতারা হোটেল, রিসর্টে ছিল জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি এবং তাদের প্রশিক্ষকরা, মঙ্গলবার ভোররাতে নিয়ন্ত্রণরেখার সেই জায়গাতেই হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা।
মঙ্গলবার ভোরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশের সব থেকে বড় জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বোমা বর্ষণ করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। নিখুঁত লক্ষ্যভেদ করে মিরাজ ২০০০ বিমান থেকে লেজার গাইডেড বোমা। সেই বোমার আঘাতেই মাসুদ আজাহারের ২ ভাই ও শালার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
এদিনের হামলায় মৃত্যু হয়েছে মাসুদ আজাহারের ২ ভাইও। মৃত্যু হয়েছে মাসুদ আজাহারের ভাই তলহা সইদ, ইব্রাহিম আজহারের, মৃত্যু হয়েছে কাশ্মীরে জইশের প্রধান আজহার খান ও উমর নামে এক জঙ্গি। এদের মধ্যে ইব্রাহিম আজাহার কান্দাহার বিমান অপহরণে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
৩০০ জনেরও বেশী জঙ্গিকে নিকেশ করা সম্ভব হয়েছে, সেই সময় ঘুমাচ্ছিল তারা।বালাকোটের এই ক্যাম্পেই অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং প্রশিক্ষণ নিত জইশ প্রধান মাসুদ আজাহারের আত্মীয় ও অন্যান্য জঙ্গিরা। বালাকোটের ক্যাম্পে ছিল “৩২৫ জন জঙ্গি এবং ২৫-২৭ জন প্রশিক্ষক”। ক্যাম্পটি একসময় ব্যবহার করত হিজবুল মুজাহিদিন। জঙ্গিদের উদ্বুব্ধ করতে এখানেই ভাষণ দিত জইশ প্রধান মাসুদ আজাহার।
কুনহার নদীর পাশে এই ক্যাম্পে জলপথেরও প্রশিক্ষণের সুবিধা দেওয়া হত জঙ্গিদের।প্রশিক্ষকরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী। অস্ত্র, বিস্ফোরক, ঘটনাস্থলের কৌশল, নিরাপত্তাকর্মীদের কনভয়ে হামলা, বম্ব তৈরি এবং প্রতিস্থাপন, আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি, উচ্চচাপযুক্ত এলাকায় কাজ করার বিভিন্ন কৌশল শেখান হত এখানে।
ক্যাম্পের সবাই সেই সময় ঘুমাচ্ছিল এবং তাদের দেশের এত ভিতরে ঢুকে হামলা হতে পারে এমনটা তাদের ধারণায় ছিল না, কারণ, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের আশঙ্কা করেছিল তারা।
পুলওয়ামা হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে পাহাড়ের চূড়ার জঙ্গলে একটি পাঁচতারা হোটেল, রিসর্টে ছিল জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি এবং তাদের প্রশিক্ষকরা, মঙ্গলবার ভোররাতে নিয়ন্ত্রণরেখার সেই জায়গাতেই হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। অস্ত্র, বিস্ফোরক, ঘটনাস্থলের কৌশল, নিরাপত্তাকর্মীদের কনভয়ে হামলা, বম্ব তৈরি এবং প্রতিস্থাপন, আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি, উচ্চচাপযুক্ত এলাকায় কাজ করার বিভিন্ন কৌশল শেখান হত এখানে।
পুলওয়ামা হামলার পরে জঙ্গি শিবিরকে বালাকোটের এই পাঁচ তারা ক্যাম্প গুলিতে স্থানান্তর করা হয়েছিল৷ তবে এই স্থানান্তরের কোনও লাভ হল না বলে মত বিভিন্ন মহলের৷ তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো জঙ্গি ঘুমের ঘোরেই খতম হয়ে গিয়েছে৷ বালাকোট ক্যাম্পের প্রধান ইউসুফ আজাহারের আইসি ৮১৪ হাইজ্যাকিং মামলায় সিবিআই খোঁজ করছিল৷ তার বিরুদ্ধে ২০০০ সাল থেকে রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়েছিল৷ সে জইশের প্রধান মসুদের সম্পর্কে শালা ছিল বলে জানা যায়৷
বালাকোট ক্যাম্প জইশ এবং অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের জন্য গুরুত্বপুর্ণ ক্যাম্প ছিল৷ এই ক্যাম্প থেকে বহু জঙ্গি কে প্রশিক্ষন দিয়ে বিভিন্ন নাশকতার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই ক্যাম্পে ৫০০ থেকে ৭০০ জঙ্গি কে রাখা সম্ভব ছিল৷ এই ক্যাম্পে জঙ্গিদের জন্য সুইমিং পুল এবং রান্নার সুব্যবস্থা ছিল৷
এই ক্যাম্প বালাকোট শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটারের দুরত্বে ছিল৷ এই ক্যাম্পটিকে জঙ্গিদের কঠিন প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হত৷ এখানে মসুদ আজহার এবং অন্যান্য প্রথম শ্রেণির জঙ্গি নেতারা ভারতের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক ভাষণ দিতে আসত৷
Read More : পাকিস্তানকে সবক শেখানো মিরাজ সম্পর্কে জেনে নিন কয়েকটি অজানা তথ্য
বালাকোট শহরের দুরত্ব লাইন অফ কন্ট্রোলের কাছে আবোটাবাদ থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার৷ আবোটাবাদেই মার্কিন সেনা আলকায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে পাকিস্তানের নজর বাঁচিয়ে খতম করেছিল৷ বালাকোট ক্যাম্পে জঙ্গিদের অত্যাধুনিতক অস্ত্র, বিস্ফোরকের পাশাপাশি বড়শড় নাশকতার পরিকল্পনা করানোরও প্রশিক্ষন দেওয়া হত৷ এছাড়াও এই ক্যাম্পে আইইডি তৈরি করা, এবং আত্মঘাতি হামলারও প্রশিক্ষন দেওয়া হত বলে সূত্রের খবর৷