করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিতে সার্বিক প্রভাব ফেলেছে। দেশ জুড়ে গত ২৩ সে মার্চ থেকে চলছে লক ডাউন, ফলে অর্থনৈতিক কাঠামো কমজোর হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য, টেস্ট, বীমা, অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী এবং অন্যান্য খাতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যায় হওয়ার ফলে রাষ্ট্রের রাজকোষে টান পড়েছে।
বিশ্ব যেমন বড় অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি দাড়িয়ে তেমনই রাষ্ট্র একটি গুরুতর অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থার মুখে দাড়িয়ে যা সম্ভবত ইতিহাসে সবথেকে বড়। এমন পরিস্থিতিতে এবার কেন্দ্রের সরকারি কর্মীদের বর্ধিত ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স (ডিএ) বা মহার্ঘ ভাতা দেড় বছরের জন্য বন্ধের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। শুধু তাই নয় পেনশনভোগীদের বর্ধিত মহার্ঘ ভাতাও দেড় বছরের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র।
এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়েন দেশের ৪৮ লক্ষ ৩৪ হাজার সরকারি কর্মী এবং প্রায় ৬৫ লক্ষ ২৬ হাজার পেনশনভোগী যারা আগামী দেড় বছর বর্ধিত মহার্ঘ্য ভাতা পাবেন না। আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।
আরও পড়ুন :- এক বছর ধরে কাটা হবে বেতন, বাড়বে না ডিএ, কেন্দ্রের বড় ঘোষণা
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারী এবং পেনশনভোগী দের বর্ধিত মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়া হবেনা। এই বিজ্ঞপ্তিতে ২০২১ সালের জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স ও ডিয়ারনেস রিলিফ আবার বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে কিন্তু সেটা প্রস্পেকটিভ হারে। কোনও বকেয়া দেওয়া হবে না, একথাও বলা হয়েছে।
মহার্ঘ্য ভাতার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই প্রতি রাজ্যে বলবৎ করা হয় এবং সেক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে কেন্দ্র সরকারের ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা বাঁচবে যা বর্তমানে কোরোনা ভাইরাস সংক্রমনের থেকে সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতিতে খরচ করা যাবে।
আরও পড়ুন :- মিসড কল করেই জেনে নিন অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স, রইলো নম্বর
অবস্থা ফেরাতে এর আগেও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজ্যগুলি কেন্দ্রকেই অনুসরণ করে। কেরলের সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে যে সরকারি কর্মচারীদের ১ মাসের বেতন পিছিয়ে দাওয়া হবে এবং পাঁচ কিস্তিতে তা কেটে নাওয়া হবে। রাজ্যের আর্থিক অবস্থা শুধরালে তা ফেরত দাওয়া হবে। অসমের অর্থমন্ত্রীও এই নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করেছেন।
লক ডাউনের ফলে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির রীতিমত ধরাশায়ী অবস্থা কারন সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ অর্থ যা রাজ্য কোষে জমা হয় তার ভিত্তি মদ বিক্রির শুল্ক এবং জমি, বাড়ির কর। এই অবস্থায় দুটি পথই প্রায় বন্ধ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ডিএ কেন্দ্রের সরকারি কর্মচারীদের থেকে অনেক কম।
আরও পড়ুন :- ‘স্নেহের পরশ’ প্রকল্পে মিলবে ১০০০ টাকা, জানুন আবেদন পদ্ধতি
এবার নবান্ন কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই দেখার।ইতিমধ্যেই বুধবার জানানো হয়েছে যে প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদের হার কমিয়ে ৭.১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবার ডিএ এর ক্ষেত্রে নবান্নের সিদ্ধান্ত কি হবে সেই নিয়েই চিন্তায় দিন গুনছেন রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা।