

করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রাথমিক পর্যায়েই লাগু করা হয় লকডাউন। কিন্তু জীবন ও জীবিকার রক্ষার্থে লকডাউন শিথিল করতে শুরু করেন প্রশাসন। তবে পরিকল্পনাহীন পরিকাঠামোয় আনলক পরবর্তীতে যে আক্রান্তের সংখ্যা লাগামহীন হয়ে যাবে তা আগেই বলেছিলেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা। হয়েছেও তাই, গত শুক্রবারই রাজ্য আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে সংক্রমণের ভিত্তিতে সারা দেশে অষ্টম স্থানে উঠে আসে। তবে বাংলায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তার সাথেই স্বস্তি দিচ্ছে একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার সংখ্যা।
স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বুলেটিন অনুযায়ী গত শুক্রবার রাজ্যে একদিনে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪৭৬ জন। ও গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হন ৪৫৪ জন। অর্থাৎ শুধুমাত্র রাজ্যে এখন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৯৮ জন। ও রাজ্যে অ্যাক্টিভ করোনা কেস এই মুহূর্তে ৫ হাজার ৬৯৪ জন। অন্যদিকে এখনও আসেনি কোনো প্রতিষেধক। বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে রয়েছে প্লাজমা প্রতিস্থাপন। অর্থাৎ যারা করোনা জয় করে ফেলছেন তাঁদের শরীরের প্লাজমা নিয়ে গুরতর করোনা রোগীদের দেহে তা প্রতিস্থাপন করে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।
সংক্রমণের হারের বৃদ্ধিতে যেখানে তৈরী হচ্ছে অনিশ্চয়তা সেখানে পশ্চিমবঙ্গে করোনা রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা রাজ্যকে আশার আলো দেখাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা থেকে ৩৩৬ জন সুস্থ হয়ে উঠে রেকর্ড গড়েছেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ৪,৫৪২ জন। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে এখন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৪২.৪৫ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩ জনের। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে করোনা সংক্রমনে লাগাম টানতে কড়া ভাবে চলছে র্যাপিড টেস্ট। গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে ৯ হাজার ৮ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এবং এখনও পর্যন্ত সর্বমোট ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৭০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
দীর্ঘ লকডাউনের পর গত ৮ই জুন থেকে রাজ্যে ১০০ শতাংশ সরকারি ও বেসরকারি অফিস খুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে বন্ধ রয়েছে রেল ও মেট্রো পরিষেবা। বাসগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যত সংখ্যক সিট, তত সংখ্যক যাত্রী। কিন্তু রাস্তায় নামলেই দেখা গেছে বাদুড় ঝোলা হয়ে অফিস যাচ্ছেন কর্মীরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও আগেই জানিয়েছিলেন বাঁচতে হবে করোনা নিয়েই। তাই একদিকে খিদের টান আর অন্যদিকে প্রানের ভয়ে সাধারনে মানুষের কাছে “চাঁচা আপন প্রাণ বাঁচা” ছাড়া যে আর অন্য কোনো পথ নেই তা একেবারেই স্পষ্ট।