শিরোনাম পড়ে নিশ্চয় ঘাবড়ে গেলেন। আর ঘাবড়াবেন নাই কেন। বিয়ে ঘরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সুখে বাকি জীবনটা দিব্যি কাটিয়ে দিতে চান সকল পুরুষই। কিন্তু স্ত্রীর জ্বালাতনে আবার অনেককেই আত্মহ্ত্যা বা ডিভোর্সও দিয়ে দিতে হয় সময় বুঝে। তবে সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে। স্বামী-স্ত্রীর প্রেম ভালোবাসা সাত জন্মের বন্ধন হলেও অনেক সময় তা টিঁকে না। কিন্তু ইতিহাস ফিরে স্ত্রীর প্রতি প্রেম -প্রীতি কথা জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই সম্রাজ শাহজাহানের আমলে, যিনি স্ত্রীর মৃত্যুর শোকে বিহ্বল হয়ে গিয়ে দুবছর সভা স্থগিত রেখেছিলেন। আবার স্ত্রীর কবরস্থানের ওপর বানিয়ে ফেলেছিলেন আস্ত একটা তাজমহল। কিন্তু আধুনিক যুগ, স্ত্রীর প্রতি প্রেম একটু আলাদা। তবে প্রেম নয় স্ত্রীর অত্যাচারে অত্যাচারিত হয়ে দশ বছর জঙ্গলে কাটিয়েছিলেন এই ব্যক্তি।

ম্যালকম অ্যাপলগেট, যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা। বিয়ের আগে ভালোই চলছিল তার জীবন। কিন্তু বিপত্তিটা শুরু হয় বিয়ের পরেই। বিভিন্ন উপায়ে তার জীবনকে নাকি একেবারে অস্থির করে তোলে তার স্ত্রী। তাই স্ত্রীর সঙ্গ ত্যাগ করে পালিয়ে যান জঙ্গলে। জঙ্গলে কাটিয়ে দেন ১০ বছর। সম্প্রতি লন্ডনের ‘ইমাউস গ্রিনউইচ’ নামে একটি বাস্তুহীনদের আশ্রয়দাতা সংস্থাকে এভাবেই তার জীবনের গল্পটা জানিয়েছেন ষাটোর্ধ্ব এই বৃদ্ধ।যুক্তরাজ্যের এই ঘটনায় তাক লেগেছে গোটা বিশ্বের। ম্যালকমে নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি তাঁর জীবনের কাহিনী জানিয়েছেন লন্ডনের ইমাউজ গ্রিন উইচ নামে একটি সংস্থাকে। পেশায় মালি ম্যালকম ওই সংস্থাকে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

‘ডেইলি মেইল’ জানিয়েছেন, এজবাস্টনে স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম দেখা হয় তার। তারপর বার্মিংহামে তাদের বিয়ে হয়। প্রথম তিন বছর সব ঠিকই ছিল। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় সমস্যা। রোজ ঝগড়া, কথা কাটাকাটি চলতেই থাকে। একপর্যায়ে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই ব্যক্তি।
যেদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ম্যাকলম, সেদিন বাড়ির সমানে মোটর সাইকেলটি তালা দেওয়া অবস্থায় ছিল। তাই হেঁটেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তিন সপ্তাহের প্রায় অর্ধেকটাই হেঁটে যান তিনি। কিংস্টোনে যাওয়ার পর সেখানকার একটি বাগান পরিচর্যার কাজে লেগে যান ম্যাকলম। সেখানে ধীরে ধীরে একটি বাগান গড়ে তোলেন। যেখানে কাটে তার দীর্ঘ ১০ বছর।

সম্প্রতি দশ বছর পর ম্যালকম তাঁর বোনকে ফোন করেছিলেন, হঠাতই, দাদার ফোন পেয়ে বোন চমকে যান। কারণ, পরিবারের লোকজন ধরেই নিয়েছিলেন ম্যালকম আর নেই। ম্যালকম জানান, বিয়ের পর তার স্ত্রী চাইতেন না সে বাসার বাইরে থাকুক। বেশি কাজ করলেও তার স্ত্রী রেগে যেত। আর তার আমার ওপর প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলছিল।
এই ঘটনা গোটা সমাজকে ভাবাচ্ছে। আসলে বর্তমানে মনের অমিলে বিবাহ-বিচ্ছেদ, ঝগড়া বেড়েই চলেছে। যার প্রভাব পড়ছে সন্তানে ওপর। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া বেশির ভাগ বাবা-মায়ের সন্তানরাও একই পথে হাঁটে। সুইডেনের লুনড বিশ্ববিদ্যালয় ও ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া যায়।
ম্যালকমও স্ত্রীর সমস্যা খুঁজতে গবেষকরা দম্পতির পরিবারের সমস্ত বিষয় খুঁটিয়ে দেখছেন। তাঁদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে জিনগত সমস্যা কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন গবেষকরা। স্ত্রী ছাড়া বর্তমান জীবনে বেশ ভালো আছেন বলে জানান অ্যাপলগেট। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার জন্য অনুদান সংগ্রহ করে বেড়ান তিনি। শেষ পর্যন্ত বিয়ের আগের জীবন ফিরে পেয়েছেন তিনি বলে জানান তিনি।