অতিমারীতে বন্ধ উপার্জন, এবার অনেক শিল্পীকেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হবে : রুপঙ্কর বাগচী

রাজ্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। অতিমারীর প্রভাবে ফের থমকে গেল বিনোদনের দুনিয়া। রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে জমায়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্যের কথা ভেবে তাই বাতিল হয়ে যাচ্ছে একের পর এক মাচা, মঞ্চানুষ্ঠান। বেজায় বিপাকে পড়েছেন শিল্পীরা। তাদের দিন চলবে কীভাবে? ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বাংলার গায়ক শিল্পীরা। বাংলার শিল্পীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত রূপঙ্কর বাগচী (Rupankar Bagchi), রুপম ইসলাম (Rupam Islam), অনুপম রায় (Anupam Roy), মনোময় ভট্টাচার্যরা (Monomoi Bhattacharya)।

আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হতাশ মনোময় বলেন, ‘‘আমি কার্যত হতাশ। জানি না, আর কত অনিশ্চয়তার দিকে মঞ্চশিল্পী এবং বাদ্যযন্ত্রীদের ঠেলে দেবে এই অতিমারি।’’ তার দাবি, নিয়মের শিথিলতায় সবার বেপরোয়া মনোভাবের ফলাফল আজকের এই দিন। বড়দিন, বর্ষবরণে চড়ুইভাতি, পার্কস্ট্রিটে জমায়েত, চিড়িয়াখানাতে ভিড়, জমায়েতের ফলশ্রুতিতে আজ তেড়ে আসছে ওমিক্রন। অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে তিনি জানান ‘‘ইতিমধ্যেই আমার একাধিক শো বাতিল হয়েছে। এ ভাবে কত দিন পুঁজি ভাঙিয়ে খাব? কত সঞ্চয় থাকতে পারে এক জন মানুষের?’’

পরিস্থিতি দেখে শুনে তিতিবিরক্ত হয়ে পড়েছেন রূপঙ্কর বাগচী। তিনি বলেন, ‘‘আমার পর পর কয়েকটি শো বাতিল। আর কিচ্ছু ভাবতে পারছি না। বিরক্ত লাগছে।’’ তার দাবি যদি এমনটা চলতে থাকে তাহলে গান-বাজনা ছেড়ে শিল্পীদের অন্য পেশা বেছে নিতে হবে। নতুন পেশার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলে তারা টিকে যাবেন, বাকিদের আত্মহননের পথই বেছে নিতে হবে! এই পরিস্থিতিতে চিন্তিত অনুপম রায়ও। আফসোসের সুরে তিনি বলেন, ‘‘কী বলব? কাকে দোষ দেব? মনে করছি, সবই আমার কপাল! ডিসেম্বর থেকে সব কিছুই আবার ছন্দে ফিরছিল। বেশ কিছু শো-ও করলাম। ফের যে-কে-সেই অবস্থা।’’ তবে তিনি আশাবাদী, ওমিক্রন ততটা ভয়াবহ নয় শুনে।

রুপম ইসলামের ব্যান্ড ‘ফসিলস’ এর পাঁচটি শো করার কথা ছিল রাজ্যজুড়ে। সবকটি ক্যানসেল করতে হয়েছে। রুপমের কথায়, ‘‘আমরা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সব শো-এ রাজি হইনি। যে ক’টি নিয়েছিলাম, সে ক’টিও বাতিল করতে হয়েছে। এগুলো হলে ভুগতেন জনসাধারণ। এবং আমরাও বিরাট ঝুঁকির সম্মুখীন হতাম। ফলে শো বন্ধ করা ছাড়া অন্য রাস্তা নেই।’’ উৎসবের আগে সবাই যদি পথে না নামতেন তাহলে এটা হতো না। সাধারণের উপার্জন, শিল্পীদের অস্তিত্ব নিয়ে টানাটানি হতো না।