আগামীকাল থেকে এই ৯ টি জেলায় ফের ৭ দিনের লকডাউন

ফের লকডাউন চালু হবে বাংলার কন্টেনমেন্ট-বাফার জোন গুলিতে। কোরোনার সংক্রমণ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে ভারতে। ইতিমধ্যেই রাশিয়াকে ছাড়িয়ে সংক্রমণের সংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এখনও অবদি। আনলক পর্যায় দাঁড়িয়ে বিগত দুয়েক সপ্তাহ ধরে কোলকাতায় সংক্রমনের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলেছে।

রাজ্যে সংক্রমনের হার আটকানোর জন্য ফের লকডাউন চালু করলো সরকার। মঙ্গলবারই সে বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়। তাতে জানানো হয় আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতে চলবে কড়া লকডাউন। তবে এই লকডাউন কতদিনের জন্য তা জানানো হয় নি নির্দেশিকাতে।

রোজই রাজ্যে বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। গত তিন দিনে পর পর রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা একশোর বেশি। ইতিমধ্যেই কোরোনা আক্রান্ত এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ২৮৪ জন। এই পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই এর জন্য মঙ্গলবার বৈঠক বসে ছিল রাজ্যে কোভিড-১৯ টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের নিয়ে। এই বৈঠকেই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের কন্টেনমেন্ট জোন যুক্ত জেলা গুলিতে লকডাউন এর নির্দেশিকা জারি করেন। আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে যাবে এই লকডাউন।

দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, হুগলির কনটেনমেন্ট ও বাফার জোনে এবং উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার উত্তর দিনাজপুর, মালদায় চালু হবে লকডাউন।

আগামীকাল থেকেই রাজ্যের এই কয়টি জেলায় কঠোর লকডাউন থাকবে বলে ঘোষণা করা হয় বৈঠকে। বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস গুলি। এই সকল জোনে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবা ছাড়া অন্য কোন পরিষেবা খোলা থাকবে না। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে কলকাতায় মোট কনটেন্টমেন্ট জোনের সংখ্যা ১৪৬ এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ২১৯ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১১৫ টি জোন আছে। কোভিদ অ্যাক্টিভ কেসের মধ্যে ৭৬ শতাংশই রয়েছে এই তিনটি জেলায়।

কলকাতায় যে যে কনটেনমেন্ট-বাফার এলাকা রয়েছে সেগুলি হলো ভবানীপুর, ফুলবাগান, কাঁকরগাছি, বেলেঘাটা, উল্টোডাঙা, হাডকো, আলিপুর, বিজয়গড়, যাদবপুর, নিউ আলিপুর, কসবা, মুকুন্দপুর ও অজয়নগর, এই এলাকা গুলিতে চলবে কঠোর লকডাউন। উত্তর ২৪ পরগনার চিহ্নিত কমটেনমেন্ট জোন মধ্যে বিধাননগরের ১৭টি ওয়ার্ড, ব্যাপরাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে।

এই একালাতেই অবস্থিত পাট কলগুলো, যার মধ্যে এই সব কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে গত মাস থেকেই। কিন্তু, নতুন করে লকডাউনের ফলে পাট কলে ফের উৎপাদন ব্যহত হয়ার আশঙ্কা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর, রাজপুর-সোনারপুর, বজবজ, ঠাকুরপুকুর, পুজালি ও মহেশতলা এলাকা গুলিকে কমটেনমেন্ট জোন বলে জানিয়েছে সরকার। এছাড়া হাওড়ার পৌরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডে লাগু করা হবে বিধিনিষেধ।

চলবে লকডাউন, খোলা থাকবে এইসব দোকান, বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

এছাড়াও মালদা ও দার্জিলিং জেলায় ও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই কোরোনা সংক্রমণ মুকাবিলায় মালদার জেলা সদর ইংরেজ বাজার, পুাতন মালদায় সম্পূর্ণ লকডাউন লাগু করা হবে আগামীকাল থেকেই। অত্য়াবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য সকল পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি বাজার খোলা থাকবে কেবল সকাল ১১ টা অবদি। বন্ধ থাকবে ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলও।

আরও পড়ুন :- রাজ্যে ফের কড়া লকডাউন, কি কি বন্ধ থাকছে দেখে নিন

রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেবল অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া এই সকল কমটেনমেন্ট জোন গুলিতে অন্যান্য সকল পরিষেবা বন্ধ থাকবে, সঙ্গে বন্ধ থাকবে সেই সকল এলাকার সরকারি ও বেসরকারি অফিস গুলিও। কোন প্রকার যানবাহন চলবে না। কেবল বাজার শিল্পাঞ্চল ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বিক্রি হবে। এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিষয়টিও নজরদারিতে থাকবে পুলিশের। যাতে কেউ বিনা কারণে বাড়ি থেকে না বের হতে পারে। করোনার সংক্রমণ এড়ানোর জন্য লোকডাউন ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে মনে করছেন
রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা।