ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ রবিবার পুন্য জন্মাষ্টমী অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন। কিন্তু কেউ কেউ আবার সোমবার অর্থাত্ কাল জন্মাষ্টমী পালন করবে। তাদের নাকি সেইরকম বিধান দিয়েছে তাদের পুরোহিতরা। অনেকের মধ্যেই এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে যে কোন দিন জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অধিক কৃপালাভ করা যাবে। আসুন জেনে নিন শাস্ত্র মতে কোন দিন জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করা যুক্তি সংগত…
শাস্ত্র মতে বলা হয়েছে ভাদ্র মাসের অষ্টমী তিথিতে জন্মাষ্টামী উৎসব পালন করা যেতে পারে। আর সেই মতো আজ রবিবার ভাদ্র মাসের অষ্টমী তিথী পড়ছে। তাই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ জন্মাষ্টমী। কিন্তু শাস্ত্রে এও বলা হয়েছে যে ভাদ্রমাসে অষ্টমী তিথিতে যদি আকাশে রোহিনী নক্ষত্র যোগ থাকে হয় তাহলে তা জন্মাষ্টমী পালনের জন্য জন্য অত্যন্ত শুভ। তেমনি আবার রোহিনী নক্ষত্র যোগ থাকলেও সপ্তমী যুক্ত অষ্টমী জন্মাষ্টমী পালনের জন্য উপযুক্ত নয়। সেই অনুযায়ী দেখলে আজ যে অষ্টমী তিথি পড়ছে তাতে কৃত্তিকায়া নক্ষত্রের যোগ পাওয়া যাচ্ছে শাস্ত্র অনুযায়ী এবং গ্রহ নক্ষত্রের রাশিফল বিচার করে এছাড়াও এই অষ্টমীতে সপ্তমীর যোগ পাওয়াও যাচ্ছে। যা শাস্ত্র মতে জন্মাষ্টমী পালনের জন্য অত্যন্ত শুভ নয়। কিন্তু সোমবারের যে অষ্টমী তিথি পাওয়া যাচ্ছে তা রোহিনী নক্ষত্রের যোগ সহ নবমী যোগও তাতে আছে। অর্থাৎ শাস্ত্র মতে এই দিন জন্মাষ্টমী পালন করা অত্যন্ত শুভ। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে ক্যালেন্ডারে কেন রবিবারে জন্মাষ্টমী পালনের উল্লেখ করা হয়েছে? আসলে দুই ধরণের মতের উল্লেখ পাওয়া যায়। এক মত হল স্মার্ত মত এবং অন্য মত হল গোস্বামী মত বা বৈষ্ণব মত। অনেকেই আছেন যারা স্মার্ত মত মেনে চলেন এবং সেই বিধান অনুযায়ী পূজা অর্চনা, উপবাস করে থাকেন। আবার অনেকেই গোস্বামীবা বৈষ্ণব মতে পূজা, অর্চনা এবং উপবাস করে থাকেন।
আরও পড়ুন : বাস্তুমতে গৃহে সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য শুভ আর অশুভ গাছ কোনগুলি
পূজা করার সঠিক পদ্ধতি কি?
প্রথমে একটি বাল গোপাল মূর্তি নিয়ে তাকে আপনার স্নান করার পর শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে পঞ্চামৃত অর্থাৎ দুধ, দই, ঘি, মধু এবং চিনি বা শর্করা সহযোগে ভালোভাবে মাখবেন এবং তারপর গঙ্গাজল দিয়ে ভালোভাবে সারা শরীর ধুয়ে দেবেন বাল গোপালের। তারপর হলুদ রঙের নতুন বস্ত্র অবশ্যই পরাবেন বাল গোপালকে। তার সুন্দর সাজে কোন ত্রুটি যেন না থাকে। গলায় অলঙ্কার দেবেন। তারপর তার মুকুট এবং অবশ্যই বাঁশি মুখে দেবেন। বাল গোপালের গলায় দেবেন হলুদ গাঁদা ফুল বা রক্ত করবীর মালা। পূজার আগে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালাবেন এবং আরতি করবেন। বাল গোপালের পাদপদ্ম চন্দন দিয়ে মাখানো তুলসি পাতা অবশ্যই দেবেন। কপালে দেবেন চন্দনের তিলক এবং আতব দানা। পূজার ভোগে দেবেন তুলসী পাতা, নাড়ু, মাখন মিছরি, তালের বড়া,পায়েস, মালপোয়া, রাবড়ি ইত্যাদি। ভক্তিভরে পূজা করে প্রসাদ বাড়ির ছোটদের এবং প্রতিবেশী ছোটদের মধ্যে সর্বপ্রথম বিতরণ করবেন। এইভাবে পূজা করলে সহজেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আশীর্বাদ পাবেন।