কাস্টিং কাউচ থেকে বি-গ্রেড সিনেমায় অভিনয়, বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী এখন বিজেপি নেত্রী

বলিউডের (Bollywood) ‘খাল্লাস গার্ল’ ইশা কপিকার (Isha Koppikar) বলিউডের পাশাপাশি তামিল, তেলেগু, কন্নর, মারাঠি ইত্যাদিতেও অভিনয় করেছেন। এই বছরেরই জানুয়ারি মাসে বিজেপিতে যোগদান করেছেন তিনি। ট্যালেন্ট থাকা সত্বেও বলিউডের প্রথম সারির নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি তিনি, কিন্তু রাজনীতির আঙিনায় লম্বা সময়ের জন্যই ইনিংস খেলার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকরীর (Nitin Gadkari) উপস্থিতিতে  যোবছর গ দেওয়াতে র পরদিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি দলের পরিবহণ শাখার মহিলা বিভাগের সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে তাঁকে। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক তার জীবনের বিভিন্ন দিক।

 

   

মেঙ্গালুরুর এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। পরিবারের কেউই অভিনয় জগতের সাথে যুক্ত ছিলেন না, বরং সবাই শিক্ষা জগতের মানুষ। ইশা নিজেও মেধাবী ছিলেন। জীববিদ্যা নিয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করার সময়ই ১৯৯৫ সালে মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় নাম লেখান তিনি এবং সেখানে মিস ট্যালেন্ট এর মুকুট জিতে নেন।তারপরে বলিউডে আসা।

কেরিয়ারের শুরুর দিকে ল’রিয়েল, পন্ডস, কোক ইত্যাদি অনেক ব্র্যান্ডের হয়ে মডেলিং করেন তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে কোনো নামী অভিনেতার সূত্রে কাস্টিং কাউচের মুখোমুখি হন তিনি, যদিও সেই অভিনেতার নাম তিনি প্রকাশ করেননি।প্রথম কাজ করেন হৃত্বিক রোশনের সাথে ফিজা ছবিতে, তবে সেটি একটি ছোট্ট চরিত্রে। নায়িকা হিসেবে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ সুনীল শেঠির বিপরীতে ‘ইশক পেয়ার অউর মহব্বতেঁ’ ছবিতে।

প্রথম থেকেই তার লম্বা শারীরিক গঠন এবং পর্দায় উপস্থিতি দর্শকদের নজর কেড়েছিল। প্রকাশ ঝা এর একটি ছবিতে আইটেম ডান্স এও দেখা যায় তাকে।কিন্তু তিনি যে বলিউডে লম্বা রেসের ঘোড়া তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন গোবিন্দর সাথে ‘আমদানি আঠ্ঠানি খরচা রুপাইয়া’ ছবিতে। “খাল্লাস গার্ল” হিসেবে তার পরিচিতি গড়ে ওঠে রাম গোপাল ভর্মা পরিচালিত ছবি ‘কোম্পানি’তে অভিনয় করার পরে। তার পরেই ‘মোস্ট এক্সাইটিং নিউ ফেস’ পুরষ্কার জেতেন তিনি।পরবর্তীতে বেশ কিছু বি গ্রেড ছবি (যেমন হাসিনা) অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে।

উঠতি সময় কর্ণ রাজদা পরিচালিত ‘গার্লফ্রেন্ড’ ছবিতে অভিনয় করে বিতর্ক জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই ছবিতে সমকামী মহিলার চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি, করেন বেশ কিছু সাহসী দৃশ্য।তারপর কেরিয়ার ঊর্ধ্বগামী।শুধু বলিউডে নয়, একই সাথে দক্ষিণী ছবিতেও তার রাজত্ব বিস্তার শুরু হয়। তার ঝুলিতে আছে একটি জাতীয় পুরষ্কার, যেটি তিনি পিঞ্জর ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য পান।

এছাড়া দিল কা রিশতা, ডরনা মানা হ্যায় এর মতন ছবিতে প্রশংসা কুড়িয়ে নেন তিনি। এরপর তার জীবনে আসে অন্যতম বড় ব্রেক যখন ডনের প্রেমিকা হিসেবে অভিনয় করার অফার পান তিনি। বিপরীতে, কিং খান। তারপর চেতন ভগতের ‘ওয়ান নাইট অ্যাট কল সেন্টার’ অবলম্বনে তৈরি ছবি হ্যালো তে কাজ করেন। এতকিছুর পরেও বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের তালিকায় তার নাম আসেনি।

প্রেম জীবনে তিনি ভেঙেছেন বার বার। বলিউড অভিনেতা ইন্দ্র কুমারের সাথে প্রথম প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়,কিন্তু বিয়ে হয়নি তাদের। সোনালের সাথে বিয়ে হয় ইন্দ্রর। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে যখন ইন্দ্র কুমারের মৃত্যু হয় তখন তার স্ত্রী জানান যে বিয়ের সময় থেকেই তিনি জানতেন, ইশাকে কোনোদিন ভুলতে পারেননি ইন্দ্র। এরপর প্রতি জিন্টার সূত্রে তার আলাপ হয় হোটেল ব্যবসায়ী টিমি নারাংয়ের সাথে। পরিচয়ের পরে একে অপরকে মনে ধরলে ২০০৯ সালে জানুয়ারি মাসে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তারা। তারপর থেকে খুব একটা সিনেমা জগতে তাকে দেখা যায়নি। তবে রাজনীতিতে নিজের জায়গা বানিয়ে নিতে চান তিনি।