

বড় পর্দার যারা সুপারস্টার তারাই ভক্তদের কাছে হয়ে ওঠেন আইকন। তাদের বলা কথা, তাদের আচরণ সবটাই প্রভাব ফেলে ভক্তদের উপরে। আর তাই তো তাদেরকেই বিজ্ঞাপনের মুখ বানিয়ে নিয়ে ব্যবসার নিত্যনতুন ফিকির খুজে নেয় বিভিন্ন সংস্থা। আজকাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পান মশলার বিজ্ঞাপনে (Paan Masala Advertisement) বলিউডের (Bollywood) তাবড় তাবড় তারকাদের মুখ হিসেবে ব্যবহার করছে সংস্থাগুলো। ভক্তদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা না করেই স্রেফ টাকার লোভে রাজিও হচ্ছেন তারকারা।
এই তালিকাতে রয়েছেন শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চন, অজয় দেবগণ, অক্ষয় কুমারদের মত তারকারা! স্বভাবতই এই তারকাদের নীতিবোধ নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। তবে এদের মধ্যেই ব্যতিক্রম অল্লু অর্জুন, কার্তিক আরিয়ানদের (Kartik Aaryan) মত তারকারা। তারা নিজেদের টাকার কাছে বিক্রি করে দিতে রাজি নন। প্রয়োজনে কোটি কোটি টাকার লোভ তারা সামলাতে পারেন, কিন্তু সাধারণের ক্ষতি হয় এমন কোনও কাজ করতে চান না।
কিছুদিন আগেই গুটখা জাতীয় দ্রব্যের বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব ফিরিয়ে সারা দেশের কাছে আইকন হয়ে উঠেছিলেন অল্লু অর্জুন। তিনি সরাসরিই বলে দেন ১০০ কোটি টাকা অফার করলেও তিনি এমন বিজ্ঞাপনের মুখ হবেন না। দক্ষিণী তারকার এই মূল্যবোধ দেখে তার প্রশংসাইয়ের পঞ্চমুখ হয়েছিলেন ভক্তরা। এই মূল্যবোধের অভাব এতদিন ছিল বলিউডে। সেই অভাব পূরণ করলেন কার্তিক আরিয়ান।
কার্তিক আরিয়ান বলিউডের নতুন প্রজন্মের অভিনেতা। নেপোটিজম, আউটসাইডার বিতর্কে বলিউডে তাকেও অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এখন কার্তিক দর্শকদের নয়নের মণি। কারও পায়ে না ধরে গডফাদার ছাড়াই তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এমনকি করণ জোহরের সঙ্গে শত্রুতাতেও জড়িয়েছেন। কিন্তু মুভি মাফিয়ারা তার কেরিয়ার শেষ করতে পারেননি। তার পাশে দাঁড়ায় গোটা দেশ।
সম্প্রতি কার্তিক আরিয়ান সেই সমস্ত সাধারণ মানুষের কথা ভেবে সরে দাঁড়ালেন একটি বিজ্ঞাপন থেকে। বিজ্ঞাপন জগতের ঘনিষ্ঠ ‘অ্যাড গুরু’ এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কার্তিক আরিয়ান ৮-৯ কোটি টাকার বিনিময়ে পান মশলার বিজ্ঞাপন দেওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। কার্তিকের কিছু মূল্যবোধ রয়েছে। এখনকার অভিনেতাদের মধ্যে এই গুণ দেখা যায় না বললেই চলে। তারা লুফে নেয়। এমন বড় প্রস্তাবে না বলা সহজ নয়। কিন্তু তরুণদের আইকন হিসেবে কার্তিক ওর দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন।”
এই প্রসঙ্গে সেন্সর বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ার পার্সেন্ট তথা প্রযোজক পহলাজ নিহালনি জানিয়েছেন, “পান মশলা মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। বলিউড রোল মডেলদের এইভাবে গুটখা এবং পান মশলা খাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া দেশের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে।” তিনি আরও বলেছেন, ‘পান মশলা এবং মদের বিজ্ঞাপনকে সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন সিবিএফসিকে অনুমতি দেয় না। তাই এই দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করা বেআইনি। যে সকল অভিনেতারা এমন বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত তাদের জানা উচিত তারাও বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত।”