কোথায় কোথায় লকডাউন, কি কি বন্ধ থাকবে, কি কি খোলা থাকবে

কোরোনা ভাইরাসের জেরে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ছিলেন মানুষ। পুরো বিশ্বে একের পর এক দেশে বেড়েই চলেছে মৃত্যুর সংখ্যা এবং সাথেই আক্রান্তের সংখ্যা। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩০০। এমন অবস্থায় রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার নেতৃত্বে সব রাজ্যের মুখ্য সচিবদের বৈঠক হয় সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৮৯৭ সালের মহামারী নিয়ন্ত্রন আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী আগামীকাল অর্থাটসম্বার ২৩ শে ম্যাচ বিকেল ৫ টা থেকে ২৭ মার্চ রাত ১২ টা পর্যন্ত পশ্চিম বঙ্গের শহরাঞ্চল এবং গ্রামীণ অঞ্চলে বেশ কিছু পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। জেনে নিন বিস্তারিত ভাবে।

লকডাউন বা বিধি-নিষেধ অনুযায়ী গণপরিবহন অর্থাৎ বাস-ট্যাক্সি অটোরিকশা কোন কিছুই চলবে না। কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবায় গাড়ি যেমন অ্যাম্বুলেন্স, বিমানবন্দর স্টেশন ইত্যাদি থেকে আসা যাওয়ার গাড়ি চলবে। পাশাপাশি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনের গাড়ি চলবে। বন্ধ থাকবে সমস্ত রকম কল কারখানা, দোকানপাট। বিদেশ থেকে ফিরে আসা সকল যাত্রীকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সকলকে বাড়ির মধ্যে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে বারণ করা হয়েছে।

কোন কোন জায়গাগুলোতে এটি কার্যকর করা হবে?

কোচবিহার জেলার- জেলা সদর শহর। আলিপুরদুয়ার জেলা- জেলা সদর শহর, জয়গাঁ। জলপাইগুড়ি জেলা- জেলা সদর শহর। কালিম্পং জেলা- জেলা সদর শহর। দার্জিলিং জেলার – দার্জিলিং, কর্শিয়াঙ, শিলিগুড়ি। উত্তর দিনাজপুর জেলা- পুরো জেলা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা- জেলা সদর শহর। মালদা জেলা- পুরো জেলা।

মুর্শিদাবাদ জেলা- পুরো জেলা। নদিয়া জেলা- পুরো জেলা। বীরভূম জেলা- সমস্ত পুরসভা এলাকা। পশ্চিম বর্ধমান জেলা- পুরো জেলা। পূর্ব বর্ধমান জেলা- জেলা সদর শহর, কালনা, কাটোয়া। পুরুলিয়া জেলা- জেলা সদর শহর। বাঁকুড়া জেলা- জেলা সদর শহর, বরজোড়া, বিষ্ণুপুর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা- জেলা সদর শহর,খড়্গপুর শহর, ঘাটাল শহর। ঝাড়গ্রাম জেলা- জেলা সদর শহর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা- জেলা সদর শহর , হলদিয়া, দিঘা, কোলাঘাট, কাঁথি।

হাওড়া জেলা- পুরো জেলা। হুগলি জেলার- জেলা সদর শহর,চন্দননগর, উত্তরপাড়া, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, আরামবাগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা – ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং, সোনারপুর, বারুইপুর, ভাঙড়, বজবজ, মহেশতলা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা- সল্টলেক, নিউ টাউন-সহ সমস্ত পুর এলাকা। কলকাতা কর্পোরেশন – পুরো এলাকা

কি কি পরিষেবা বন্ধ থাকবে?

পরিবহন ব্যবস্থা যেমন বাস ট্রেন অটো রিক্সা ইত্যাদি বন্ধ থাকবে। কিন্তু অন্যদিকে হাসপাতালের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স চালু থাকবে এবং, বিমানবন্দর, স্টেশন ও বাস স্ট্যান্ড থেকে অনেক সময় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন করা হয়। সেইসব পণ্য পরিবহনকারী গাড়ি চলাচল করবে। বেসরকারি অফিস, সব দোকান, শপিং মল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান,কারখানা, ওয়ার্কশপ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

এছাড়াও কিছু নির্দেশিকা দাওয়া হয় সরকারের তরফ থেকে :-

  • বিদেশ থেকে কোনো ব্যাক্তি এই দেশে এলে তাকে হম কয়ারেন্টাইন এ থাকতে হবে এবং সেটা বাধ্যতামূলক। কতদিন এবং কি কি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা বলে দেবেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তারা।
  • পাবলিক প্লেসে এক সঙ্গে সাত জন বা তার বেশি মানুষ জমায়েত হলে নাওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।
  • কোনো অপরিহার্য প্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ বাড়ি থেকে বেরোবেন না।

কোন কোন পরিষেবা চালু থাকবে?

• আদালত, জেল, সংশোধনাগার।
• স্বাস্থ্য পরিষেবা
• পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী পরিষেবা
• দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর
• টেলিকম এবং , ইন্টারনেট পরিষেবা।
• তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর সমস্ত পরিষেবা
• ব্যাঙ্ক ও এটিএম পরিষেবা
• মুদি খানার দোকান,রেশন দোকান।
• শাক সবজি, মাছ, মাংস, দুধের পরিবহণ ও বিক্রি
• হোম ডেলিভারি ও ইকমার্স পরিষেবা তবে খাবার বা মুদিখানার দোকানের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ক্ষেত্রে।
• পেট্রোল পাম্প ও এলপিজি গ্যাস পরিষেবা
• ওষুধের দোকান ও ওষুধ প্রস্তুত সংস্থার কাজ
• প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং সোশাল মিডিয়া