বলিউডে কাজ পেতে ইন্দ্রাণী হালদারকে যৌন সঙ্গমের প্রস্তাব, প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক অভিযোগ

বলিউডের (Bollywood) বিরুদ্ধে কাস্টিং কাউচের (Casting Couch) অভিযোগ উঠেছে বহুবার। উঠতি মডেল থেকে শুরু করে নামিদামি অভিনেত্রীরা বারবার প্রযোজক এবং পরিচালকদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন। বাঙালি অভিনেত্রী ইন্দ্রানী হালদারও (Indrani Halder) তার কেরিয়ার শুরুর প্রথম ধাপে বলিউডে গিয়ে কাস্টিং কাউচের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। আজ এত বছর বাদে মুখ খুললেন তিনি।

বর্তমানে বাংলা টেলিভিশন এবং টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ইন্দ্রানী হালদার যেদিন মুম্বাইতে প্রথম পা রেখেছিলেন, সেদিনই জীবনে প্রথমবার কাস্টিং কাউচের অভিজ্ঞতা হয়েছিল তার। তখন তার বয়স সদ্য ২০ পেরিয়েছে। সেই সময় ইন্দ্রানীর হাতে টলিউডের পাশাপাশি বলিউড থেকেও এসেছিল কাজের সুযোগ। ছবির জন্য ডাক পেয়ে মুম্বাইতে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তিনি। আর সেখানে গিয়েই ঘোর বিপদে পড়তে হয়েছিল তাকে।

সম্প্রতি ‘উন্মেষ’ নামের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ৩০ বছর আগের সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন ইন্দ্রানী। তিনি বলেছেন, ‘‘তখন আমার ২০ বছর বয়স বম্বে গিয়েছিলাম একটা ছবি করতে, একদম জীবনের প্রথমদিকের ছবি। সেই সময় আমি এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই।’’ তিনি জানিয়েছেন, সেই সময় সকালের ফ্লাইটে তাকে মুম্বাইতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তবে তার বাবার জন্য বিকেলের টিকিট বুক করা হয়।

এরপর ইন্দ্রানী মুম্বাইতে উপস্থিত হলে তাকে দামি কোনও হোটেলে না রেখে লিঙ্কিং রোডের একটি সাধারণ মানের হোটেলের রুমে রাখা হয়। তখন থেকেই সন্দেহ হতে শুরু করে ইন্দ্রানীর। এরপর আচমকাই প্রযোজক ফোন করে জানান তিনি দেখা করতে আসছেন। এতে বেশ ঘাবড়েই গিয়েছিলেন ইন্দ্রানী। রুমে পৌঁছতেই মুম্বাইয়ের সেই নামী প্রযোজক ইন্দ্রানীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে বসেন। তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন।

ইন্দ্রানী আরও বলেছেন, ‘‘আমি বারবার করে বলেছিলাম এটা করবেন না প্লিজ। আমি এভাবে কখনও কাজ পাই নি পেতে চাইও না।’’ ইন্দ্রানীকে প্রযোজক বলেন, ‘‘তুমি বাঙালি হিরোইন,তোমাকে আমি অনেক বড় অভিনেত্রী তৈরি করব বলিউডের, অনেক নামীদামী হিরোইনরা আমার পায়ের তলায় থাকে”। তবে ইন্দ্রানীও বলেন, ‘‘হতে পারে বড় বড় হিরোইন আপনার পায়ের তলায়। কিন্তু আমি এভাবে কাজ করিনি, আমাকে কলকাতা থেকে ডেকে এনে কাজ দিয়েছেন কোনও সমঝোতা বা কম্প্রোমাইজ আমি করব না।’’

তবুও ওই প্রযোজক নিজের জামাকাপড় খুলতে শুরু করে। এই সময় ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ইন্দ্রানী। তবে আচমকা প্রযোজকের ফোন বেজে ওঠে। ফোনটি করেছিলেন তার স্ত্রী। এইসময় ওই প্রযোজক ইন্দ্রানীকে চুপ করে থাকতে বলেন। প্রযোজক ফোন ধরতেই ইন্দ্রানীও বুদ্ধি করে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দেন। তারপর জোরে জোরে কাশতে শুরু করেন। কাশির শব্দ শুনে ফোনের ওপ্রান্তে প্রযোজকের স্ত্রীর জোরাজুরিতে বাধ্য হয়েই প্রযোজককে তার সঠিক অবস্থান জানাতে হয়। হোটেল রুম থেকে যাওয়ার আগে প্রযোজক বলে যান, “তোমার কিছু হবে না, তুমি একদম বেকার”।

এরপরে ইন্দ্রানী বলেন, “সেদিন উনি আমার কনফিডেন্সটা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমি কোনওদিন কম্প্রোমাইজ করে হিরোইন হতে ইন্ডাস্ট্রিতে আসিনি”। অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘‘ওই প্রযোজকের নামটা নিলাম না কারণ উনি আর বেঁচে নেই। তবে পরবর্তীকালে যখনই ওনার মুখোমুখি হয়েছি উনি কোনওদিন চোখ তুলে আমার দিকে তাকাতে পারেননি”।