বজ্রপাত থেকে বাঁচতে আপনার কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়

ঝড় উঠলে বাইরে থাকলেই বিপদ, বাড়ির লোকেদের চিন্তা  বিষয় হয়ে দাঁড়ায়,প্রায়ই ঝড়ে বিদ্যুতপিষ্ঠ হয়ে বা বাজ পড়ে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসছে। খোলা মাঠে থাকলে তো ঘোর বিপদ। বজ্রপাত চলাকালীন সাবধানতা অবলম্বনের কথা ঘোষনা করা হলেও অনেক সময় কাজে আসে না। আমাদের দেশেও এ মৌসুমে বজ্রপাতের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।

বজ্রপাত হলে যা যা করনীয়

খোলা স্থান পরিত্যাগ-

ঝড়ের সময় ও বজ্রপাতের পূর্বাভাস পেলেই খোলা স্থান পরিত্যাগ করা উচিত। এবং উঁচু স্থানে থাকা উচিত নয়।

গাছপালা ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে দূরে থাকা-

বাজ পড়া মানেই বিদ্যুতের সংস্পর্শে সমস্যা। তাই এই সময় বিদ্যুত্ লাইন বা গাছপালার স্থান থেকে দূরে থাকা দরকার। গাছ থাকলে বজ্রসপাতের সময় বিপদ ঘনিয়ে আসে।

Photo : WikiHow

জানালার সামনে থাকা উচিত নয়-

বাজ পড়ার আগে জানালা বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ, জানালার কাছাকাছি থাকলে বিপদ অবসম্ভাবী।

ধাতুর জিনিস স্পর্শ না করা-

ধাতুর সঙ্গে বিদ্যুতের সংযোগ ঘটলে মহা বিপদ। তাই বাড়ির মধ্যেকার কোনও ধাতব জিনিসের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকা উচিত।

Photo : WikiHow

বিদ্যুতর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে-

বিদ্যুতের সংস্পর্শে বা বিদ্যুতের সংযোগ থেকে দূরে থাকতে হবে। বিদ্যুতের প্লাগ খুলে রাখতে হবে। কারণ বজ্রপাতের সংস্পর্শে বৈদ্যুতিক লাইন পুড়ে যেতে পারে। তাই আগেই প্লাগ খুলে রাখতে হবে।

গাড়ির ভেতর থাকলে

বজ্রপাতের সময় গাড়ির ভেতরে থাকলে কোনো কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নেয়া যে পারে। গাড়ির ভেতরের ধাতব বস্তু স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

Source

জল থেকে দূরে থাকা-

বজ্রপাত জলকে খুব তাড়াতাড়ি টেনে নেয়। এবং বিপদ ঘটে যায়ন তাই বিদ্যুত চমকালে পুকুর বা জলাশয়ে থাকা উচিত নয় কিংবা বাড়ির মধ্যেকার জলের বালতিতেও হাত ডোবানো উচিত নয়।

Photo : WikiHow

নিচু হয়ে বসে পড়তে হবে –

বাজ পড়লে যদি খোলা স্থানে থাকা হয় তাহলে মাটিতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়লে মাটির সঙ্গে বিদ্যুতের সংযোগে বিপদ হয়। তাই কখনই শুয়ে পড়া যাবে না।

Photo : WikiHow

রবারের বুট পরিধান

বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। এ সময় বিদ্যুৎ অপরিবাহী রাবারের জুতা সবচেয়ে নিরাপদ।

Photo : WikiHow

বজ্রপাতে আহত হলে

বজ্রপাতে আহত কাউকে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতোই চিকিৎসা করতে হবে। দ্রুত চিকিৎসককে ডাকতে হবে। হাসপাতালে নিতে হবে। একই সঙ্গে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে এ বিষয়ে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ জরুরি। যা সহজেই জেনে নেয়া যেতে পারে ।

বজ্রপাত থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার কিছু টিপস 

  1. বিদ্যুতের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।
  2. মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করতে হবে। মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে হবে।
  3. জানালা দরজা বন্ধ করে রাখতে হবে।
  4. দাহ্য বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।
  5. আগুন জ্বালানো উচিত নয়।
  6. গাছ পালার নীচে না দাঁড়িয়ে বন্ধ জায়গায় প্রবেশ করা উচিত।
  7. ছাতার হাতল, স্টিলের রড, কলের হাতল, সিঁড়ির হাতল থেকে দূরে থাকতে হবে।
  8. ঘিঞ্জি এলাকা তড়িঘড়ি ত্যাগ করতে হবে। এতে বিদ্যুত পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  9. জলাশয়ের ধার থেকে সরে আসতে হবে।
  10.  ঝড় এবং মেঘের গর্জন ও বিদ্যুত চমকানোর আগেই ঘরের মধ্যকার বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ রাখুন।
  11.  মোবাইল ফোনে কথা বলা বন্ধ করে ফোন বন্ধ রাখতে হবে। কারণ মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই বিদ্যুতের চমক মিশে গিয়ে বিস্ফোরন ঘটায় তাতে মানুষের মৃত্যু অবধি ঘটতে পারে। এবং ইন্টারনেট বন্ধ রাখা দরকার।