মাত্র আড়াই টাকায় চিকেন পকোড়া বেচে বাস্তবে ‘সুপারস্টার’ লক্ষ্মী কাকিমা

জি বাংলার (Zee Bangla) ‘লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার’ (Lokkhi Kakima Superstar) ধারাবাহিক ইতিমধ্যেই দর্শকদের নজর কেড়েছে। অপরাজিতা আঢ্যের উপস্থিতিতে এই ধারাবাহিক প্রথম সপ্তাহেই টিআরপি তালিকায় ভাল জায়গা করে নিয়েছে। সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম সেরে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ নামের মুদির দোকান চালান লক্ষ্মী কাকিমা। বাস্তবেও এমন লক্ষ্মী কাকিমাদের দেখা মেলে বৈকি। খোদ দক্ষিণ কলকাতাতেই রয়েছে লক্ষ্মী কাকিমার চিকেন পকোড়ার (Lokkhi Kakima Chicken Pakora) দোকান।

এই চিকেন পকোড়ার দোকানের কিন্তু রয়েছে এক দারুণ বিশেষত্ব। কারণ একমাত্র এখানেই মাত্র ২.৫০ টাকায় চিকেন পকোড়া মেলে। এই অগ্নিমূল্যের বাজারে এত কম দামে চিকেন পকোড়া, ভাবা যায়? অন্যান্য ব্যবসায়ীরা যেটা ভাবতে পারেন না লক্ষ্মী কাকিমা সেটাই করে দেখিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল এত কম মূল্যে চিকেন পকোড়া তিনি বিক্রি করছেন কিভাবে? এতে কতটাই বা লাভ হচ্ছে তার?

সাধারণত খাবারের দোকানে ১০-১২ টাকার কমে মেলে না চিকেন পকোড়া। তবে লক্ষ্মী কাকিমার দোকানের চিকেন পকোড়া আকার আয়তনে ছোট হলেও তাতে চিকেনের পরিমাণ থাকে ভরপুর। স্বাদেও অতুলনীয় বলেই জানাচ্ছেন তার দোকানের গ্রাহকেরা। লাভ খুব বেশি না হলেও মানুষকে কম দামে খাইয়ে তার তৃপ্তি হয়। তাছাড়া তার পপুলারিটি যত বাড়ছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রাহকের সংখ্যা। লক্ষ্মী কাকিমার এই দোকান শুরু হয়েছে লকডাউনে। তার আগে ভাতের দোকান ছিল তার।

লক্ষ্মী কাকিমার কথায় তার এই দোকান ২২ বছরের পুরনো। প্রথমে তিনি ভাতের দোকান চালাতেন। তারপর স্ন্যাকসের দোকান দিলেন। লকডাউনে ব্যবসা মার খেতে শুরু করে। বিকল্প ব্যবসার সন্ধানে ছিলেন তিনি। এক বিয়েবাড়িতে চিকেন পকোড়ার স্টল এবং সেখানে মানুষের ভিড় দেখে তার মাথায় চিকেন পকোড়ার দোকান দেওয়ার আইডিয়া আসে। যেই ভাবা সেই কাজ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে লকডাউনের মাঝে লক্ষ্মী কাকিমার চিকেন পকোড়ার দোকানের যাত্রা শুরু। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভাইরাল হয়েছে লক্ষ্মী কাকিমা এবং তার চিকেন পকোড়া।

এত কম দামে চিকেন পকোড়া পাওয়া যাচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া ঢালাই ব্রীজের কাছে লক্ষ্মী কাকিমার পকোড়ার দোকানে। দিন প্রতিদিন বাড়ছে গ্রাহকদের ভিড়। বিকেল তিনটে নাগাদ দোকান খুলে গ্রাহকের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। দোকান চলে রাত ৯.৩০ টা পর্যন্ত। প্রথম এক মাসের মধ্যেই প্রতিদিন ৬ কেজি পকোড়া তাকে বানাতে হত। এক মাস পেরোতে না পেরোতেই সেই পরিমাণটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ কেজিতে।

ইদানিং তার দোকানে গ্রাহকের ভিড় যত বাড়ছে, তার সঙ্গে বাড়ছে ফুড ব্লগারদের ভিড়। আদতে খোদ কলকাতার বুকে এত কম দামে চিকেন পকোড়া পাওয়া যেতে পারে এমনটা ভাবতেই পারেন না অনেকে। লক্ষ্মী কাকিমা অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছেন। খাসখবর পোর্টালের কাছে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার ধারাবাহিকের জন্য আমাকে সবাই বাস্তবের লক্ষ্মী কাকিমা বলছে। এটা ভালো লাগছে।আড়াই টাকায় আমি দিতে পারে তার কারণ, আমি খুব কম লাভে বিক্রি করি। আমার কাস্টমার বেশি তাই আমার অসুবিধা হয় না।”