ফের বন্ধ হওয়ার মুখে সিনেমা হল, শুটিং! বন্ধ হতে পারে পছন্দের ধারাবাহিকের সম্প্রচার

করোনার (Corona) দ্বিতীয় ঢেউ পেরিয়ে ধীরে ধীরে যখন ছন্দে ফিরছিল বিনোদন জগৎ, তখন ফের ওমিক্রন (Omicron) হানায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেল স্টুডিও পাড়া। দেশজুড়ে ক্রমশ প্রভাব বিস্তার করছে ওমিক্রন। বাংলাতেও তার প্রভাব পড়ছে। দিল্লি (Delhi) ইতিমধ্যেই আংশিক লকডাউনের পথে হেঁটেছে। বাংলার পরিস্থিতি বাড়াবাড়ি হলে বাংলাতেও সেই পথে এগোতে হবে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ইতিমধ্যেই প্রেক্ষাগৃহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাতেও কি এবার বন্ধ হবে সিনেমা হল? আগের মতোই কি বন্ধ হবে ধারাবাহিকের শুটিং (Shooting)? দিল্লির পদক্ষেপে অশনিসংকেত দেখছে টলিউডও। এদিকে বাংলাতে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসেই একগুচ্ছ নতুন ছবি এবং সিরিজের শুটিং শুরু হওয়ার কথা। কি ভাবছেন বাংলার পরিচালক প্রযোজক এবং হল মালিকরা?

আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে পরিচালক সন্দীপ রায় জানিয়েছেন এখনই আগামীদিনের দুশ্চিন্তা করছেন না তিনি। তার ‘ফেলুদা’র শুটিং শুরু হবে মার্চের শেষে। তখনও যদি অতিমারীর পরিস্থিতি থাকে তাহলে তিনি পরিস্থিতি বুঝে প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এসকে মুভিজের কর্ণধার অশোক ধানুকার গলায় শোনা গেল চিন্তার সুর। তার আশঙ্কা, দিল্লির এই পরিস্থিতি কার্যত বিনোদন দুনিয়াকেও অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিয়েছে।

গত দুই বছর ধরে তিনি একই পরিস্থিতি দেখছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিকের মুখে যখনই পৌঁছেছে, করোনার নতুন ঢেউ আছড়ে পড়ছে। এতে পেশা, উপার্জন ক্ষতির মুখে পড়ছে। তবে মানুষের জীবন বাঁচাতে কড়াকড়ির প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই তিনি মনে করেন। তবে লকডাউনের জেরে যে ক্ষতি হয় তা পূরণ করা মুশকিল হয়ে পড়ে। অশোক ধানুকার কথায়, “এক মাস প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ মানে তার ধাক্কা চলে আগামী ছমাস পর্যন্ত। তা হলেই বুঝুন, কতটা ক্ষতিপূরণ সম্ভব!”

এদিকে পরিচালক সপ্তাশ্ব বসুর ‘ডা. বক্সী’র শুটিং শুরু হওয়ার কথা জানুয়ারি মাসে। দিল্লি সরকারের ঘোষণাতে অশনিসংকেত দেখছেন তিনি। পরিচালকের কথায়, ‘‘২০২০-২১ মিলিয়ে এটাই ঘটছে। বারবার প্রেক্ষাগৃহ খুলছে, বন্ধ হচ্ছে। কোভিড-কড়াকড়ির জেরে আটকে যাচ্ছে শ্যুটিং। এতে কাজের স্বাভাবিক গতি বাধা পাচ্ছে।’’ তার একটাই প্রার্থনা জানুয়ারিতে শুটিং যেন কোনওভাবেই বন্ধ না হয়। এতে প্রযোজক-অভিনেতা কলাকুশলী প্রত্যেকেরই ক্ষতি হবে। তাই তিনি যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন।

‘মাস্টারমশাই আপনি কিচ্ছু দেখেননি’র পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকও চিন্তায় পড়েছেন। দিল্লির খবর তাকেও আশঙ্কায় ফেলেছে। তবে কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ছবির শুটিংয়ের কাজ যেরকম চলছিল সেরকমই চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন। আশঙ্কায় আছেন পরিচালক সায়ন্তন ঘোষালও। তার আগামী ছবি মুক্তি পাবে জানুয়ারি মাসে। পাশাপাশি সিরিজের শুটিং শুরু হওয়ারও কথা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এপ্রিল মাসের শুটিং শুরু হবে বলে মনে করছেন তিনি।

জানুয়ারি মাসে মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে রাজ চক্রবর্তীর ধর্মযুদ্ধ। তার দাবি, “এক্ষুণি দুশ্চিন্তায় ভুগতে রাজি নই। ২০১৯ থেকে পিছতে পিছতে ‘ধর্মযুদ্ধ’ মুক্তি পেতে চলেছে ২০২২-এ। দু’বার করে প্রচার করেছি। অতিমারি থামিয়ে দিয়েছে চলার গতি। লোকসান হয়েছে। কিন্তু কিছু করার নেই। সরকারি নির্দেশ মানতেই হবে।” তবে তার আশঙ্কা বিনোদন জগত ফের একবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে।