রাতভর পড়েছিলেন শ্মশানে! মৃত ভেবে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করা হয় দেবকে

আজ থেকে প্রায় কয়েক দশক আগের ঘটনা। টলিউডের (Tollywood) সুপারস্টার দেব (Dev) তখন খুবই ছোট। ছোটবেলায় গাজনের মেলা দেখবেন বলে মুম্বাই থেকে মামার বাড়িতে এসেছিলেন ছোট্ট দেব। মামার বাড়ি গ্রামে। গ্রামের গাজনের মেলার প্রতি এহেন আকর্ষণই কার্যত তার পক্ষে মৃত্যুর পরোয়ানা হয়ে উঠেছিল! সম্প্রতি দেবের সেই হাড়হিম করা অভিজ্ঞতার কথা উঠে এলো নেটমাধ্যমে। যা শুনে রীতিমতো শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা।

ঠিক কী ঘটেছিল তার সঙ্গে? দেব তখন মামার বাড়িতে এসেছিলেন ছুটি কাটাতে। সেই সময় গ্রামে চলছিল গাজনের মেলা। তার সমবয়সী অন্যান্যদের সঙ্গে মিলে তিনিও গিয়েছিলেন মেলা দেখতে। মেলা দেখতে দেখতেই আচমকা জ্ঞান হারিয়ে বসেন তিনি। তার পরে কী কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গও জানেন না তিনি! পুরো একটা রাত অতিক্রম করে পরদিন বিকেলে জ্ঞান ফিরেছিল দেবের। সেই রাতটা শ্মশানে মড়ার মতোই পড়েছিলেন অভিনেতা!

একটি টক শো’য়ে অংশগ্রহণ করে দেব নিজে মুখে সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। উল্লেখ্য, শাশ্বত  চ্যাটার্জীর ওই শো’য়ে দেবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রুক্মিণী মৈত্রও। দেব জানাচ্ছেন, তিনি তখন এতটাই ছোট ছিলেন যে আজ সেই ঘটনা সম্পর্কে তার সবকিছু মনেও পড়ে না। তবে দিদার মুখে শুনেছেন তাকে নির্ঘাত মাদকজাতীয় কিছু খাইয়ে বেহুঁশ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর তার অচৈতন্য দেহটি শ্মশানে রেখে আসা হয়েছিল!

দেব অচৈতন্য হয়ে পড়াতে গ্রামবাসীরা ভেবে নিয়েছিলেন তিনি মৃত। তাই তাকে শ্মশানে রেখে আসা হয়েছিল দাহ করার জন্য। এদিকে তার দিদা এবং মামা বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা তাকে খুঁজে না পেয়ে তন্ন তন্ন করে গোটা গ্রাম চষে ফেলেন। তারাই তাকে শ্মশান থেকে উদ্ধার করেন। সারারাত ধরে খোঁজাখুঁজি করার পর দেবকে শ্মশান থেকে জীবিত অবস্থাতেই উদ্ধার করেছিলেন তার দিদা এবং মামারা।

মুম্বাই নিবাসী মেয়ে-জামাইয়ের একমাত্র ছেলে! ছুটি কাটাতে এসে হারিয়ে গেছে গাজনের মেলায়! দেবকে খুঁজে না পেয়ে রীতিমতো হা হুতাশ করতে থাকেন তার দিদা। মেয়ে জামাইকে কি উত্তর দেবেন তিনি? শেষমেষ গাজনের কাছেই মানত করে বসলেন দেবের দিদা। নাতিকে খুঁজে পেলে তাকে দিয়েই গাজনের সন্ন্যাস পালন করার প্রতিজ্ঞা করে বসেন তিনি। সেইমতো দেবকে যখন খুঁজে পাওয়া গেল তখন দিদার মানত পূরণ করতে পুরো একটি সপ্তাহ গাজনের সন্ন্যাসীদের মত রীতিনীতি মেনে চলতে হয়েছিল তাকে।

দিদার মানত পূরণ করার জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর আবারও গ্রামে ফিরে আসেন রাজু (দেবকে তার মামার বাড়িতে এই নামেই ডাকা হয়)। এক সপ্তাহের জন্য তিনি হয়েছিলেন ‘ভক্তা’ বা গাজনের সন্ন্যাসী। সেই সময়কালে মন্দিরে থাকতেন তিনি। আগুনে ঝাঁপ দেওয়া থেকে শুরু করে কাটা ঝাঁপ, সব রীতিনীতিই পালন করেছিলেন দেব। দেবের ছোটবেলার এই ঘটনা শুনে হতবাক হয়ে পড়েন সঞ্চালক শাশ্বত চ্যাটার্জী। দেবের পাশে বসে সব ঘটনা শুনে রুক্মিণীও তখন শিউরে উঠছেন!