হিন্দুধর্মের সাথে পৃথিবীর অন্য ধর্মের যোগসূত্র

ভারত ধর্মে বিশ্বাসী এক দেশ। এখানে যেমন বহু প্রাচীন কাল থেকেই চলে আসছে বিভিন্ন দেবদেবীর পূজার্চনা, তেমনি লেখা হয়েছে ধর্ম বিষয়ক বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।রামায়ন ,মহাভারত থেকে বিভিন্ন পুরাণ ও বেদে আমরা জানতে পারি বিভিন্ন দেবদেবীর কথা, তাদের পূজার মন্ত্র, পদ্ধতি ,আচার ,আচরণ সবই।মন, শরীর ,আত্মা ও কর্মের মধ্যে যে গূঢ় সম্পর্ক আছে তা গীতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেদে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।হিন্দু ধর্মকেই পৃথিবীর সবচাইতে প্রাচীন ধর্ম হিসেবে ধরা হয়।আর তাই সারা পৃথিবীতে অন্য সকল ধর্মের সঙ্গে এই ধর্মের এক অদ্ভুত যোগসূত্র দেখতে পাওয়া যায়।যদিও অনেকেরই এই সম্পর্কে মতবিরোধ আছে।কিন্তু বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রমান পাওয়া যায় এই যুক্তির সপক্ষে।

আজ আমরা পৃথিবীর সেইসব ধর্মের সঙ্গে হিন্দু ধর্মের   যে বিভিন্ন আশ্চর্যজনক মিল খুঁজে পাওয়া যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো।

Source

হিন্দু দেবতার সঙ্গে মিশরের দেবতার সাদৃশ্যতা

শুধুমাত্র যে ভারতেই হিন্দু ধর্ম ছিল তা কিন্তু মিশরের  “আপিশ বা হাপিশ “দেখলে আমাদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি করে।মিশরে পাওয়া এই মূর্তি  হিন্দুদের পূজিত বৃষ দেবতা অর্থাৎ শিবের বাহন “নন্দী”র সঙ্গে অদ্ভুত সাদৃশ্যতা খুঁজে পাওয়া যায় ।এই প্রতিকৃতি দেখে মনে করা হয় যে প্রাচীন ভারতের মতো মিশরের রাজা বা’ ফারাও’রা ভগবান শিবের বা  ভগবান বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন।

আরো পড়ুন : শিবের সঙ্গে গাঁজা জড়ানো নিছক গাঁজাখুরি

Source

ভগবান বিষ্ণুর মৎস্য অবতার ও  বহির্বিশ্ব

ভাগবত গীতা ও মৎস্য পুরাণ অনুযায়ী রাজা সত্যব্রতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল  সমগ্র পৃথিবী ও তার সকল প্রকার বিভিন্ন প্রাণীকূলকে রক্ষা করার জন্য এক ভয়ঙ্কর বিশ্বব্যাপী বন্যা থেকে।এই একই রকম বাঁচানোর কথা আমরা খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল পড়েও জানতে পারি।সেখানে “নোয়ার” বিরাট নৌকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের রক্ষা করা হয় একইরকম বন্যা থেকে। আবার মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানেও  “সাফিনা নুহ”নামক অংশে একইরকম ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন : যে ১০টি কারণে দ্রৌপদী মহাভারতের আদর্শ নারী এবং সকল নারীর অনুসরণযোগ্য

Source

হিন্দু দেবী “কালীমাতা”র সঙ্গে জিউস পূর্ব ‘কান্নাইট ‘ধর্মের দেবীর সাদৃশ্যতা

আমরা সকলেই দেবী “কালীমাতা”র কথা জানি।তার রুদ্র মূর্তির মাধ্যমে তিনি সংহার করেন দৈত্যদের, সকল অশুভদের।আর এই হিন্দু দেবীর সঙ্গে অদ্ভুত মিল পাওয়া যায় জর্ডন, লেবানন ,গাজা, ইজরায়েলে জিউস ধর্মের পূর্বে পালিত ‘কান্নাইট ‘ধর্মের দেবীর প্রতিকৃতির।এই দেবীর উদ্দেশ্যে প্রাচীনকালে শিশু উৎসর্গ করা হত।যেমন এখনও দেবী কালীমাতার উদ্দেশ্যে অনেক জায়গায় ভারতে ছাগ বলি দেওয়া হয়।পূর্বে নরবলি দেওয়া হত।কালীমাতার মতো তাদের পূজিত দেবীদের মধ্যে চারটি হাত বিদ্যমান।আর সেই হাতে কালীমাতার মতো অস্ত্রও আছে।কালীমাতা যেমন ভগবান শিবের শরীরের ওপর দাড়িয়ে থাকেন উন্মুক্ত জিভে।এক্ষেত্রে এই দেবতার নিচেও একটি মাথা দেখতে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন : কীভাবে শুরু হয়েছিল শিবরাত্রি ব্রত? জেনে নিন পুরো কাহিনী

Source

‘আজটেক’ ধর্মের সাথে হিন্দু ধর্মের সাদৃশ্যতা

‘আজটেক’রা ছিল এক প্রাচীন জনগোষ্ঠী যারা ১৪ শতক থেকে ১৬ শতক পর্যন্ত মধ্য মেক্সিকোয় বসবাস করত।অদ্ভুতভাবে মহাভারতে এইরকম এক সম্প্রদায়ের কথার উল্লেখ আছে যাদের সর্প বলে ডাকা হতো।এছাড়াও পুরাণ অনুযায়ী দৈত রাজা বালি তার সমস্ত রাজ্য বামন অবতারকে দান করার পর এখন যা দক্ষিণ আমেরিকা তার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন।তারপর সেখানে যা উপনিবেশ গড়ে ওঠে তা তালাতলাক বলা হত।যা বর্তমানে  “টলটেক” প্রথা নামে পরিচিত মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকায়।

আরো পড়ুন : শিব পুজো যেসব দিয়ে করলে সকল মনস্কামনা পূর্ন হবে

Source

রাম সেতুর বাস্তবিকতা

হিন্দু  পৌরানিক ধর্মগ্রন্থ রামায়ন অনুযায়ী ভগবান শ্রীরাম সীতাকে লঙ্কা থেকে উদ্ধারের জন্য এবং রাবনকে যুদ্ধে পরাজিত করার জন্য  বানর রাজ সুগ্রীব ও তার বানর সেনার সহায়তায় তৈরি করেছিলেন সমুদ্রের উপর এক পাথরের সেতু নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে এই সেতুর অস্তিত্বের কথা স্বীকার করা হয় আমেরিকার এক বিজ্ঞান ভিত্তিক চ্যানেল থেকে।অর্থাৎ বর্তমানের বিজ্ঞান ভিত্তিক অনুসন্ধানের মধ্য দিয়েও পুরাকালের অনেক বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করা হচ্ছে।

আমরা দেখি অনেক সময় যুক্তি বা বিজ্ঞান হার মানে বিশ্বাসের উপর।এইসব উদাহরণ তারই বলিষ্ঠ প্রমান।

আমাদের প্রতিটি পোস্ট WhatsApp-এ সুনিশ্চিত করতে ⇒ এখানে ক্লিক করুন