কালীপূজায় মায়ের পাশে ডাকিনী-যোগিনী থাকে কেন? ডাকিনী-যোগিনীর আসল পরিচয় কী?

মা কালীর পাশে থাকা ডাকিনী-যোগিনী আসলে কে? রইল তাদের আসল পরিচয়

Kali Puja 2023 : শহর জুড়ে শুরু হয়েছে আলোর উৎসব কালীপুজো (Kalipuja)। মা কালীর নানা রূপ চমকিত করছে সকলকে। কোথাও মায়ের রং কালো, কোথাও শ্যামা। তবে বড়দের কাছে মায়ের মূর্তি নিয়ে কৌতূহল থাকলেও ছোটদের কাছে কিন্তু মাতৃ প্রতিমার চেয়েও বেশি কৌতূহল তার দুপাশে বসানো ডাকিনী যোগিনী নিয়ে। কিন্তু আপনি জানেন কী এই ডাকিনী-যোগিনী (Dakini And Yogini) আসলে কে? চলুন জেনে নিই।

Kali Puja 2023 Bhoot Chaturdashi 2023

কালীপুজোর আগের চতুর্দশীর রাতকে বলা হয় ভূত চতুর্দশী। কার্তিক মাসের অমাবস্যার এই রাত নিয়ে রয়েছে একাধিক কুসংস্কার। কথিত আছে, অমাবস্যার রাতের অন্ধকারে মর্ত্যে নেমে আসেন ভূত-পেত্নী, এককথায় অশরীরি আত্মারা। যার জন্য এদিনে নিয়ম করে ১৪ রকমের শাক খাওয়ার এবং বিকেলে অন্ধকার সরিয়ে আলোয় বাড়ি আলোকিত করতে ১৪ প্রদীপ জ্বালানোর রেওয়াজ চলেই আসছে।

Dakini And Yogini

Who Are Dakini And Yogini

আর সেখান থেকেই বলা হয়, মা কালীর বাহন হলেন ডাকিনী ও যোগিনী। মা শ্মশানবাসিনী, তাইও ভূতেদের সঙ্গে তার ওঠাবসা। এখন অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে এই ডাকিনী যোগিনির উৎস কোথা থেকে? নানা রকমের পুঁথিপত্র ঘাঁটলে জানা যায়, কোথায় উৎস এই ডাকিনী এবং যোগিনীর। তবে তা নিয়ে রয়েছে নানা মতভেদও।

দেবী দক্ষিণা কালীর পূজাপদ্ধতি থেকে জানা যায় যে, মূল দেবতার পুজার আড়ম্বর শেষ হলে পুজা হয় তার সঙ্গে থাকা আবরণ দেবতাদের, যারা পুরাণমতে হলেন মূল দেব-দেবীর পার্শ্বচর, পারিষদ কিংবা সহচর। দেবী কালীরও তেমনই আবরণ দেবতা আছেন। তারাই ডাকিনী আর যোগিনী। বিধি অনুযায়ী কালীপুজোর সময়ে এদেরও পঞ্চোপচারে পুজো করা হয়।

Dakini And Yogini

অন্যদিকে শব্দের বুৎপত্তিগত দিক থেকে দেখতে গেলে ‘ডাক’ শব্দটি এসেছে তিব্বতি ভাষা থেকে, যার অর্থ হল জ্ঞান। অর্থাৎ এই ডাকিনী হলেন একজন জ্ঞানী নারীর প্রতীক। আবার যোগিনী এসেছে যোগী শব্দটির থেকে। আর যোগী শব্দটির অর্থ হল উপাসক বা অনুচর। এখানে মাতৃধর্মের উপাসক ও মাতৃমুর্তির অনুচর যোগিনী।

আরও পড়ুন : দীপাবলীর রাতে প্রদীপ জ্বালানো হয় কেন? জানুন দীপাবলীর অজানা কাহিনী

Dakini And Yogini

আরও পড়ুন : মা কালী নগ্ন কেন? কেন নগ্নরূপে পূজিত হন মা কালী?

আরও বলা হয়, কোনও সনাতনী শাস্ত্র বা পুরাণে মা কালীর এই দুই পার্শ্বচরের কোনও ধ্যানমন্ত্র না পাওয়ার কারণই হল এরা বাঙালীর নিজস্ব তন্ত্রধর্মের অতন্দ্র প্রহরী। আবার অনেকের মতে, গৌড়বঙ্গে মা কালীর উপাস্য রূপ এসেছিল পাল যুগে সহজ তান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রে। রাজা মহীপাল ও নয়পালের সময়ে ওই আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন নারোপা ও নিগুডাকিনী। ব্রজযোগিনীর দুই ধারে পাল যুগ থেকে যে দুই সহচর থাকেন, তারা বজ্রবর্ণনী ও বজ্রবৈরোচনী প্রতিফলন বহন করেন এখনও।