পুলওয়ামা হামলার পর প্রত্যাঘাত ভারতের। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান পাক জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে লেজার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার সাহায্যে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী ফের শক্তি বাড়াল। নয়া পদক্ষেপ নিয়ে হুঙ্কার ছাড়ল ভারতের বিরুদ্ধে।
প্রায় ২১ মিনিট ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে ছিল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানগুলি। ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, চকোটিতে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে রাত ৩টে ৫৮ মিনিট থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত। মুজাফ্ফারাবাদে বোমাবর্ষণ চলে রাত ৩টে ৪৮ মিনিট থেকে ৩টে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। এই হামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জন নিহত হয়েছে দাবি ভারতের। পাকিস্তান যদিও কোনও হতাহতের কথা স্বীকার করেনি।
এই অভিযান প্রসঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। যদিও তাঁর দাবি, পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে যায়। তিনি জানিয়েছেন, মুজফ্রাবাদ থেকে ভারতীয় বিমানগুলি প্রবেশ করে। তাঁর দাবি, পাকিস্তানের জবাবে বালাকোটে বোমা ফেলেই চলে যায় ভারতীয় বিমানগুলি। এই হামলায় বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি। এই অভিযানের পর আন্তর্জাতিক সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
পুলওয়ামা-কাণ্ডে প্রত্যাঘাতের পর পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়ে গিয়েছে ভারতের। ভারত পর পর তিনটি ঘাঁটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে উড়িয়ে দিয়েছে বায়ুসেনা। এই অবস্থায় নিজেদের তৈরি রাখতে সেনার অস্ত্রাগারে আনা হয়েছে দুটি মিসাইল।
আর তাই যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখে সবদিক থেকে তৈরি থাকছে ভারত। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে সরানো হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। হাসপাতালগুলিকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পালটা প্রস্তুতি পাকিস্তানের তরফেও কিন্তু চলছে।
India successfully test fires quick reaction surface to air missile off the coast of Odisha. Two missiles were tested by the DRDO for the missile being developed for the Army. pic.twitter.com/5W9Hjmj45L
— ANI (@ANI) February 26, 2019
মঙ্গলবারই ওড়িশা উপকূল থেকে বঙ্গোপাসাগরে পরীক্ষামূলকভাবে উত্ক্ষেপণ করা হয়েছে দুটি মিসাইল। এই দুটি মিসাইল তৈরি করেছে ডিআরডিও, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও ভারত ডায়নামিক্স লিমিডেট। এই মিসাইল দুটি কাজ করতে সক্ষম যেকোনও আবহাওয়ায়। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে যে কোনও লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে মিসাইল দুটি।
এই ধরনের অত্যাধুনিক মিসাইল আগেও দুবার উত্ক্ষেপণ করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি ও তারপর ওই বছরেরই ৩ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে উত্ক্ষেপণ হয় মিসাইলের। ফাইটার জেট সুখোই ৩০ এমকেআইয়ের জন্য মিসাইলের পরীক্ষামূলক উত্ক্ষেপণ হয়।
Read More : পাকিস্তানকে সবক শেখানো মিরাজ সম্পর্কে জেনে নিন কয়েকটি অজানা তথ্য
Smt @nsitharaman congratulates @DRDO_India and the Defence Industry for successful test-firing of two indigenously-developed Quick Reaction Surface to Air Missiles(QRSAM). The missile have radars with search on move capability. The project was sanctioned by the govt in July 2014. pic.twitter.com/qZIjirM9FQ
— Raksha Mantri (@DefenceMinIndia) February 26, 2019
পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিতে মঙ্গলবার ভোররাতে পাল্টা হামলা চালানো হয়। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে জইশের সবথেকে বড় জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় ভারতের অস্ত্রাগারে দুটি অত্যাধুনিক মিসাইলের প্রবেশ নিশ্চিতভাবেই শক্তি বাড়াবে দেশের প্রতিরক্ষায়।