জানেন কি অতীতে কোন কোন ব্যক্তি পদ্ম সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন ?

ভারত সরকারের প্রদত্ত সবচেয়ে বড় সম্মান হল পদ্ম সম্মান।সারা জীবনের কর্মের স্বীকৃতি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সাহিত্য, বিনোদন, গবেষনা, সমাজ সেবা। প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের রাত্রে পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হয়।এই সম্মান যেমন সেই ব্যক্তির কাজের সরকারি স্বীকৃতি তেমনি তার অহংকারের বিষয় বা পরিবার পরিজন, শুভাকাঙ্খীর গর্বের বিষয়।কিন্তু কিছু কিছু ব্যতিক্রমী ব্যক্তি আছে যারা হেলায় ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত সরকারের প্রদত্ত এই সর্বোচ্চ সম্মান।তারা কখনো কখনো তাদের কাজের স্বীকৃতি দেরিতে পাওয়ায় ক্ষোভে ত্যাগ করেছে এই সম্মান আবার কখনো যোগীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, নিজেকে রেখেছেন কাছের মধ্যেই। কর্মের সফলতা যেন তার পুরস্কার।সেবাই যেন তার ধর্ম।পুরস্কারের লোভ তার কাজের গরিমাকে কখনো ছোটো করতে পারে না। জেনে নি এমন কিছু ব্যক্তিদের যারা ত্যাগ করেছেন পদ্ম সম্মান।

Siddeswar Swami
Source : IndianExpress

সিদ্ধেশ্বর স্বামী

আরো পড়ুন: কারা কারা পেলেন এই বছরের পদ্ম-সম্মান ?
“ধর্মের মুক্তি মনের মধ্যে ঘটলে, তা ব্যক্তিকে নির্লোভী করে তোলে” এই নীতিকে যেন জীবন্ত করে তুলেছেন সিদ্ধেশ্বর স্বামী । কর্ণাটকের বিজয়পুরের ধর্মসাধক ,সংস্কারক বাবা।যাকে উত্তর কর্ণাটকের” জীবন্ত ভগবান “বলেও ডাকা হয়। তার ধর্ম প্রচারক প্রতিষ্ঠানের নাম জন যোগাশ্রম। যিনি মানুষকে সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা করেন জীবনের অর্থ।তার আশ্রমে এসে ,তার বাণী শুনে মানুষ পাই শান্তিপূর্ণ ,সুস্থ জীবনের সঠিক সংজ্ঞা।’সিদ্ধান্ত শিরোমণি’নামে তিনি এক গ্রন্থ লিখেছিলেন মাত্র ১৯ বছর বয়সে।এই মহান দার্শনিক প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন ,তিনি সন্ন্যাসী মানুষ। তাকে আলাদা করে পুরস্কৃত করার দরকার নেই।তাই তিনি ভারত সরকার প্রদত্ত এই পুরস্কার নিতে অপারগ।যারা সাধক, তারা সাধনার মাধ্যমে মানুষের সকল প্রকার সমস্যার সঠিক পথ দেখাবে।তাদের নিজস্ব কিছু চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে না।

Selim khan
Source : DecanChronicle

সেলিম খান

আরো পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবস নিয়ে কিছু চমকপ্রদ তথ্য
বিখ্যাত সিনেমা শোলে, ডন, জঞ্জির প্রভৃতির সহচিত্রনাট্য লেখক ,ও অভিনেতা সলমান খানের পিতা সেলিম খান। ২০১৫ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিল ভারত সরকারের দ্বারা।কিন্তু তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন।তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন , তার ভারতীয় সিনেমার প্রতি অবদান ভারত সরকার প্রদত্ত এই পুরস্কারের থেকেও বেশি।তার কাজের স্বীকৃতি দিতে ভারত সরকার অনেক দেরি করেছে।তাই ক্ষোভে তিনি এই পুরস্কার ত্যাগ করেছিলেন।

