বলিউডের “ক্যুইন অফ কন্ট্রোভার্সি’ বলা হয় কঙ্গনা রানাওয়াতকে। অভিনেত্রী ইতিপূর্বে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। এতদিন তার নজরে ছিল বলিউড। বলিউডের তাবড় তাবড় পরিচালক, প্রোডিউসার, অভিনেতাদের বিরুদ্ধে কঙ্গনা সোশ্যাল সাইটে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তবে ধীরে ধীরে অভিনেত্রী দেশের রাজনীতি এবং বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত মন্তব্য করতে শুরু করেছেন।
সম্প্রতি, বাংলার একুশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কঙ্গনা বাংলার নব নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গেও বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন নেটিজেনদের কাছে। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলটিকে ব্যবহার করে অভিনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে “রাবণ’ এর সঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গকে “কাশ্মীর’ এর সঙ্গে তুলনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি করতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চূড়ান্ত সমালোচিত হন।
এরফলে টুইটার কর্তৃপক্ষ শেষমেষ কঙ্গনার টুইটার একাউন্টটি চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। তবুও কঙ্গনা এবং বিতর্ক, একে অপরকে ছেড়ে থাকতে পারে কি? দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কঙ্গনার আরও এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে উত্তাল হয়ে উঠেছে নেট দুনিয়া। কঙ্গনা মনে করেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশবাসীর অক্সিজেন নয়, ধর্ম প্রয়োজন!
সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, “দেশে এই মুহূর্তে অক্সিজেন নিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে’। যার পরিপ্রেক্ষিতে কঙ্গনার মন্তব্য, “ভারতে আর অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই। ভগবানের ভয় পাওয়া দরকার এখান। প্রয়োজন ধর্মের।’ কঙ্গনা আরও যোগ করেছেন, “দেশে চোর ভর্তি। আর তাই মানবজাতির প্রয়োজন মানবিকতা, অক্সিজেন নয়।’
প্রসঙ্গত, দেশে এখন অক্সিজেনের আকাল দেখা দিয়েছে। করোনা আক্রান্ত রোগীরা এই দফায় প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদা বাড়লেও সেই তুলনায় অক্সিজেন সিলিন্ডারের যোগান নেই। রোগীদের উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। একটু অক্সিজেনের অভাবে মর্মান্তিক মৃত্যু হচ্ছে করোনা রোগীদের।
এহেন পরিস্থিতিতে কঙ্গনার এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করে স্বভাবতই উত্তাল হয়ে উঠেছে নেট দুনিয়া। ইতিপূর্বে অক্সিজেন সংকটকালে কঙ্গনা করোনা রোগীদের পরামর্শ দেন, “যাঁদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হচ্ছে, তাঁরা দয়া করে একটি কাজ করুন। গাছ লাগান। আর যদি সেটি করতে না পারেন, অন্তত গাছ কাটা বন্ধ করুন”। দেশে অক্সিজেনের আকাল মেটাতে কঙ্গনা এই “স্থায়ী সমাধান”টিই নেটিজেনদের দিয়েছিলেন।
এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরেই টুইটার কর্তৃপক্ষ কঙ্গনাকে সেই প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কঙ্গনার অ্যাকাউন্টটি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার পর টুইটার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছিল, ‘‘আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলাম, কোনও পোস্ট থেকে বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তার বিরুদ্ধে আমরা পদক্ষেপ নেব। নীতি লঙ্ঘন করার জন্য উল্লিখিত অ্যাকাউন্টটি স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।’’ তবে তাতে অবশ্য কিছুই এসে যায়না অভিনেত্রীর। তিনি তার মতাদর্শ প্রকাশ করার জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম বেছে নিয়েছেন।