যেকোনও ধারাবাহিক (Serial) সুপারহিট হওয়ার পেছনে নায়ক-নায়িকার ভূমিকা যতখানি থাকে, পার্শ্বচরিত্রের অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের ভূমিকাও ঠিক ততোখানি থাকে। সর্বোপরি খলনায়ক অথবা খলনায়িকারাই একটি ধারাবাহিকের প্রধান ইউএসপি হিসেবে কাজ করেন। যে ধারাবাহিকের খলচরিত্রের দাপট যত বেশি, সেই ধারাবাহিক দর্শকমহলে ততোধিক সমাদৃত হয়ে এসেছে। বাংলা টেলিভিশন (Telivision) জগতের এরকমই একজন দাপুটে খলনায়িকা (Villain) হলেন মোনালিসা পাল (Monalisa Paul)।
এক দশকের কর্মজীবনে অসংখ্য ধারাবাহিকে খলচরিত্রে অভিনয় করে ফেলেছেন এই অভিনেত্রী। বিশেষত স্টার জলসার (Star Jalsha) পর্দার খল-নায়িকা হিসেবে তিনি বেশ সমাদৃত। স্টার জলসাতেই একের পর এক ধারাবাহিকে খলচরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করার দৌলতে দর্শকের কাছে বেশ পরিচিত মুখ তিনি। এহেন অভিনেত্রী আবার ফিরেছেন টেলিভিশনের পর্দায়। ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে ‘কৃপা বসু’ হয়ে পর্দায় ফিরেছেন অভিনেত্রী।
মোনালিসা পাল বাংলা টেলিভিশন জগতের একজন জনপ্রিয় মডেল এবং অভিনেত্রী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে তার জন্ম হয় ১৯৮৭ সালে। রাজস্থানের এপিসি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন তিনি। তবে পড়াশোনা ছাড়াও অভিনয়ের প্রতি তার ছোটবেলা থেকেই বেশ টান ছিল। ২০০৫ সালে সংগীত বাংলা চ্যানেলের ‘হাওড়া ব্রিজ’ শোয়ের সঞ্চালনা করেই প্রথমবার পর্দার সামনে আসেন তিনি।
এরপর ‘চোরাবালি’ ধারাবাহিক মারফত ধারাবাহিকের জগতেও হাতেখড়ি হয়ে যায় তার। তবে দর্শক তাকে চিনতে শুরু করেন ‘বোঝে না সে বোঝে না’ ধারাবাহিকের দুর্ধর্ষ খলচরিত্র ‘পামেলা বোস’ চরিত্রে অভিনয় করার সুবাদে। চরিত্রটি দর্শকের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। এরপর ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকেও খলচরিত্রে কাস্ট করা হয় তাকে। দীর্ঘ পাঁচ বছর ‘তন্দ্রা সেনগুপ্ত’ হয়ে পর্দা কাঁপিয়েছেন অভিনেত্রী।
সান বাংলা চ্যানেলে ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’তেও খলচরিত্র ‘কামিনী’র ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। ইদানিং ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে ‘কৃপা বসু’ হয়ে আবার স্টার জলসার পর্দায় অভিনয় করতে শুরু করেছেন মোনালিসা। টেলিভিশনের পর্দায় তার ধামাকাদার এন্ট্রিতেই কার্যত কাত দর্শক। আর হবে নাই বা কেন? দেশের মাটির ‘রাজা-মাম্পি’ জুটির ইউএসপি কারোর অজানা নেই। সেই জুটিই যে ভাঙতে বসেছে তার জন্য! স্বভাবতই তার উপর ক্ষুব্ধ ‘রাম্পি’ জুটির অনুরাগীরা।
ধারাবাহিকের নতুন প্রোমো লঞ্চ করার সঙ্গে সঙ্গেই মোনালিসার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ‘রাম্পি’ জুটির অনুরাগীরা। কারণ প্রোমোতে দেখানো হয়েছে, ‘স্বরূপনগরের বাড়ি’তে উপস্থিত হয়েছেন ‘কৃপা বসু’। ‘রাজা’র প্রতি তার অভিযোগের ভিত্তিতে ‘দাদান’ এর নির্দেশ অনুযায়ী ‘কৃপা বসু’র সঙ্গেই ‘রাজা’র বিয়ের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই দর্শকের আশঙ্কা, ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যের যে পথে এগোচ্ছে তাতে ‘মাম্পি’র বদলে ‘কৃপা বসু’কেই বিয়ে করতে হবে ‘রাজা’কে।
‘রাজা-মাম্পি’ জুটির সম্পর্কের চড়াই-উৎরাইয়ে এমনিতেই হতাশ ছিলেন দর্শক। তার উপর আবার ‘রাজা-মাম্পি’র জীবনে ‘কৃপা বসু’র আগমনে দর্শকের হতাশা বাড়ছে বৈ কমেনি। অনেকে তো আবার মোনালিসার পূর্ব অভিনীত ধারাবাহিক ‘কে আপন কে পর’ এর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলছেন যে, “তন্দ্রা আবার এসেছে। জবা পরমের জীবন ৫ বছর জ্বালিয়ে এখন এসেছে ‘রাম্পি’র জীবন ছারখার করতে!”