রাজ্যে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তবুও পুজোর উন্মাদনায় বিভোর “অসচেতন” জনতা। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ভবনের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট থেকেই আতঙ্কজনক রিপোর্ট পাওয়া গেল। যেখানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে কোভিড পরীক্ষার তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির হারের নিরিখে ১৫ টি জেলা রীতিমত আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জেলাপ্রতি কোরোনা পরিস্থিতির (আক্রান্ত,সুস্থ্যতার বা মৃত্যুর হার বা কোরোনা পরীক্ষার আপডেট) সাপ্তাহিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির নিরিখে রাজ্যের ১৫টি জেলা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আছে যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য ভবনও।
১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময়কে চারটি ভাগে ভাগ করে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ৮ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবরে উত্তর ২৪ পরগনার কোরোনা সংক্রমণের হার ছাপিয়ে গেছে সারা দেশে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা মহারাষ্ট্রের সর্বশেষ পরিসংখ্যানকে।
১১ অক্টোবর পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী আক্রান্তের হার ছিল ১৯.৯৯ শতাংশ। সেখানে এই কিছুদিন উত্তর ২৪ পরগনার কেস পজ়িটিভিটি হার(CPR) ২৪.৪৮ শতাংশ। এই জেলার সরকারি এবং বেসরকারি ল্যাবের পজিটিভ রেট যথাক্রমে ১৬.৯ শতাংশ এবং প্রায় ২৫ শতাংশ।
রাজ্যের জেলাভিত্তিক পজ়িটিভিটি হার (CPR)
১. কলকাতা | ১৮.৭৭ শতাংশ |
২. হাওড়া | ৮.৬৮ শতাংশ |
৩. পশ্চিম মেদিনীপুর | ৮.৭০ শতাংশ |
৪. জলপাইগুড়ি | ৭.৯৯ শতাংশ |
৫. নদিয়া | ৭.৪৬ শতাংশ |
৬. মালদহ | ৬.৯১ শতাংশ |
৭. হুগলি | ৬.৮৫ শতাংশ |
৮. ঝাড়গ্রাম | ১৩.১১ শতাংশ ( অক্টোবরের ৭ তারিখ পর্যন্ত এই জেলার সিপিআর ছিল ৫.৬৯ শতাংশ) |
৯. কালিম্পং | ৫.৯৩ শতাংশ |
১০. বর্ধমান – ৫.৬১ শতাংশ | ১১. দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৫.৫৯ শতাংশ |
১২. পূর্ব বর্ধমান – ৫.২৩ শতাংশ | ১৩. বীরভূম – ৪.৮৩ শতাংশ |
১৪. পুরুলিয়া – ৪.৩৮ শতাংশ | ১৫. দক্ষিণ দিনাজপুর -৩.৫৬ শতাংশ |
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সর্বশেষ প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে মৃত্যুর হার ১.৫৩ শতাংশ এবং নমুনা পরীক্ষার ভিত্তিতে আক্রান্তের হার ৮.২০ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে বাংলার এই পরিসংখ্যান উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
জেলাভিত্তিক করোনায় মৃত্যুর হার
১. হাওড়া | ২.৭৯ শতাংশ |
২. দক্ষিণ ২৪ পরগনা | ২.৩৫ শতাংশ |
৩. পশ্চিম মেদিনীপুর | ২.১৯ শতাংশ |
৪. কলকাতা | ২.১৬ শতাংশ |
৫. পূর্ব মেদিনীপুর | ১.৯৮ শতাংশ |
৬. মুর্শিদাবাদ | ১.৫৩ শতাংশ |
৭. দার্জিলিং | ১.৫১ শতাংশ |
৮. কালিম্পং | ১.২৯ শতাংশ |
৯. মালদহ | ১.২২ শতাংশ |
১০. জলপাইগুড়ি | ১.২০ শতাংশ |
১১. বীরভূম | ১.১৫ শতাংশ |
১২. উত্তর ২৪ পরগনা | ১.৯০ শতাংশ |
তবে রাজ্যে সুস্থতার হার ৮৭ শতাংশ এবং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে সংক্রমন উপসর্গহীন বা উপসর্গ থাকলেও তা অত্যন্ত মৃদু। আইসিইউ, জেনারেল বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে এবং এখনও হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড আছে। এখন প্রয়োজন শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার। উপসর্গ দেখা দিলেই কোভিড পরীক্ষা করে নিজেকে আইসোলেট করতে হবে।