নোটবাতিল প্রকল্প পেটিএম-এর কাছে হয়ে উঠেছিল ব্রহ্মাস্ত্র। চোখের পলকে মোবাইল, বিদ্যুতের বিল, ডিটিএইচ রিচার্জ, সিনেমার শোয়ের টিকিট বুকিং ইত্যাদি খুব সহজ তো বটেই এই অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতি মাসে কয়েকশো টাকা সাশ্রয় করতে পারেন।
এত ক্যাশব্যাক অফার, বাজার, বিল পে-র সুবিধা দিয়েও পেটিএম লাভ করছে কিভাবে? এই প্রতিবেদনে আমরা সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি।
মোবাইল রিচার্জ
যখন অ্যান্ড্রয়েড, স্মার্টফোন ছিল না সেই সময়টা মনে আছে? হ্যাঁ, এরাও বিনামাগনায় কিছু দিচ্ছে না। টেলকো কোম্পানিগুলির থেকে কমিশন পায় এই সংস্থা। পেটিএমে ফ্রি রিচার্জের ক্ষেত্রেও তাই। প্রতি রিচার্জে ২ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ হারে কমিশন পায় তারা। হয় সরাসরি টেলকো আপনার থেকে টাকা কাটছে নয়তো অক্সিজেন, ইউরনেট-এর মতো ভায়া মারফত টাকা দিতে হচ্ছে।
রিচার্জ সাইট থেকে প্রতি লেনদেনে রাজস্ব আসে ০.৫ থেকে ১ শতাংশ। বর্তমানে পেটিএমের ১০০ কোটির বেশি গ্রাহক আছে। ফলে এদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে অসুবিধা হয় না।
বিভিন্ন বীমা কোম্পানী থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হোটেল, বিনোদন পার্কগুলি এখন পেটিএমের সঙ্গে যুক্ত। কমিশনের ভিত্তিতে তারাও কুপন দেয়। এই থেকেও বিশাল অঙ্কের টাকা ঘরে তোলে এই সংস্থা।
প্রিপেড ওয়ালেট
অ্যাড মানি এবং ক্যাশব্যাক এই দুটি অফার চলে পেটিএমে। ই ওয়ালেটে টাকা রাখা মানে ‘এস্ক্র অ্যাকাউন্টে’ টাকা সংরক্ষিত রাখা। সুদের হারও সাধারণ ব্যাঙ্কের প্রায় সমান। এখানেই আসল মজা, সুদ থেকে প্রাপ্ত টাকা পেটিএম ব্যবহারকারী পান না। অথচ সেই টাকা আসে পেটিএম কোম্পানির কাছে।
বোঝা যাচ্ছে নিশ্চয় পেটিএম কোনও টেস্ট ম্যাচ খেলছে না বরং প্রথমদিন থেকেই ধুম ধাড়াক্কা টি টোয়েন্টি ব্যাটিং করছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সূত্র অনুযায়ী গত ২০১৪-১৫ সালে পেটিএম ভারতীয় বাজার থেকে ৩৭২ কোটি টাকা লোকসান করেছে। তাহলে এরপরেও এত ক্যাশব্যাক দিচ্ছে কি করে?
পেটিএমের মতো ই ওয়ালেট প্রদানকারী সংস্থাগুলি গ্রাহকের থেকে মূলধন নিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার, ক্যাশব্যাক এবং ডিস্কাউন্টের মতো প্রকল্পগুলি চালায়।
জ্যাক মা (বিজনেস টাইকুন)-র মতো কোনও কাল্পনিক গৌরী সেন থাকলে পেটিএমে লাভ, নচেৎ নয়।