মাসের পর মাস ভাল থাকবে কাঁচা শাকসবজি, জেনে নিন সংরক্ষনের উপায়

গরমকালে শাকসবজি (Vegetables) বেশি দিন ভালো রাখা যায় না। আবার কর্মব্যস্ততার দিনে প্রতিদিন বাজার যাওয়াও একপ্রকার অসম্ভব। কাজেই বাঙালির ভরসা হয়ে উঠছে রেফ্রিজারেটর। কিন্তু ফ্রিজেও দীর্ঘদিন শাকসবজি ভাল রাখা যায় না, উপরন্তু খাদ্যের গুণমান কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাহলে দীর্ঘ সময়ের জন্য কাঁচা শাকসবজি সংরক্ষণ করতে কোন উপায় অবলম্বন করবেন (How To Keep Vegetables Fresh For Long Time)? উত্তর রইল এই প্রতিবেদনে।

সবজি সংরক্ষণের উপায় : বাজার থেকে আলু, পেঁয়াজ, রসুন কিনে আনার পর প্রথমেই ভাল এবং নষ্ট বা নষ্ট হতে পারে এমন সবজি আলাদা করে ফেলুন। এরপর ভাল সবজি একসাথে একটি বেতের ঝুড়ির মধ্যে তুলে খাটের নিচে রেখে দিন। পেঁয়াজ রসুন দীর্ঘদিন ব্যবহারের জন্য ধুয়ে বেঁটে নিয়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।

শাক সংরক্ষণের উপায় : যতই যত্ন নিন না কেন বাজার থেকে কিনে আনার পর শাক বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। তবে বাজার থেকে কিনে আনার পর বেছে নিয়ে একটি পলিথিন বা নিউজ পেপারের কাগজের মধ্যে মুড়ে নরমাল ফ্রিজে রেখে দিলে কিছুদিন ভাল থাকবে। লেটুস পাতা, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা এবং কারিপাতা এইভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এক কিংবা দুই দিনের জন্য শাক সংরক্ষণ করে রাখতে হলে বাতাস চলাচল করে এমন অন্ধকার জায়গাতে রেখে দিতে হবে।

কাঁচালঙ্কা সংরক্ষণের উপায় : কাঁচালঙ্কা সংরক্ষণের জন্য প্রথমেই বাজার থেকে আনার পর বোঁটা ছাড়িয়ে ফেলতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ বাতাসে রেখে দিতে হবে। এবার একটা প্লাস্টিকের ঝুড়ির মধ্যে ভরে নিয়ে ফ্রিজের নরমালে রেখে দিলেই ২ সপ্তাহের জন্য আরামসে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কাঁচালঙ্কা কখনও ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করবেন না। এতে লঙ্কার স্বাদ এবং গুনমান কমে যায়।

শীতকালের সবজি সংরক্ষণের উপায় : গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিমের মত শীতকালীন সবজি পরের মরসুম আসা পর্যন্ত খাওয়ার জন্য সংরক্ষন করে রেখে দিতে পারেন খুব সহজেই। এর জন্য প্রথমে সবজি সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে এয়ারটাইট বক্স অথবা জিপ লক ব্যাগে ভরে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখে দিতে হবে। এভাবে দিনের পর দিন শীতকালীন সবজি খেতে পারবেন।

ক্যাপসিকাম, টমেটো, ব্রকলি, মূলা, বরবটি সংরক্ষণের উপায় : এই সবজিগুলো সংরক্ষন করতে চাইলে প্রথমে ছোট ছোট পিস করে কেটে নিতে হবে। তারপর ভালোমতো ধুয়ে জল ঝরিয়ে জিপ লক ব্যাগে ডিপফ্রিজে রেখে দিতে হবে। কয়েক ঘন্টা পর একটা বের করে হালকা নেড়ে চেড়ে রেখে দিন যাতে সবজির টুকরো একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে না যায়। এভাবে দীর্ঘ সময় ধরে এই সবজিগুলো খাওয়া যাবে এবং গুণগত মানও ঠিক থাকবে।

করলা, ঝিঙে, পটল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল সংরক্ষণের উপায় : এই সবজিগুলো প্রথমে লবণ মেশানো জলে ধুয়ে নিন। সবজির বোঁটা ছাড়ানোর দরকার নেই। পাতলা কাপড়ে সবজিগুলো মুড়ে নিয়ে বড় সাইজের জিপ লক ব্যাগে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। এইভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত টাটকা থাকবে সবজি।

কাঁচকলা, মাশরুম, মিষ্টি আলু সংরক্ষণের উপায় : প্রথমে সবজিগুলো ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে খোসা ছাড়িয়ে নিন। তারপর পাতলা স্লাইস করে কেটে লবণ মেশানো জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে জল ঝরিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। সবজির জল সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে একটা এয়ারটাইট বক্সে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন।

পাকা মিষ্টি কুমড়ো সংরক্ষণের উপায় : পাকা মিষ্টি কুমড়ো বড়ি বানিয়ে দীর্ঘদিন খেতে পারবেন।পেকে যাওয়া মিষ্টি কুমড়ো দিয়ে বড়ি বানিয়ে এক বছরেরও বেশি সময় সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এছাড়া চাল কুমড়ো কেটে মোরব্বা বানিয়েও রেখে দিতে পারেন। মোরব্বার মধ্যে পুষ্টিগুণ অটুট থাকে। কাঁচা চাল কুমড়ো গাছ থেকে কেটেই সঙ্গে সঙ্গে বোঁটার কাটা অংশে চুন লাগিয়ে রেখে দিলে কয়েক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।