একসময় সলমানের মায়ের ফাইফরমাশ খাটতেন, প্রতিভার জোরে আজ সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তী

৮০ এর দশকে ইন্ডাস্ট্রিতে যখন অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, জীতেন্দ্রদের রাজত্ব চলছিল তখন আউটসাইডার হয়ে বলিউডে জায়গা করে নেওয়া যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) কাছে। তবে তিনি হার মানেননি। বারবার প্রডিউসার, পরিচালকদের কাছে প্রত্যাখ্যান পেয়েছেন। তৎকালীন সময়ে নায়কদের ভৎসনা, অপমান ‌হজম করেছেন। বলিউডে ছিল না মাথা গোঁজার আশ্রয়। তবুও হার মানেননি। তার হার না মানার মানসিকতাই তাকে আজ সুপারস্টার বানিয়েছে।

দারিদ্রতা কী, জীবন সংগ্রাম কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। খুব সাধারণ পরিবারের ছেলে ছিলেন তিনি। পড়াশোনায় ছিলেন মেধাবী। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে রসায়ন নিয়ে পড়ে ডিগ্রিও পেয়েছিলেন। কিন্তু সুপারস্টার হওয়ার বাসনা নিয়ে ‌তিনি পাড়ি দেন মুম্বাইতে। সেখানে গিয়ে থাকার জায়গার অভাবে তিনি প্রথম প্রথম জলের ট্যাংকের পেছনে ঘুমাতেন।

ছোট থেকেই নাচ ছিল তার পছন্দের বিষয়ে। অভিনয়ে আসার আগে তিনি স্টেজ শো করে অর্থ উপার্জন করতেন বলেও জানা যায়। বলিউডের শুরুতেই নায়ক হিসেবে কেউ মিঠুন চক্রবর্তীকে কাজ দিতে চাননি। অগত্যা সেলিম খানের দ্বিতীয় স্ত্রী তথা সালমান খানের সৎ মা হেলেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মিঠুন। হেলেন তখন বলিউডের নামকরা আইটেম ড্যান্সার। হেলেনের সহকারি হিসেবে কাজ নেন মিঠুন। বলিউডে শুরু হয় তার নতুন যাত্রা।

হেলেনের সহকারি হওয়ার জন্য অবশ্য নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখেছিলেন মিঠুন। তখন তার নাম হয়েছিল ‘রেজ’। কাজ করতে করতে ‘মৃগয়া’ ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। বলিউডে তার অভিষেক হয় এই হিট সিনেমার হাত ধরে। তবুও সে ভাবে পরিচিতি পাচ্ছিলেন না তিনি। সাফল্যের জন্য আরও বেশ কয়েকটা বছর তাকে অপেক্ষা করতে হয়। এই সময়কালে তিনি হেলেনের সহকারী হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছিলেন।

হেলেনের সঙ্গে কাজ করতে করতে অমিতাভ বচ্চনের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। এরপর তার কাছে আসে কালজয়ী ‘ডিস্কো ড্যান্সার’ সিনেমার প্রস্তাব। এই ছবির পর আর ঘুরে তাকাতে হয়নি মিঠুন চক্রবর্তীকে। ‘ডিস্কো কিং’ হিসেবে নিজের আলাদা পরিচয় গড়ে তোলেন তিনি। দশকের পর দশক ধরে মিঠুন চক্রবর্তী তার স্বমহিমায় ধরে রেখেছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। এই বয়সেও তার অনবদ্য অভিনয় মন ছুঁয়ে গিয়েছে দর্শকদের।