মাসুম থেকে মহব্বাতের রোমান্টিক হিরো, ২২ বছর পর আজ কোথায় যুগল হংসরাজ

‘মাসুম’ ছবির খুদে শিশুশিল্পী থেকে ‘মহব্বতে’ ছবির রোমান্টিক হিরো, শুরুতে বলিউডে (Bollywood) বেশ ভাল করেই কেরিয়ার গুছিয়ে নিতে পেরেছিলেন যুগল হংসরাজ (Jugal Hansraj)। শিশুশিল্পী হিসেবে শাবানা আজমি, নাসিরুদ্দিন শাহের সঙ্গে সমান সমানে টক্কর দিয়ে অভিনয় করেছিলেন। তার নিষ্পাপ মুখ আজ এত বছর বাদেও যেন দর্শকদের চোখের সামনে ভাসে।

১৯৮২ সালের সেই ছবিটিই ছিল যুগলের ডেবিউ ছবি। ছবিটি অনেকগুলি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিল। মাত্র ১১ বছর বয়সে দুর্দান্ত অভিনয় করার দরুন দারুণ প্রশংসা পান যুগল। এরপর বলিউডের আরও বেশ কিছু ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি।

MASOOM

১৯৯৪ সালে ‘আ গলে লগ জা’ ছবিতে আবারও অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। তবে এবার বলিউডে তার অভিষেক হয় নায়ক হিসেবে। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় ছবি ‘পাপা কেহতে হ্যায়’। এই ছবিতেও তিনিই ছিলেন নায়ক। ছবিটি সেভাবে বক্সঅফিসে সাড়া না পেলেও ছবির গানগুলি হয়েছিল সুপারহিট।

২০০০ সালে তার হাতে আসে বড় সুযোগ। শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চনদের মত সুপারস্টারদের সঙ্গে এক ঝাঁক নতুন মুখের অভিষেক হল বলিউডে। ছবির নাম ‘মহব্বতে’। সবুজ চোখের নায়কের হ্যান্ডসাম চেহারা আরও একবার মুগ্ধ করেছিল মহিলা দর্শকদের। কেরিয়ারে এটাই ছিল তার অভিনীত সবথেকে জনপ্রিয় ছবি।

JUGAL HANSRAJ

‘মহব্বতে’র পর ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘আ জা নাচ লে’, ‘সালাম নমস্তে’ এর মতো কিছু ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। তার হাতে ছিল আরও ৪০টি ছবির প্রস্তাব। তবে সেই সময় তার কেরিয়ার গ্রাফ অনবরত নিচের দিকে নামতে থাকে। তার হাত থেকে একের পর এক ছবির প্রস্তাবে বেরিয়ে যায়।

JUGAL HANSRAJ

অভিনেতা হিসেবে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি পরিচালক হিসেবেও ভাগ্য পরীক্ষা করে দেখতে চান। কিন্তু বলিউড আবার তাকে ফিরিয়ে দেয়। তবে সেই সময় ‘কুছ কুছ হোতা হে’ ছবির টাইটেল ট্র্যাকের লিরিক্স লিখে আরও একবার প্রশংসা পান তিনি। ২০১৮ সাল থেকে পুরোদস্তুর লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন যুগল।

jugal hansraj

অভিনয় ছেড়ে লেখক হিসেবে নতুন জার্নি শুরু করার নেপথ্যে অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার ছেলে। তার কথায়, “ছেলের জন্মের পর অনেককিছু শিখেছি। সেই সময় বাড়িতেই থাকতাম বেশিরভাগ সময়। ছেলেকে বড় করতে স্ত্রীকে সাহায্য করতাম। ওর জন্ম আমার মধ্যে বিপুল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আগে যা ভাবতে পারতাম না, সেটাই ভাবতে শুরু করে দিয়েছি। আমি ওর জন্যই লিখতে চাই। যখন ও বড় হবে, বইয়ের জগতের সঙ্গে পরিচিত হবে, তখন যেন বলতে পারে ওর বাবা ওর জন্য লিখেছিল।”

আপাতত অভিনয় এবং বলিউড থেকে অনেক দূরে আমেরিকাতে স্ত্রী এবং পুত্রকে নিয়ে সংসার পেতেছেন যুগল হংসরাজ। বাজারে ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে তার প্রথম উপন্যাস। দ্বিতীয় উপন্যাসটিও প্রায় লেখা হয়ে এসেছে। আপাতত তিনি উপন্যাস প্রকাশের জন্য ভালো প্রকাশকের সন্ধানে রয়েছেন। পাশাপাশি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি সিরিজ তৈরীর প্রস্তুতিও নিয়েছেন।