Romila Thapar
Source : TheIndianExpress

রোমিলা থাপার

আরো পড়ুন : ভারতের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈনদল যাদের কথা জানলে আপনার গর্ব হবে
রোমিলা থাপার হলেন প্রখ্যাত মহিলা ঐতিহাসিক ও অনেক বিখ্যাত ইতিহাস গ্রন্থের লেখিকা ।তিনি জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের অধ্যাপিকা ছিলেন।তার লেখা বিখ্যাত বইগুলি হলো A History of India,Ancient Indian Social History প্রভৃতি।বর্তমানে তার বয়স ৮৬বছর।তিনি ১৯৯২ ও ২০০৫ সালে ভারত সরকার দ্বারা পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্য নাম ঘোষিত হয়। প্রতিবারই তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি তখনই এইরূপ পর্যায়ের কোনো পুরস্কার নেবেন যখন কোনো শিক্ষা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান তার কাজের সঠিক মূল্যায়ন করবে।

Sitara Devi
Source : NDTV

সিতারা দেবী

আরো পড়ুন : আমরা প্রজাতন্ত্র দিবস ২৬ শে জানুয়ারি পালন করি কেন ?
প্রখ্যাত কত্থক নৃত্যশিল্পী সিতারা দেবীকে যখন ২০০২ সালে ভারত সরকার পদ্মভূষণ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন তখন তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন।তিনি বলেন তার কাজের বিচারে এই পুরস্কার তাকে সম্মান জানানো নয়, তাকে অপমান করা হয়েছে এই সম্মান দিয়ে।তিনি ভারতরত্ন পুরস্কার ছাড়া অন্য কোনো পুরস্কার ভারত সরকার থেকে গ্রহণ করবেন না।

Kushbant Singh
Source : IndiaReads

খুশবন্ত সিং

আরো পড়ুন : সবসময় প্রেরণা জোগায় এমন ১০ সফল ব্যক্তির জীবনী
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক খুশবন্ত সিং ১৯৭৪ সালে ভারত সরকার থেকে পদ্মভূষণ পুরস্কার পেয়েছিলেন।পরে তিনি অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে অপারেশন ব্লু স্টারের জন্য প্রতিবাদ স্বরূপ ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে এই সম্মান প্রত্যাখ্যান করেন।

Ostad Vilet Khan
Source : YouTube

ওস্তাদ বিলায়েত খান

আরো পড়ুন : বিহার থেকে কোস্টারিকা, বলিউডে ঘা খেয়েও লাতিন আমেরিকায় সুপারস্টার
প্রখ্যাত সিতার বাদক ওস্তাদ বিলায়েত খান ১৯৬৪ সালে পদ্মশ্রী ও ১৯৬৮ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন।তিনি বলেছিলেন পুরস্কার প্রদানকারী কতৃপক্ষ তার প্রতিভা মূল্যায়ন করার যোগ্যতা রাখে না।পরে ২০০০সালে তাকে আবার পদ্ম বিভূষন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলে তা তিনি পুনরায় নিতে অস্বীকার করেন।তিনি এবার খানিকটা ক্ষোভে বলেছিলেন তিনি আর এমন কোনো পুরস্কার নেবেন না যা তার কাজের সঠিক সম্মান না হয়।তিনি বলেন যদি সিতারের জন্য কোনো বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তিনি তা প্রথমেই গ্রহণ করবেন।

Krishnaswamy Subramanian
Source : Bharat-Rakshak

কৃষ্ণস্বামী শুভ্রামনয়ম

আরো পড়ুন : ১৫০ টাকার মজুরিতে খেটে, আজ WBCS A গ্রেড অফিসার
প্রখ্যাত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ এই ব্যক্তি ১৯৯৯ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।কিন্তু তিনি এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেন।তিনি বলেন সাংবাদিক ও আমলাদের সরকারি পুরস্কার না নেওয়া উচিত।